ফরিদপুর থেকে: বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় রোডমার্চে নেতাকর্মী ও জনসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা গেছে।
রোডমার্চ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড় থেকে শুরু করে রাজবাড়ী সদর থানার বসন্তপুর মাঠ হয়ে ফরিদপুর সদরের রাজবাড়ী মোড় পর্যন্ত তিনটি পথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড়ে সকাল থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন। ফেস্টুন-ব্যানার নিয়ে রোডমার্চে অংশগ্রহণকারীরা সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে স্লোগান দেন।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় রোডমার্চের প্রথম পথসভাটি রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ মোড়ে অনুষ্ঠিত হয়। এই পথসভায় বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
দ্বিতীয় সমাবেশটি করা হয় গোয়ালন্দ মোড় থেকে গাড়িতে মিনিট দশের দূরে রাজবাড়ী সদর থানার বসন্তপুর মাঠে। সেখানে গাড়িতে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে বিএনপির সিনিয়র নেতারা বক্তব্য রাখেন। এ সময় মাঠের চারপাশে রোডমার্চের বহরের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও নেতাদের বক্তব্য শোনেন।
এ সময় বিএনপির নেতারা সাধারণ মানুষের উদ্দেশে বলেন, দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাজেহাল অবস্থা। আপনারা যদি বিএনপির পাশে না থাকেন তাহলে এই সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় হবে না। এই সরকার বিদায় না হলে, জনগণ শান্তিতে থাকতে পারবে না।
এরপর রোডমার্চটি প্রায় পাঁচ কিলো দূরে ফরিদপুর সদরের রাজবাড়ী মোড়ে এসে তৃতীয় পথ সভা করে। এ সময় ফরিদপুর জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা যোগ দেন। সেখানে ফরিদপুর বিএনপির নেতাকর্মীরাসহ বিএনপির জাতীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
ফরিদপুরের রাজবাড়ীর মোড়ের এই পথসভায় বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এ সময় বিপুল জনসমাগম দেখে বিএনপির নেতারা বলেন, সবাই বলে ফরিদপুর নাকি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। কিন্তু এত লোকের উপিস্থিতি প্রমাণ করে যে, ফরিদপুরবাসী আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। বিএনপির নেতারা ফরিদপুরবাসীকে চলমান আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সুষ্ঠু ভোট হলে ফরিদপুর থেকে আওয়ামী লীগ একটি সিটও পাবে না। প্রথমবার যখন সুষ্ঠু ভোট হয়, যখন এই সরকার ক্ষমতায় আসে তখন গোপালগঞ্জ থেকে বিএনপির মনোনীত দুজন প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। যেখানে গোপালগঞ্জকে আওয়ামী লীগের জেলা বলা হয়, সেখানে বিএনপির প্রার্থী জয়ী হন। তার মানে সুষ্ঠু ভোট দিলে এই সরকার একটিও আসন পাবে না।
তিনি বলেন, ফরিদপুরবাসীকে বলব— ভিসানীতি দেশের সবার জন্য। আপনারা খেয়াল রাখবেন, যারা নির্বাচনে কারচুপি করবে তাদের একটা তালিকা বানাবেন। এই তালিকা আমাদের লাগবে। এদের ধরে ধরে আমরা বিচারের আওতায় আনব। আমরা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। এখনো কোনো প্রতিরোধ করি নাই। যদি সরকার আমাদের অধিকার আদায়ের দাবিতে বাধা দেয়, তাহলে সংবিধান আমাদের প্রতিরোধ করার ক্ষমতা দিয়েছে। প্রয়োজনে জীবনের বিনিময়ে হলেও অধিকার আদায়ের বাকি কাজটা আমাদের করতে হবে।
বিএনপির রোডমার্চ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড় থেকে শুরু করে রাজবাড়ী সদর থানার বসন্তপুর মাঠ, ফরিদপুর সদরের রাজবাড়ী মোড়, নগরকান্দা মোড়, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বরইতলা, মাদারীপুরের মোস্তফাপুরে পথ সভা শেষে শরীয়তপুর স্টেডিয়ামে গিয়ে রোডমার্চের সমাপনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বাতিল করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বিদেশে উন্নত চিকিৎসার এক দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে এই রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২৩
ইএসএস/এমজেএফ