ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন শুধু দেশের মধ্যেই প্রশ্নবিদ্ধ নয়, সারা বিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ। দেশের মানুষ যেভাবে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, তেমনি বিশ্বও একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।
সোমবার মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই, যেটা বলেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা বলেছে, নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। এখন মার্কিন এই প্রতিনিধিদল একই বিষয় নিয়ে কাজ করতে এসেছে।
এর আগে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে গুলশানে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সঙ্গে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ড. মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকে আসাদুজ্জামন আসাদ।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) প্রতিনিধি দলে রয়েছেন বনি গ্লিক, জামিল জাফর এবং জো কাও। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) দলে রয়েছেন রিক ইন্ডারফোর্থ, মারিয়া চিন আবদুল্লাহ ও মনপ্রীত সিং আনন্দ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব পরিস্থিতি যাচাই করতে শনিবার ঢাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের ৭ সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) যৌথভাবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রাক-নির্বাচনী সমীক্ষা মিশন পরিচালনা করছে। ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল এবং তাদের সহায়তাকারীরা ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবেন।
আমীর খসরু বলেন, আমরা স্বাভাবিকভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে বলেছি, শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এটার তো কোনো উন্নয়ন হয়নি, বরং আরো অবনতি হয়েছে। গত কয়েকটি নির্বাচনে তারা ভোটাধিকার হরণ করেছে। এখন ভোট চুরির প্রকল্প আরো শক্তিশালী হয়েছে। দমন নিপীড়ন আরো বেড়েছে।
তিনি বলেন, ভোটচুরিকে তারা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খখলা রক্ষা বাহিনী, লুটেরা, ব্যবসায়ী, অলিগার্ক মিলে একটি ভোট চুরির প্রজেক্ট করেছে। আবারও তারা ভোট চুরি প্রকল্পে কাজ করে যাচ্ছে। এগুলো থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় একদফা দাবি। এই দাবি প্রতিষ্ঠা করে দেশের জনগণ তার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে যে দেশের জনগণ ভোট দিতে পারবে না, এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বিশ্ব কি বলছে? এই সরকারের অধীনে আন্তর্জাতিক মানের সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, সে জন্যই তারা এই নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলছে। আমরা বলেছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার অধীনে নির্বাচন, তারা সেভাবে বলবে না। তারা বলছে, সুষ্ঠু নির্বাচন। যেটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারকেই বোঝায়। এ কথা বিদেশিরা বলবে না, এ দাবি উঠছে দেশের জনগণের কাছে থেকে।
তারা কিছু বলছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারাতো এসেছে পর্যবেক্ষণের জন্য। যেমন এসেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা দেশের মানুষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবে পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না।
কোনো মতামত নিয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা এ দেশের জনগণের মতামত নেওয়ার জন্য এসেছে।
মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদল কোনো ব্যাপারে বিশেষভাবে জানতে চেয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, সব কিছুর বিষয়েই জানতে চেয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯,২০২৩
টিএ/এমএম