ঢাকা: সরকার নির্বাচনের আগে এক লাখ বিএনপি নেতাকর্মীকে গায়েবি-মিথ্যা মামলায় সাজা দিতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান।
তিনি বলেন, আমাদের নেতা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, কৃষিবিদ শামীমসহ ১৫ জন নেতাকর্মীকে সম্পূর্ণ গায়েবি মামলায় চার বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী জনতা দল।
সমাবেশে আহমেদ আযম খান বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জীবনমৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তার জীবনের ঝুঁকি সারাক্ষণ। তারপরও সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি উপেক্ষা করে বিভিন্ন টালবাহানা করে তাকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে দিচ্ছে। তাকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। আল্লাহ তায়ালা যেন তার কুদরতি শক্তি দিয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে তোলেন। এ ফ্যাসিবাদী সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা দেবে না।
ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গতকাল দেখলাম, ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমেরিকার মুরব্বিদের সঙ্গে কথা হয়ে গেছে, আর পিটার হাসের কিছু করার নেই। তিনি কিছুদিন আগে বলেছেন, নয়া দিল্লি আমাদের, আমরা নয়াদিল্লির। এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন, ভারতে অনুরোধ করে এসেছি, শেখ হাসিনার সরকারকে যেন ক্ষমতায় রাখে। এ যে নির্লজ্জ বেহায়াপনা, বিদেশি প্রভূদের ওপর নির্ভর করে করে ক্ষমতায় থাকার বাসনা, সে কল্পনা দেশের মানুষ আর হতে দেবে না। দেশের মানুষ ভোটের মধ্য দিয়ে আগামী দিনে যারা শাসন করবে, তাতের নির্বাচন করতে চায়। আর ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে দেবে না দেশের মানুষ।
তিনি আরও বলেন, রক্ত দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ দেশ স্বাধীন করেছি৷ আর আপনারা (সরকারি দলের নেতা) সেই স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার, মানবাধিকারকে তলে তলে বিক্রি করে দিতে চান। আবার সেটি বড়াই করে বলেন। আপনাদের লজ্জা না থাকলেও, দেশের জনগণ হিসেবে আমরা লজ্জিত হই। আপনাদের মতো রাজনৈতিক নেতারা এখনও দেশের শাসন ক্ষমতায় আছে।
সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাষ্ট্রীয় বাহিনী থেকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি কিভাবে রাত ৩টার সময় তিনবারের সাবেক এমপি এ্যানিকে তালা ভেঙে টেনে হিঁচড়ে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। পুলিশ বাহিনীকে বলতে চাই, আপনারা তো আমাদের ভাই, বন্ধু, এ দেশের নাগরিক। আপনারা কেন জনগণের সেবক না হয়ে ফ্যাসিবাদের অনুগত হবেন? আপনারা রাষ্ট্রীয় বাহিনী হোন, ফ্যাসিবাদের বাহিনী হতে যাবেন না। আপনারাও গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে পারেন। আপনারাও গণতন্ত্রের একজন হয়ে যান, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন না।
হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদী দল যেহেতু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে, তাই আমরা বলবো, আপনাদের পূজোয় আমাদের সার্বিক সহযোগিতা থাকবে। কিন্তু আমরা জানি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য এ সরকারের আষ্টেপৃষ্টে বাধা যারা তারা হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের উপাসনালয়ে আক্রমণ করে। এদেশের সংখ্যালঘুরা তাদের অনুষ্ঠান পালন করতে পারে না। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সব ধর্মের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী জনতা দলের সভাপতি মো. রায়হানুল ইসলাম রাজুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম উজ্জ্বলের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান ও জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক টিপু হায়দার খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৩
এসসি/জেএইচ