ঢাকা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ আর এক মাস উল্লেখ করে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেছেন, বিএনপির নেতৃত্বে চলমান নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ যুগপৎ আন্দোলনে আগামী এক মাসের মধ্যে এ সরকারের পতন ঘটবে। গণদাবি মেনে সরকার পদত্যাগ না করলে জনগণই তাদেরকে ক্ষমতা থেকে নামাবে।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়সংলগ্ন আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট আয়েজিত এক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. ফরহাদ।
সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোসহ একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ সমাবেশ হয়।
ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, এ সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা আর এ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। সুতরাং বিএনপির নেতৃত্বে চলমান নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ যুগপৎ আন্দোলনে আগামী এক মাসের মধ্যে এ সরকারের পতন ঘটবে। তখন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন, আলেম-ওলামাসহ সকল রাজবন্দিও মুক্ত হবেন।
তিনি বলেন, ২০১৪, '১৮ আর ২০২৪ এক নয়। দেশবাসীর সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিশ্বও আগামীতে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায়। আর এটি প্রমাণিত যে, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু- নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই যতই ছলচাতুরি, টালবাহানা করা হোক না কেন, শেখ হাসিনার অধীনে এ দেশে আর কোনো প্রহসনের নির্বাচন হবে না।
ড. ফরহাদ বলেন, শেখ হাসিনা জানেন- নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই জয়লাভ করতে পারবে না। সেজন্য নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হলেও তড়িঘড়ি করে বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন করছেন সরকার প্রধান।
তিনি বলেন, এ সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হামলা-মামলা, দমন-পীড়ন করে একদফার চলমান আন্দোলন দমাতে চায়। কিন্তু এসব করে আন্দোলন দমানো যাবে না। ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করলে ৫০ হাজার লোক নতুন করে আন্দোলনে যুক্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, জনগণের অংশগ্রহণে আন্দোলন ক্রমেই বেগবান হবে এবং চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এ সরকারের পতন ঘটবে। তাই সরকারকে বলবো, অবিলম্বে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের এ সমন্বয়ক বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে এ দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না। দেশবাসী আগামীতে আর কোনো প্রহসনের নির্বাচন মেনে নেবে না। নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। প্রয়োজনে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন হতে হবে।
জাগপার সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহাদাত ও এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, এনডিপির চেয়ারম্যান কারী আবু তাহের, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী ও মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বারিক, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি মন্ডল,
বিকল্পধারার মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম, এনপিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নবী চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের (রেজা কিবরিয়া) যুগ্ম সদস্য সচিব মো. তারেক, জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যান তরিকুল ভুইঞা।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৩
টিএ/জেএইচ