ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

সহিংসতা চালাতে থাকলে বিএনপিই নির্মূল হবে, মনে করছে আ.লীগ

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২৩
সহিংসতা চালাতে থাকলে বিএনপিই নির্মূল হবে, মনে করছে আ.লীগ

ঢাকা: প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক—এ দুই দিক থেকেই চাপে ফেলে বিএনপির চলমান আন্দোলন দমনের কৌশল নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে ইতোমধ্যে দলটিকে অনেকটাই কোণঠাসা করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

শুধু তাই নয়, এ অবস্থায় আন্দোলনের নামে বিএনপি অবরোধ এবং জ্বালাও-পোড়াওসহ সহিংস ঘটনা চালাতে থাকলে দলটির রাজনীতিও নির্মূল হয়ে যাবে বলে ক্ষমতাসীন রাজনীতিকরা মনে করছেন।

সরকারের পদত্যাগের ‘এক দফা’ দাবি নিয়ে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করে বিএনপি। ওই সমাবেশ থেকে সহিংসতা শুরু হয় এবং তা এখনো অব্যাহত আছে। মহাসমাবেশের পর হরতাল এবং দুই দফায় অবরোধ দেয় দলটি। এরপর মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিরতি দিয়ে বুধ ও বৃহস্পতিবার (৮ ও ৯ নভেম্বর) তৃতীয় দফায় অবরোধ ঘোষণা করেছে তারা। বিএনপির এই অবরোধ কর্মসূচি আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে শোনা যাচ্ছে। গত ২৮ অক্টোবরের ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০০টির ওপরে মামলা হয়েছে এবং দলের পাঁচ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে বিএনপি থেকেই অভিযোগ করা হয়েছে।

বিএনপির দ্বিতীয় দফার অবরোধের শেষ দিন সোমবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীতে জনজীবন আগের দিনের তুলনায় অনেকটা স্বাভাবিক পর্যায়ে দেখা যায়। এ অবরোধের বিরুদ্ধে অবস্থান অব্যাহত রেখে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো এদিনও রাস্তায় তৎপরতা ছিল এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দলটির বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী মিছিল ও সমাবেশ করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীও কঠোর অবস্থান নিয়ে রয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মাঠের তৎপরতা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে দলটি আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছে।

এদিকে নিজেদের দেওয়া অবরোধের সমর্থনে দুই-একটি বিচ্ছিন্ন মিছিল-সমাবেশ ছাড়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঠের তৎপরতা দেখা যায়নি। অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা দিলেও তার সমর্থনে দলটি মাঠে নামতে পারছে না। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনা ঘটতে থাকায় প্রতিরোধে নেমেছে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দল। এ অবস্থায় অবরোধ থেকে তৈরি অচল অবস্থা কাটতে শুরু করেছে। তবে মানুষের মধ্যে কয়েক দিন ধরে যে আতঙ্ক চলে আসছে তা দূর হয়নি। কারণ বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা সোমবারও ঘটেছে। বুধ ও বৃহস্পতিবারের পর আরও অবরোধ কর্মসূচি আসতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগ ও সরকারের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, বিএনপির অবস্থা যে পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, এরপরও টানা অবরোধ বা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড দিয়ে দেশ অচল করার চেষ্টা করলে বিএনপিই নির্মূল হয়ে যাবে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন।

আওয়ামী লীগের নেতা ও সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, বিএনপি চোরাগোপ্তা হামলার পথ বেছে নিয়েছে। এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে। এজন্য দেশকে খারাপ পরিবেশ থেকে রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২২৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
 
সরকার সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি এ ধরনের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখলে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো আরও কঠোর অবস্থানে যাবে ৷ সে প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ওরা অবরোধ দিয়ে নিজেরাই অবরুদ্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ধীরে ধীরে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এরপরও তারা সহিংসতা করলে এখন মানুষ ওদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। যারা আগুন দেবে মানুষ তাদেরও আগুনে ফেলে দেবে। এভাবে ওরা নিঃশেষ হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপির অবরোধ তো এখন মৌখিক ঘোষণামাত্র, বাস্তবে তার প্রতিফলন নেই। আগুন দেওয়া, চোরাগোপ্তা হামলার মাধ্যমে দেশ ধ্বংস করার টার্গেট নিয়ে তারা এগোতে চাইছে ৷ কিন্তু এটা করে তারা নিজেরাই নির্মূলের পর্যায়ে চলে গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো অনেক শক্তিশালী অবস্থানে আছে। এ অবস্থায় বিএনপি অবরুদ্ধ হয়ে গেছে, তারা এখন নির্মূলের পর্যায়ে আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫২ ঘণ্টা,নভেম্বর ০৭, ২০২৩
এসকে/এমএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।