ঢাকা: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, গণতন্ত্রের নামে দেশে অত্যাচারী স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এ থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে।
তিনি বলেন, স্বৈরাচারদের কথা হচ্ছে এক সরকার দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলে দেশে স্থিতিশীলতা আসে। এক সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে আসলে অস্থিতিশীলতার বীজ বড় হতে থাকে। সরকার বা নেতা পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু তাতে সমাজে ও অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব না পড়ে সেটাই হচ্ছে স্থিতিশীলতা।
শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে কয়েকজন আইনজীবীর জাতীয় পার্টিতে যোগদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জি এম কাদরে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমেরিকা, ভারত ও জাপানসহ অনেক দেশে রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান পরিবর্তন হয়। কিন্তু তার কোনো প্রভাব পড়ে না সমাজ ও অর্থনীতিতে। কিন্তু একজনকে জোর করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রাখলে মানুষের মনে একটি আগুন জ্বলতে শুরু করে, তা এক সময় বিস্ফোরণ হয়। আমাদের দেশে স্বাভাবিকভাবে কোনো পরিবর্তন হলেও দেশ কোথায় যাবে, তা নিয়ে মানুষ চিন্তিত। আমরা চাই সরকার ব্যবস্থা এমন হবে, যাতে সরকার পরিবর্তন হলেও স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে না। স্থিতিশীলতা এলেই বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে আসবে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্র থাকলে, দেশের মানুষ দেশ পরিচালনার জন্য কেয়ারটেকারের মতো প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। তারা জনগণের কথামত দেশ চালাবে এবং জনগণ তাদের সমালোচনা করতে পারবে। সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। জনগণের ইচ্ছের বাইরে চললে নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি পরিবর্তন করার ক্ষমতা থাকতে হবে জনগণের মধ্যে। দেশে নির্বাচনের নামে সিলেকশন চলছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বর্তমান সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধংস করে দিয়েছে। কয়েক দিনের উপনির্বাচনেও এখন সরকারকে সিল মারতে হয়। বর্তমান ব্যবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আনুপাতিক হারে নির্বাচন হলেই দেশে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, জাতীয় পার্টি কাউকে বৈধতা দেয়ার জন্য নির্বাচনে যাবে না। কারো ক্ষমতার সিঁড়ি হতেও নির্বাচনে যাবে না জাতীয় পার্টি। প্রমাণ হয়েছে সরকারি দলের কর্মীরা ১ মিনিটে ৪৫টি ভোট দিতে পারে। তাই বর্তমান ব্যবস্থায় নির্বাচনে যাওয়া হচ্ছে, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সাঁতার কাটা।
জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশনের সভাপতি শেখ মুহাম্মহদ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পরিচালনায় অ্যাডভোকেট সুলতান আহমেদ খান ও শহীদুল ইসলাম মোল্লার নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের হাতে ফুল দিয়ে অর্ধ শতাধিক আইনজীবী জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০২৩
এসএমএকে/এমজেএফ