ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কাগজে কলমে প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টি ২৯৪ আসনে লড়াই করার ঘোষণা দিলেও প্রায় অর্ধশত আসন নিয়ে সংসদে যেতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে দলটি। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের সঙ্গে দর কষাকষি শুরু করেছে জাতীয় পার্টি।
নির্বাচনে আসন চূড়ান্ত করতে বুধবার (০৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি নিশ্চিত হবে বলে জানা গেছে।
জাতীয় পার্টি সূত্র জানিয়েছে, সন্ধ্যায় দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ও পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এই বৈঠকে অংশ নেবেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ একাধিক নেতা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
তবে বৈঠক নিয়ে জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা বলেছে, নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়। আমরা তাদের সঙ্গে সন্ধ্যায় কথা বলব। তবে আসন নিয়ে নয়, নির্বাচনের পরিবেশ নিয়েই আলোচনা হবে। আসন নিয়ে কোনো প্রস্তাব আমরা পাইনি।
তিনি আরও বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের কোনো আলোচনা হয়নি, এটা একটা রিউমার। এখন যেটা চলছে, এটা নির্বাচনের প্রস্তুতি। ১৮ তারিখ প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর আমরা মাঠে গেলে বলা যাবে নির্বাচনের পরিবেশ কী রকম।
জাতীয় পার্টির দপ্তর থেকে জানা গেছে, ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৪ আসনে দলটি প্রার্থী ঘোষণা করলে মনোনয়ন বাছাইয়ে ১২ জন প্রার্থীর ফরম বাতিল হয়। যদিও ৪ থেকে ৫ জন মনোনয়ন ফিরে পেতে ইসিতে আবেদন করেছেন।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি হলেও সাংগঠনিক অবস্থা জানান দিতে সব আসনেই দলটির প্রার্থীরা লড়বেন। মঙ্গলবার একটি অনুষ্ঠানে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি প্রায় ৩০০ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে। তারা যেভাবে নির্বাচনযুদ্ধে নেমেছে, সে জন্য তাদের অভিনন্দন জানাই। জাতীয় পার্টির সঙ্গে ২০০৮ সালে আমরা জোটগতভাবে মহাজোট গঠন করেছিলাম, গতবারও তারা আমাদের সঙ্গে ছিল, এবারও সেটি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ’
অন্যদিকে বিএনপি নির্বাচনে না আসায় ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মধ্যে এবারো জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধীদলের ভূমিকা রাখবে জাতীয় পার্টি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলটি ২২টি আসনে ও ২০১৪ সালে ২৯টি আসনে জয়ী হয়। আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে জাপা অর্ধশত আসনের দাবি করবে বলেও একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
তবে রওশন এরশাদসহ তার অনুসারীরা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় দলটির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে রয়েছে। নির্বাচন ঘিরে দলটি কতটুকু সুবিধা নিতে পারে এটাই এখন দেখার বিষয় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২৩
এসএমএকে/এমজেএফ