ঢাকা: বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার যদি আরেকটি ভুয়া, জাল ও একতরফা ভোট করে, তাহলে এ নির্বাচন তাদের নির্বাসনে পাঠাবে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেন, ওনারা (আ. লীগ) যদি মনে করে এ ভুয়া ভোট করে, জাল ভোট করে ক্ষমতায় থাকবেন, এতদিন (৭ জানুয়ারি) পর্যন্ত যদি যেতে পারেন, তাহলে এ নির্বাচন আপনাদের নির্বাসনে পাঠাবে।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত এক মানববন্ধন ও সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে মাহমুদুর রহমান মান্না আরও বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার স্ট্যাটাস বি ক্যাটাগরির। নেপাল-ভূটানের মতো দেশ এ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। আমরা এতগুলো বছর ধরে বি'তেই আছি, তার বেশি যেতে পারিনি। কারণ, আমাদের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চামচা। এত বড় জালিম-জুলুমের শাসন বাংলাদেশে আর কখনও হয়নি। খালি বলে গণতন্ত্রের কি দরকার, উন্নয়ন তো হয়েছে। আসলে লুটপাটের মহোৎসব চলছে দেশে।
দেশে সমস্ত জিনিসের দাম বেড়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, মানুষের পেটে ক্ষুধার আগুন, খাবার নেই। আর ওরা বলছে উন্নয়ন খাও। এ উন্নয়নের নাম করে ওরা (সরকার) আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে চায়। নৌকা এখন আর ভাসে না। নৌকা আকাশ দিয়ে উড়ে। নৌকার মধ্যে লুটের চাল, লুটের সম্পদ। এ নৌকা আর জনগণের নৌকা নেই।
তিনি বলেন, সরকার বলছে মার্চে দুর্ভিক্ষ হবে, বিএনপি নাকি দুর্ভিক্ষ লাগাবে। এ কারওয়ান বাজারে আলুর দাম কত হবে, পটলের দাম কত হবে, পেঁয়াজের দাম কত হবে- এটা কি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলতে পারবেন? কারওয়ান বাজারসহ যতগুলো বড় বড় বাজার আছে সমস্ত সিন্ডিকেটের মালিক আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগই দুর্ভিক্ষ লাগাবে। এ আওয়ামী লীগ নিঃস্বকে আরও নিঃস্ব করেছে, গরিবকে আরও গরিব করেছে। তাই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি আরও বলেন, অপেক্ষা করেন সুদিন আসবে। সব ঋণ শোধ করতে হবে। যত টাকা লুট করেছেন, পাই পাই করে, গুনে গুনে, হিসাব করে বিচার করবো। এ যে ভাইকে পাননি, অন্য ভাইকে ধরে নিয়ে গেছেন, বাবাকে পাননি, যমজ ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছেন, দুই হাত কাটা তার নামে সন্ত্রাসের মামলা দিয়েছেন, ভালো মানুষের নামে সাজা দিয়েছেন। সবকিছুর বিচার হবে।
সমাবেশে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, বাংলাদেশে কোনো সুশাসন নেই, জবাবদিহিতার শাসন নেই। বিরোধী মতকে দমন করার নামে এ পর্যন্ত এক হাজার মানুষকে গুম করা হয়েছে, এক হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, সীমান্তে বারবার লোককে হত্যা করা হচ্ছে। আজকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন। এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নেই, গণতান্ত্রিক অধিকার নেই।
তিনি আরও বলেন, ২০ বছর ক্ষমতায় থেকেও যার ক্ষমতার মোহ শেষ হয় না, সেই আবার ভোটের অধিকার নিয়ে টানাটানি করছে। আবারও একতরফা প্রহসনের নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে। এভাবে আমরা নির্বাচন হতে দেব না। দেশের জনগণ এ নির্বাচন মানে না, তফসিল মানে না।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বকারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে ও রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩
এসসি/জেএইচ