কুমিল্লা: কুমিল্লায় একাত্তর টেলিভিশনের নিজস্ব প্রতিবেদক ও ক্যামেরাপার্সনের ওপর হামলার ঘটনায় কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের নৌকার প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে শোকজ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এই প্রার্থীকে তিনবার শোকজ করা হলো।
আগামী ২৪ ডিসেম্বর তাকে অথবা তার উপযুক্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি কুমিল্লা-৬ এর অস্থায়ী কার্যালয়ে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) কুমিল্লা-৬ সংসদীয় আসনে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান মো. সিরাজ উদ্দিন ইকবাল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
শোকজের নথিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২০ ডিসেম্বর আপনার (এমপি বাহার) নির্বাচনী প্রচারণাকালে বেলা ১১টার সময় কুমিল্লা নগরীর শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামের ফটকে আপনার নির্দেশে আপনার নেতাকর্মীরা পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে একাত্তর টেলিভিশনের নিজস্ব প্রতিবেদক কাজী এনামুল হক ফারুক ও ক্যামেরাপার্সন সাইদুর রহমান সোহাগের ওপর হামলা করে মোবাইল ও লাইভ ডিভাইস ছিনিয়ে নিয়ে যান। আপনার পিএস ক্যামেরাপার্সন সোহাগকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। আপনি সাংবাদিকদের দেখে 'কোনো টিভির সাংবাদিক আমার কাভারেজে আসবে না' মর্মে তিক্ত মন্তব্য করেন। আপনি একাত্তর টিভির সাংবাদিকদের দেখে তেড়ে আসেন ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। আপনার, আপনার পিএস ও আপনার নেতাকর্মীদের অনুরূপ কার্যকলাপ নির্বাচনী প্রচারকালে উচ্ছৃঙ্খল আচরণের শামিল, যা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশের পরিপন্থী। এতে আপনি, আপনার পিএস ও আপনার নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর ১১(ক) বিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়। এমতাবস্থায় আপনিসহ আপনার পিএস ও বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন নির্বাচন কমিশনে সুপারিশসহ প্রতিবেদন পাঠানো হবে না মর্মে আগামী ২৪ ডিসেম্বর বেলা ১২টায় নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি, কুমিল্লা-৬ এর অস্থায়ী কার্যালয় কুমিল্লা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল স্বয়ং অথবা উপযুক্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর জন্য আপনাকে নির্দেশ দেওয়া গেল।
উল্লেখ, গত ২০ ডিসেম্বর কুমিল্লায় লাইভ প্রস্তুতির সময় একাত্তর টিভির সাংবাদিক ও ক্যামেরাপার্সনের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। বুধবার বেলা ১১টায় নগরীর শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামের ফটকে এ ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কুমিল্লা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের নিজস্ব প্রতিবেদক কাজী এনামুল হক ফারুক ও ক্যামেরাপার্সন সাইদুর রহমান সোহাগ। লাইভ ডিভাইস ও মোবাইল ক্যামেরা এখনো ফেরত পাওয়া যায়নি।
এর আগেও, কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের এই সংসদ সদস্যকে একদিনে দুইবার শোকজ করা হয়েছে। ১৮ ডিসেম্বর বিএনপি-জামায়াতের কোনো কর্মীকে নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া গেলে তাদের হাত-ঠ্যাং (পা) ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে একবার ও নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালিয়াজুরি পিটিআই স্কুল মাঠে উঠান বৈঠক করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় একই দিনে দ্বিতীয়বার শোকজ করে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি। এই নিয়ে হ্যাটট্রিক শোকজ খেলেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩
আরএ