ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

ভারতের পানি আগ্রাসনের এই ভয়াবহতা হাসিনার নতজানু নীতির ফসল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২৪
ভারতের পানি আগ্রাসনের এই ভয়াবহতা হাসিনার নতজানু নীতির ফসল

বরিশাল: ভারত থেকে ছুটে আসা ঢলের পানিতে দেশের বিশাল এলাকা প্লাবিত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ভারতের পানি আগ্রাসনের এই ভয়াবহতা শেখ হাসিনার নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ফসল। তিনি ক্ষমতায় থাকার জন্য দিল্লির গোলামি করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ব‌রিশাল নগরের অশ্বিনী কুমার হলে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের বরিশাল মহানগর শাখা আয়োজিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, বাংলাদেশ আজ মহাবিপর্যয়ের সম্মুখীন। ফেনী, নোয়াখালীসহ দেশের বিশাল একটি জনপদ আজ ভারতের পানি আগ্রাসনের শিকার। বন্যার্ত এলাকার যে ভয়াবহ রূপ আমি নিজ চোখে দেখে এসেছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা মতো নয়। ভারতের পানি আগ্রাসনে সৃষ্ট বন্যায় বিপর্যস্ত এলাকায় মানুষ মারা গেলে কলাগাছের ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়ার মতো নির্মম ইতিহাস বাংলাদেশে রচিত হয়েছে।  

শায়েখে চরমোনাই আরও বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, ভারতের পানি আগ্রাসনের এই ভয়াবহতা শেখ হাসিনার নতজানু পররাষ্ট্র নীতির ফসল। তিনি ক্ষমতায় থাকার জন্য দিল্লির গোলামি করেছেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বার্তা পৌঁছাতে চাই, ভারতের পানি আগ্রাসনের স্থায়ী সমাধানের জন্য দরকার বোধে বাংলাদেশের সীমান্তে পাল্টা বাঁধ নির্মাণ করুন।

তিনি বলেন, দেশের সচেতন শিক্ষার্থী সমাজের মহান আত্মত্যাগের ফলে আমরা এক নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চাই। আমরা এমন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি যেখানে থাকবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার। যে বাংলাদেশে আর কোনো লুটেরা, ভোট ডাকাত ও দুর্নীতিবাজের আবির্ভাব হবে না।

সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, গত ১৬ বছরের আওয়ামী দুঃশাসনের সব দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, হত্যাকারীকে অতি দ্রুত বিচারের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

বক্তব্যের শেষে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের রুহের মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করেন এবং সবাইকে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

সমাবেশের প্রধান বক্তা ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর বলেন, বাংলাদেশে বারংবার শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা সিলেবাস আমদানি করে মেধাবিবর্জিত জাতি গঠনের অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। আমরা আর এগুলো চাই না। আমরা চাই বাংলাদেশে এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠুক যার মাধ্যমে আমরা বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবো। এমন শিক্ষা ব্যবস্থা চাই যা শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমিক, আদর্শিক ও নৈতিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল মহানগর সভাপতি তানভীর আহমেদ শোভনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ বরিশাল মহানগর সভাপতি ও জামি’আ মাহমুদিয়া মাদরাসার মুহতাতিম আল্লামা ওবায়দুর রহমান মাহবুব, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগর সভাপতি প্রফেসর মুহাম্মাদ লোকমান হাকীম, সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মাদ আবুল খায়ের আশ্রাফী, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ আরিফুর রহমান, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ বরিশাল মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ছালাম গোমস্তা, ৬নং জাগুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফতী হেদায়াতুল্লাহ খান আজাদী, ইসলামী আইনজীবী পরিষদ বরিশাল মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল্লাহ নাসির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল জেলার ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক গাজী মুহাম্মাদ ওসমান গনী, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগর সভাপতি মুহিববুল্লাহ কাজেমী, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম বরিশাল মহানগর সভাপতি প্রিন্সিপাল ওমর ফারুক, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগর সভাপতি মুহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের বরিশাল জেলা সভাপতি মুহাম্মাদ সালাউদ্দিন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মুহাম্মাদ হাসান মাহমুদ, বি এম কলেজ সভাপতি এস এম হাসান রাজু, চরমোনাই কওমিয়া সভাপতি ফয়জুল্লাহ বিন সিদ্দিকী, চরমোনাই আলিয়া সভাপতি মুহাম্মাদ কাওসার মাহমুদ ও বরিশাল মহানগর সহ-সভাপতি গাজী মুহাম্মাদ রেদোয়ান।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২৪
এমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।