সিলেট: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, গণঐক্যে ফাটল ধরলে এই ফাটল দিয়ে স্বৈরাচার প্রবেশ করার সুযোগ পাবে। কোনোভাবেই গণঐক্যে ফাটল ধরানো যাবে না।
তিনি বলেন, গণহত্যাকারীদের আগে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে, তারপর জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে তারা রাজনীতি করতে পারবে কি না। বিএনপি যে ৩১ দফা সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছে সেটি জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট নগরের বারুতখানায় ফুড প্যারাডাইস রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড পার্টি সেন্টারের হল রুমে সিলেট মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. জাহিদ এসব কথা বলেন।
জনগণের মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে চান জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে বিএনপির ৫০০ নেতা-কর্মী শহীদ হয়েছেন। ফ্যাসিস্ট সরকার সর্বক্ষেত্রে সীমাহীন লুটপাটের মাধ্যমে অর্থবিত্তের মালিক হলেও লজ্জায় পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। নিজের ও দলের কৃতকর্মের কারণে লক্ষ্মণ সেনের মতো হাসিনাকে দলবলসহ পালিয়ে যেতে হয়েছে। পতিত স্বৈরাচারের পূর্বপুরুষেরাও ফ্যাসিবাদী রূপ ধারণ করেছিল। তারা সবসময় মানুষের অধিকার হরণ করেছে।
গত ১৭ বছর জনগণ ভোটাধিকার হারা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের ভোটাধিকার ফেরত দিয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠন করতে হবে। বিগত ১৭ বছর আন্দোলনের ফলে গত ৫ আগস্ট জনগণের বিজয় অর্জিত হয়েছে। জনগণের বিজয়ের মাধ্যমে শিশু ও গণহত্যাকারীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। দেশ থেকে স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে। এখন আমাদের দেশকে গড়তে হবে।
ডা. জাহিদ বলেন, জনস্রোতে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভেসে গেছে। এক্ষেত্রে তারেক রহমানের সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনতা যে ইতিহাস তৈরি করেছে, তা পুরো পৃথিবীর ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
আওয়ামী লীগ দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোকে ধ্বংস করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশকে লুটপাট ও মাফিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার কিছু দোসর এখনো দেশে রয়ে গেছে, যারা আবারও দেশকে আক্রমণ করতে পারে। বিএনপি দেশ ও দেশের মানুষের সামনে রাজনীতির কিছু মৌলিক বিষয় পরিবর্তনের ৩১ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি মরহুম মাহবুব আলী খান, খন্দকার আব্দুল মালেক ও এম সাইফুর রহমানকে স্মরণ করে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং গুমের শিকার সিলেটের নেতা এম ইলিয়াস আলী, ইফতেখার আহমদ দিনার, জুনেদ আহমদ ও আনসার আলীকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পাওয়ার জোর দাবি জানান।
সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী ও আরিফুল হক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন ও মিফতাহ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী ও হাদীয় চৌধুরী মুন্নী, মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম।
মতবিনিময় সভায় সিলেট মহানগর বিএনপির নেতারা, ৪২টি ওয়ার্ডের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪
এনইউ/এইচএ/