নাটোর: বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্র-জনতাসহ সারাদেশের সংঘটিত আগে পরের সব হত্যা ও অন্যায়ের বিচার করা হবে। শেখ হাসিনাসহ খুনের দায়ে অভিযুক্ত কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না।
সোমবার (০৬ জানুয়ারি) বিকেলে নাটোর শহরতলীর তেবাড়িয়াহাটে ছাত্রদল নেতা রাকিব ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রায়হানের দশম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
নাটোর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুলু আরও বলেন, দেশের আওয়ামী বিরোধী সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বাড়াবাড়ি হানাহানি করে কিছু পাওয়া যাবে না। সবাই মিলেমিশে থেকে দেশ গঠন করতে হবে। আগামী দিনে সবাই মিলেই সুন্দর একটি নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার আসবে। সেই সরকারের অধীনে বাংলাদেশ সুন্দরভাবে এগিয়ে যাবে। সেই সরকার এদেশের সব হত্যা ও অন্যায়ের বিচার করবে।
তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীল নাগরিকের ভূমিকা রাখতে হবে। আমাদের সাময়িক কোনো লোভ লালসা বা হিংসা বিদ্বেষে যেন পতিত স্বৈরাচার সুযোগ না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের পাশের দেশে বসে পতিত স্বৈরাচার হাসিনা ও তার সব অপকর্মের সহযোগীরা বাংলাদেশকে অকার্যকর করতে নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।
তাই আমাদের সবাইকে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের জন্য দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। শক্ত হাতে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আমাদের সব সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নইলে পাশের দেশের সহযোগিতায় সেখানে বসে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত স্বৈরাচারী হাসিনা নানা অপচেষ্টা চালাবে। দেশকে তারা পদে পদে অশান্ত করার অপচেষ্টা করবে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, শেখ মুজিব ১৯৭১ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত দেশে যে অন্যায় অত্যাচার চালিয়েছে তার কারণে ২২ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল। তার মেয়ে শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে গুম, খুন, হত্যা, জুলুম, নির্যাতন চালিয়েছে তার জন্য ৪২ বছরেও তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, দেশে যে পরিমাণে ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি বেড়েছে। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে দাবি দ্রুত নির্বাচন দিন। আগামী জুন মাসে জাতীয় নির্বাচন দিয়ে দেশের মানুষকে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিন এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। নির্বাচিত সরকার তাদের শাসনের মাধ্যমে দেশের আইন-শৃঙ্খলা আবারো স্বাভাবিক হবে।
দুলু বলেন, আমার দলের নেতাকর্মীকে হত্যা করে আমাদেরকেই আসামি করা হয়। ১০ বছর রাকিব ও রায়হানের বিচার তার পরিবার পায়নি। আইনের মাধ্যমে এ নাটোরের মাটিতে তাদের হত্যার বিচার করা হবে। যত হত্যাকাণ্ড নাটোরে হয়েছে, তাদের সব বিচার আমরা করবো। নিহতদের পরিবার দীর্ঘ বছর ধরে নির্যাতিত ছিল। তাদের পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
আরও বক্তব্য দেন- নাটোর জেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু, সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ, যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী শাহ আলম, ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন, নাটোর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক এমদাদুল হক আল মামুন, জেলা যুবদল সভাপতি এ হাই তালুকদার ডালিম, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ, সদর থানা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আলম আবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মারুফ ইসলাম সৃজন প্রমুখ। পরে ১ হাজার শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২৫
আরএ