ঢাকা: পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য কেন আওয়ামী লীগ সরকারকে ধন্যবাদ দেওয়া যায় না, তার ব্যাখ্যা দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ধন্যবাদ জানালে আমরা ছোট হতাম না, ধন্যবাদ জানাতে পারতাম যদি এই সেতু নির্মাণের সঙ্গে ওদের (আওয়ামী লীগ সরকার) দুর্নীতি নামক শব্দটা সম্পৃক্ত না থাকতো।
শুক্রবার (১জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আবদুস সালাম হলে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই ব্যাখ্যা দেন।
তিনি বলেন, যদি দুর্নীতিবিহীন স্বচ্ছতার সঙ্গে সেতুটা নির্মাণ হতো অবশ্যই আমরা ধন্যবাদ জানাতে পারতাম। কিন্তু এখন সেতুর জন্য ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে আমরা তো তারে এখান থেকে গচ্ছিত টাকাটাকে হালাল করতে দিতে পারি না। সেই কারণে দূঃখিত, যে প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে সেই প্রকল্পের জন্য ধন্যবাদ দিতে পারি না।
গয়েশ্বর বলেন, জনগণের পক্ষ থেকে ডাইরেক্ট অনুরোধ আপনারা শ্বেতপত্র প্রকাশ করেন। কত টাকা ব্যয় হলো, কেনো হলো- এখানে যে টাকা আত্মসাৎ বা লুটপাট হয় নাই- তা আপনারা প্রমাণ করেন। যেদিন প্রমাণ করতে পারবেন, সেদিন ধন্যবাদ জানাবো।
তিনি বলেন, কেউ কেউ বলেন যে, খালেদা জিয়া তারে (শেখ হাসিনা) ধন্যবাদ দিতে পারতেন। খালেদা জিয়া বন্দী। আইনমন্ত্রী বললেন, যেতে বাঁধা নেই। যেতে যদি বাঁধা না থাকে, দাওয়াত দিতে বাঁধা থাকলো কেন? তিনি আমাদেরকে ঠিকই দাওয়াত দিলেন আর দাওয়াত দিলেন না আমাদের নেত্রীকে। খেয়াল কইরেন। আমরা যদি ওনার দাওয়াত কবুল করতাম তাহলে আমরা কী রাস্তায় দাঁড়াতে পারতাম সুতরাং নেত্রীকেও দাওয়াত দেয় নাই মানে কাউকে দাওয়াত দেন নাই।
গয়েশ্বর বলেন, খালেদা জিয়া কি কোনো দিন বলেছেন যে, পদ্মা সেতু লাগবে না? খালেদা জিয়ার সরকারের সময় ২০০৫ সালে এই সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সমীক্ষা হয়েছিল, মাটি পরীক্ষা হয়েছিল, সাইট সিলেকশন হয়েছিল, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছিল। সেতু নির্মাণ করে যেতে পারেননি, আরেকজন করবেন-এটাই তো নিয়ম। সরকার তো অস্থায়ী কিন্তু কর্মগুলো তো চলমান। সেই কর্মগুলো শেষ করতে হবে।
বন্যার্ত মানুষের জন্য সরকারের ‘অপ্রতুল ত্রাণ’, মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে অর্থ পাচার নিয়ে মামলা এবং বিদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে বাজেটে বিশেষ সুবিধার কঠোর সমালোচনা করেন গয়েশ্বর।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিলকিছ ইসলাম, কাজী মনিরুজ্জামান, জাহাঙ্গীর আলম, কাদের সিদ্দিকী, আবদুল্লাহ আল নাঈম, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন মনি, দেশপ্রেমিক নাগরিক পার্টির আহসান উল্লাহ শামীম, জাতীয় গণতান্ত্রিক মঞ্চের ইসমাইল হোসেন তালুকদার খোকন বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ০১ জুলাই, ২০২২
এমএইচ/এসআইএস