খুলনা: সারাদেশে সীমাহীন লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে দুর্নীতি অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে খুলনায় বিএনপির প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নগরের কে ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে কেন্দ্র ঘোষিত এ কর্মসূচি পালিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারওয়ার বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের জন্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন। দেশে যে সরকার রয়েছে, তারা নির্বাচিত নয়।
২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রহসনের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী সরকার দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলেছে দাবি করে তিনি বলেন, বুকের রক্ত দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের প্রস্তত থাকতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনের ডাক আসা মাত্র আমাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
মজিবুর রহমান বলেন, প্রখ্যাত অর্থনীতিবীদ নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেন বলেছিলেন, ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তা খাদ্যের অভাবে হয়নি। বরং পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে ও অব্যবস্থাপনার কারণে হয়েছিল। সে সময়ের সরকার সত্য প্রকাশকে ভয় পেত। তারা চারটি সংবাদপত্র রেখে বাকি সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। দেশ আবারও সেই সংকটে পতিত হয়েছে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, শ্রীলঙ্কার রাজাপাকসে সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। কিছুদিন আগে কাবুল বিমানবন্দর দিয়ে আফগান সরকার পালিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে জিয়ার সৈনিকরা হাতে হাত রেখে ব্যারিকেড গড়ে তুললে শেখ হাসিনার সরকার পালাবার পথ পাবে না। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিদ্যুতের দাবিতে বিএনপির আন্দোলন নাকি কৌতুক! গত ১০ বছর বিদ্যুৎ খাত থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে পেঙ্গুইন কোট পরা দলের নেতারা। উন্নয়নের নামে দেশবাসীর হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে। ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের দাবি করলেও আজ দেখা যাচ্ছে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না। ১৮ কোটি মানুষের দেশে তথাকথিত জনশুমারি চালিয়ে সরকার বলছে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি। সরকারের এ দাবিকে বিএনপি প্রত্যাখ্যান করছে। বিদ্যুৎ নিয়ে, জনশুমারি নিয়ে সরকার জনগণের সঙ্গে জালিয়াতি করেছে।
সিইসির সঙ্গে সংলাপের আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে হেলাল বলেন, কার সঙ্গে সংলাপ, কীসের সংলাপ। সংলাপ হবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে।
সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা ও মহানগর বিএনপির সম্মানিত সদস্য রকিবুল ইসলাম বকুল। বিশেষ বক্তা ছিলেন বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি শেখ মুজিবুর রহমান।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমির এজাজ খান, সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, মহানগর সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম জহির, জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হোসেন বাবু, সৈয়দা রেহানা ঈসা, কাজী মাহমুদ আলী, আজিজুল হাসান দুলু, শের আলম সান্টু, আবুল কালাম জিয়া, মোল্লা মোশারফ হোসেন মফিজ, খায়রুল ইসলাম খান জনি, মাহবুব হাসান পিয়ারু, তৈয়েবুর রহমান, একরামুল হক হেলাল, শামীম কবির, নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর, ইবাদুল হক রুবায়েদ, ইঞ্জিনিয়ার নুর ইসলাম বাচ্চু, শহিদুল ইসলাম, মুজিবর রহমান, উজ্জ্বল কুমার সাহা, আজিজা খানম এলিজা, অ্যাডভোকেট তছলিমা খাতুন ছন্দা, আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, ইসতিয়াক আহমেদ ইস্তি, সজীব তালুকদার, মোল্লা কবির হোসেন, আবু সাঈদ প্রমুখ।
সমাবেশ পরিচালনা করেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন ও শেখ সাদী।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২২
এমআরএম/আরবি