ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

দেশের মানুষ কষ্টে আছে: নজরুল ইসলাম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২২
দেশের মানুষ কষ্টে আছে: নজরুল ইসলাম কথা বলছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: দেশের মানুষ বিপদাপন্ন, তারা কষ্টে আছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

রোববার (৩১ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিদ্যুতের লোডশেডিং ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ঢাকা জেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।



নজরুল ইসলাম বলেন, এই প্রতিবাদ শুধু বিএনপির না, এই প্রতিবাদ এদেশের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের। কারণ এদেশের মানুষ আজ বিপদাপন্ন, বড়ই কষ্টে আছে। আজকে যেভাবে দেশ চলছে তাতে তারা অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। আমাদের দেশে এখন যারা সরকারে আছেন আমরা জানি তারা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হননি। রাতের বেলা ভোট করে তারা ক্ষমতা দখল করে আছেন। যেহেতু তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, সেকারণে জনগণের কাছে তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। কোনো জবাবদিহিতা নেই। যদি থাকতো তাহলে জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্যে তারা কাজ করতেন। তারা নিজেদের আপন লোকদের স্বার্থে কাজ করছেন বলে দেশের মানুষ অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্যে পড়েছে এবং আরও বেশি দুর্দশার আশঙ্কা করছে।

তিনি বলেন, রেকর্ড বলছে বাংলাদেশের এক বছরের যতো বাজেট তার চেয়েও বেশি ব্যয় করা হয়েছে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের জন্য। বলা হয়েছিল আমাদের যতটা প্রয়োজন তার চেয়ে দ্বিগুণ উৎপাদন ক্ষমতা হয়ে গেছে। আমরা বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে পারবো। অথচ আমরা দেখলাম রপ্তানি নয়, আরও আমদানির জন্য অনেক বেশি টাকায় আদানী গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। বিদ্যুতের লাইন এখনও বসেনি অথচ কোটি কোটি টাকা তাদেরকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির ওই নেতা বলেন, আমাদের দেশে কুইক রেন্টাল নামক একটা আজব বিষয় আছে। সেই কুইক রেন্টালের নামে জনগণের পকেট কেটে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা কিছু ব্যক্তিকে দেওয়া হচ্ছে। সেটা কী শুধু শুধু দেওয়া হচ্ছে নাকি সেই টাকার ভাগ বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে। না গেলে অপ্রয়োজনীয় এই খাতে কেন টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা যদি বেশি হয় তাহলে এত বেশি টাকা দিয়ে কুইক রেন্টালের সঙ্গে কেন বার বার চুক্তি বাড়াচ্ছি। এমনকি সংসদে আইন করা হয়েছে যে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো আদালতে আপনি মামলা করতে পারবেন না। জনগণের টাকা লুট করা হবে, আর জনগণ তার বিরুদ্ধে কোনো আদালতে যেতে পারবে না, এরকম অনাচার কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি বলেন, আমরা সুইস ব্যাংকের কথা, সেকেন্ড হোমের কথা, বেগম পাড়ার কথা আগে কখনো শুনিনি। গত কয়েকবছর ধরে শুনছি, বেগম পাড়ায় বাড়ি হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন রাজনীতিবিদদের চেয়ে আমলা, ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বেশি। কারা সেই আমলা, ব্যবসায়ী আর কারাই বা রাজনীতিবিদ সেটা জানার অধিকার বাংলাদেশের মানুষের আছে। কিন্তু আমরা জানি সেটা আপনারা বলবেন না, কারণ এরা সব আপনাদের লোক। তাদের কাছ থেকে আপনারা বেনিফিট নেন বলেই তাদের কথা প্রকাশ করতে চান না। যারা অন্যায়ভাবে অর্থপাচার করে দেশটাকে পঙ্গু করে দিচ্ছে এটা তাদের পক্ষের সরকার।

ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাকের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা জেলা বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিন মাস্টার, কফিল উদ্দিন, দেওয়ান নাজিমুদ্দিন, নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ।

এর আগে, সকাল ১০টা থেকে ঢাকা জেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনের সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।

একই দাবিতে শুক্রবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি ও শনিবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। রোববার জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে বিএনপি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২২
এমএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।