ঢাকা: ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সজাগ থাকার কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবার আমরা খুব সজাগ, কে কোথায় কী করছে আমরা জানি।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সচিবালয়ে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২১ আগস্ট ব্যর্থ হয়েছে। এখনো ষড়যন্ত্র আছে, আমরা জানি। নির্বাচন হলে শেখ হাসিনাকে পরাজিত করা সম্ভব নয়। সে কারণেই তাকে হত্যাচেষ্টা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় প্রধান টার্গেট ছিলেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এত প্রিয় এখন বঙ্গবন্ধুর কন্যা, সারা বাংলায় ভোট হলে বিপুল ভোটে আবারও জয়ী হবেন। কাজেই তাকে সরাতে হলে হত্যার বিকল্প নেই। সেই জন্য আজকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সজাগ থাকার কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কে কী করেন, কোথায় কী হচ্ছে— এবার কিন্তু আমরা খুব সজাগ। এবার কিন্তু আমরা খুব সর্তক। আমরাও জানি কোথায় কে কী করছেন; বিদেশিদের দরবারে, কোথায় কোথায় বৈঠক হচ্ছে।
তিনি বলেন, এসব চক্রান্তে চোখ কান আমাদের খোলা রাখতে হবে। এবার আমরা চোখ কান খোলা রেখেছি। পার পাবেন না, শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেব বলেন— নির্বাচন দরকার নেই, দরকার সরকারের পতন। সেজন্য এখন ষড়যন্ত্র করছে। শেখ হাসিনাকে কেমন করে নামাবে, এটা হলো তাদের লক্ষ্য। আমরা আছি কিন্তু, এসেছি রাজপথ থেকে প্রয়োজনে আবারও যাবো। রাজপথে অশুভ শক্তিকে মোকাবিলা করা হবে। রাজপথ কাউকে লিজ দেইনি, রাজপথ জনগণের। রাজপথ কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয়।
জনপ্রিয়তার কারণে বঙ্গবন্ধু ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলেন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু এত জনপ্রিয় ছিলেন, নির্বাচনে তাকে হারানো কোনো অবস্থাতেই সম্ভব ছিল না। সেই জন্যই হত্যা করা হয়।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ’৭৫-এ আপনারা ছিলেন এই হত্যাকাণ্ডের দোসর, পৃষ্ঠপোষক। ২১ আগস্ট আপনারা ছিলেন হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখন স্বপ্ন দেখছে। আগস্ট এলে এত ভয় পান কেন? আগস্ট হলো আপনাদের চক্রান্তের মাস। বিদেশিদের দরবারে গিয়ে নালিশ করছেন। নালিশের রাজনীতি করছেন।
দেশের মানুষের কষ্ট লাঘবে প্রধানমন্ত্রী দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, সারা দুনিয়ায় আজ এক অস্থিরতা, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে। এই ছবি বাস্তবতা, এই বাস্তবতার প্রভাব আমরা অস্বীকার করি না। আমাদের নেত্রী বলেন, মানুষের কষ্ট হচ্ছে। একবারও কি ফখরুল মানুষের কথা বলেছেন? মানুষের কষ্টের সারথি আজ আওয়ামী লীগ।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা মানুষের কথা বলছি। দিবা-রাত্র তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কাজ করে যাচ্ছেন, পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আমরা রাজনীতি করি এদেশে মানুষের জন্য, ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে বিএনপি। আমরা রাজনীতি করি এ দেশের সাধারণ মানুষের জন্য। এখানে কোন কৃত্রিমতা নেই, তাই আজকে সত্যকে সত্য বলব।
দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা সর্বনাশ ডেকে আনে মন্তব্য করে সবাইকে কথা বলায় দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা যারা এদেশে রাজনীতি করি, রাজনীতিকরা দায়িত্বশীল হবো। কথা কৃর্তত্ব করে, কথা নেতৃত্ব দেয়, আবার কথাই সর্বনাশ ডেকে আনে। দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা সর্বনাশ ডেকে আনে।
তিনি বলেন, সবাইকে বলব কথাবার্তা বলতে হবে দায়িত্বশীলভাবে। দায়িত্বজ্ঞানহীন কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য দেবেন না। দায়িত্বহীন একটা কথায় দেশের অনেক ক্ষতি হতে পারে, বন্ধুত্ব নষ্ট হতে পারে। এ ব্যাপারে আমরা সবাই সতর্ক থাকব।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, পানিসম্পদ বিষয়ক উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
এমইউএম/এমজেএফ