সম্প্রতি ছাত্রীদের পা টেনে ছিঁড়ে ফেলার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে যোগ না দেওয়ায় তিনি ছাত্রীদের নিজ কক্ষে ডেকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে ওই হুমকি দেন।
এ বিষয়ে একটি অডিও ফাঁস হলে তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
এমন অবস্থায় ‘অসংযত ভাষার প্রয়োগ অপরাধ হয়েছে’ বলে স্বীকার করে তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ক্ষমা চান।
গত ২০ আগস্ট নিজের ফেসবুকে তিনি লেখেন, “ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মির সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক। এরা আমার পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য কিছু নয়। একান্ত ব্যক্তিগত পরিবেশে হলেও দায়িত্বশীল যায়গা থেকে অসংযত ভাষার প্রয়োগ আমার অপরাধ হয়েছে বলে আমি স্বীকার করছি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আমাকে এমন শিক্ষা দেয় না তাই সংগঠনের প্রতি আমি ক্ষমাপ্রার্থী। ”
কিন্তু ক্ষমা চাওয়ার তিন দিনের মাথায় আবারও তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগে উঠেছে। দুই ছাত্রীকে ৭ ঘণ্টা আটকে রেখে তিনি নির্যাতন করেছেন এবং নগ্ন করে ভিডিও ধারণ করে ভাইরাল করার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজিয়া হলের ২০২ নম্বর কক্ষ থেকে বঙ্গমাতা হলের ১১০৭ নম্বর রুমে নিয়ে যান দুই ছাত্রীকে। বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সেখানে দুজনকে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য ও রাজিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ নারগিস রুমা গিয়ে দুজনকে উদ্ধার করে হল অফিসে নিয়ে আসেন। মঙ্গলবার রাত ১১টার সময়ও ওই দুই ছাত্রী হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষে অবস্থান করছিলেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সেই অডিও কে রেকর্ড করল আর ফাঁস করল- তা জানতে তাদের সকাল ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত রিভার কক্ষে আটকে রাখা হয়।
দুই ছাত্রীকে রিভার কক্ষে আটকে রাখার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাজিয়া বেগম হলের প্রাধ্যক্ষ নার্গিস রুমা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা এসেছি। ঘটনার তদন্ত করব। ’
কিন্তু এসব অভিযোগকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা। তার মতে, বিএনপি-জামায়াত চক্র ছাত্রী সংগঠন দিয়ে এসব করাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। কলেজের দখল নিতে আমার ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নাটক তৈরি করছে।
রিভা বলেন, ২৫ আগস্ট ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের উদ্যোগে শোক দিবসের আলোচনা সভা ছিল। খুব ব্যস্ত ছিলাম। যারা অডিও ফাঁস করেছে তাদের সঙ্গে দেখা বা কথা বলার মতো সময় ছিল না। প্রোগামটা যাতে করতে না পারি এজন্য কয়েকজন নেত্রী উঠে পড়ে লেগেছিল। যারা বিএনপির এজেন্ট। নানা ধরনের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তারা আমাদের বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে।
একজনকে আটকে রেখে জবানবন্দি নেওয়ার ঘটনাকেও তিনি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন।
তিনি বলেন, সব ডিজিটাল কারসাজি মিথ্যাচার। আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। ছাত্রলীগ ও আমাকে হেয় করতে এসব করা হচ্ছে। আমি এর নিন্দা জানাই। যারা এই মিথ্যাচার করছে তাদের মুখোশ উম্মোচন হবে।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২২
নিউজ ডেস্ক