বিষয়টি জানতে পেরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এমডি ফজলুর রহমানকে বুধবার (১৭ জুলাই) কয়লা খনি এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। সকাল থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীতে খনি গেটে অবস্থান নেন, যেন ফজলুর রহমান খনিতে প্রবেশ করতে না পারেন।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএমসিএল) শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ বাংলানিউজকে জানান, এমডি ফজলুর রহমান অফিস করলেই তাদের ক্ষতি করবেন। এমডির অত্যাচারে তারা অতিষ্ঠ হয়ে তাকে কয়লা খনিতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন।
খনির ব্যবস্থাপক (মাইনিং) মোশাররফ হোসেনকে ‘এমডির দোসর’ আখ্যা দিয়ে আবদুল ওয়াহেদ বলেন, তিনি এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। মোশাররফ হোসেনকে সরিয়ে দেওয়া না হলে এবং এমডি ফজলুর রহমান যদি খনিতে প্রবেশের চেষ্টা করেন তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অশান্ত হয়ে উঠবেন।
যোগাযোগ করলে এমডি ফজলুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বদলি আদেশ পাওয়ার পর তিনি আর কয়লা খনিতে যাননি। এখন ঢাকায় যাচ্ছেন।
বিসিএমসিএল শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাদের অভিযোগ, গত বছরের আগস্টে ফজলুর রহমান বিসিএমসিএলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে যোগদান করেই ব্যবস্থাপক (মাইনিং) মোশাররফ হোসেনের প্ররোচনায় নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। গত জানুয়ারি মাসে প্রফিট বোনাস আটকে রেখে খনির ১৪৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা করে প্রায় ৬০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের উদ্যোগ নেন। কিন্তু বিষয়টি কয়েকটি সংবাদপত্রে ফাঁস হয়ে গেলে তা ভেস্তে যায়। তবে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ নিজ বিভাগে টাকা জমা দিয়েছেন, যা তারা আজও ফেরত পাননি।
পরে এ বিষয়ে পেট্রোবাংলা কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি ৬০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের উদ্যোগ নেওয়ার প্রমাণ পায়। পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) জোবায়েদ আলীর নেতৃত্বে গঠিত ওই তদন্ত কমিটি কয়লা উৎপাদন পরিকল্পনা ও সুষ্ঠভাবে কোম্পানি পরিচালনা কাজে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়ার পরিবর্তে সাধারণ কারণে বদলি, কারণ দর্শানো, পরামর্শপত্র প্রদান, কোম্পানির পূর্ববর্তী কর্মকর্তাদের বিষয়ে বিরূপ সমালোচনার মাধ্যমে গ্রুপিং সৃষ্টি এবং কোনো কোনো কর্মকর্তাকে নিয়মবহির্ভূত সুবিধা প্রদান করায় খনির ভবিষ্যৎ অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে সম্প্রতি প্রতিবেদন দেয়।
এরপর কোল মাইন অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ও বিসিএমসিএল শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন এমডির অপসারণ দাবি করে লিখিত অভিযোগ দাখিল করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান বরাবর।
এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে পেট্রোবাংলা এক অফিস আদেশে ফজলুর রহমানকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনিতে বদলি করে। একইসঙ্গে মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনির এমডি মো. জাবেদ চৌধুরীকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এমডি (চলতি দায়িত্ব) পদে দায়িত্ব দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২১১ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৯
এইচএ/