মঙ্গলবার (০৬ আগস্ট) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ের হল রুমে এ চুক্তি সই হয়।
বাংলাদেশের পক্ষে ওই চুক্তিপত্রে সই করেন পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রাশিয়ান নিউক্লিয়ার ফুয়েল সাপ্লাই কোম্পানির (টিভিইল) কমার্শিয়াল ডিরেক্টর ফেদর শকোলভ।
রাশিয়ার পারমাণবিক জ্বালানি প্রস্তুত ও সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠান টিভিএল জয়েন্ট স্টক কোম্পানি এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সঙ্গে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, এসডিজির মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল কালাম আজাদ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর, ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্দর আই ইগনাতভ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সরকার ও রাশিয়ার রাশান ফেডারেশন সরকারের মধ্যে গত ২০১১ সালের ২ নভেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বিষয়ে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিউক্লিয়ার প্রযুক্তি সরবরাহকারি দেশ রাশিয়া এই বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনায় পুরো সময় জ্বালানি সরবরাহ করার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দু’দেশের মধ্যে এই জ্বালানি চুক্তিতে নিউক্লিয়ার ফুয়েলের মূল্য নির্ধারণে মেথডোলজি স্থির করা হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী সরবরাহের সময় বিশ্ব বাজারে বিদ্যমান দর অনুযায়ী এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর সরবরাহ করা নিউক্লিয়ার ফুয়েলের মূল্য নির্ধারিত হবে। ফুয়েলের মূল্য প্রতি ১০ বছর অন্তর পুনরায় মূল্যায়ন ও পুনরায় নির্ধারণ করা যাবে। এ চুক্তিটি ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে বিস্তর নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হয়।
রাশিয়ার সার্বিক সহযোগিতায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মিত হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আয়ুষ্কাল পর্যন্ত এখানে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম সরবরাহকরবে রাশিয়া।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রাশিয়ান নিউক্লিয়ার ফুয়েল সাপ্লাই কোম্পানির (টিভিইল) সঙ্গে ফুয়েলসাপ্লাইয়ের প্রাথমিক চুক্তি সই হয়। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার চূড়ান্ত চুক্তি সই হলো।
এই চুক্তি অনুযায়ী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যতদিন উৎপাদনে থাকবে, ততদিন রাশিয়া এই বিদ্যুৎকেন্দ্রেরজ্বালানি ইউরেনিয়াম সরবরাহ করবে।
এই জ্বালানি সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা জানান, এক গ্রাম ইউরেনিয়ামে প্রায় ২৪ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রায় তিন মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হয়।
গত বছরের জুলাই পর্যন্ত এক গ্রাম ইউরেনিয়ামের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য ছিল প্রায় ৬ দশমিক ৩০ ইউএস সেন্ট। যাবাংলাদেশি মুদ্রায় ৫দশমিক ৩০ টাকা। একইসঙ্গে তিন মেট্রিক টন কয়লার মূল্য ছিল ১৯৫ ইউএস ডলার বা ১৬হাজার টাকা।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন-রোসাটম এই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়নকরছে। দুই ইউনিট বিশিষ্ট এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ৩+ প্রজন্মের রিয়্যাক্টরভিভিইআর-১২০০ স্থাপন করা হবে। এর প্রথম ইউনিটের কাজ শেষ হবে ২০২৩ ও দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৪ সালে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৯/ আপডেট: ১৩৫৫ ঘণ্টা
এসকে/এএটি