ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

৬ বছরে একজনও পায়নি ডিপিডিসির প্রি-পেইড মিটার

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৯
৬ বছরে একজনও পায়নি ডিপিডিসির প্রি-পেইড মিটার

ঢাকা: মোট ১ লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ জনকে প্রি-পেইড মিটার দেওয়ার কথা থাকলেও রাজধানীর কয়েকটি এলাকার মানুষ এখনও তা পায়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই ‘প্রি-পেমেন্ট মিটারিং প্রজেক্ট ফর সিক্স এনওসিএস আন্ডার ডিপিডিসি’ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

বিদ্যুতের আধুনিক সুবিধা দিতে ২০১৩ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। কিন্তু এর ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পটির কোনো অগ্রগতি নেই।

রাজধানীর লালবাগ, বাসাবো, মানিকনগর, বংশাল, জুরাইন ও নারায়ণগঞ্জের পূর্ব এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথা।

সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রকল্পের আওতায় ৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। তবে এর অগ্রগতি শূন্য। কয়েক ধাপে প্রকল্পের সময় বাড়লেও তা ব্যয় করা হয়নি।

২০১৩ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে। পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে নির্ধারণ করা হয়। এরপরও আবারও দ্বিতীয় ধাপে মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। তবুও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও একবছর প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এই সময়েও প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নানা সংশয় দেখা গেছে। ফলে বাস্তবায়নের পরিবর্তে প্রকল্পটি সময় বাড়ানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বাংলানিউজকে বলেন, প্রি-পেইড মিটারিং প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নে আমরা সবসময় চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে ডিপিডিসিকেও বলা হয়েছে।

ডিপিডিসি সূত্র জানায়, বকেয়া বিল ছাড়া শতভাগ রাজস্ব অগ্রিম আদায় করাই প্রকল্পটির অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। কিন্তু প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের অবহেলার কারণে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

ডিপিডিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, ডিপিডিসির লট-২ কেনার প্রস্তাব বোর্ড সভায় অনুমোদিত হয়েছে। আর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) লট-১ কেনার প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ফলে চুক্তিটি না হওয়ার কারণে এই সময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব না।

কর্মকর্তারা বলেন, এর আগে বিভিন্ন জটিলতার কারণে প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীকে জার্মানির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উন্নয়ন ব্যাংক-কেএফডব্লিউ এর অর্থছাড় চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেড়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদও বেড়েছে।

এদিকে প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের চুক্তি এখনও সম্পন্ন হয়নি। তাই প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আরও এক বছর সময় লাগবে বলে মনে করছে ডিপিডিসি।

এ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ১৭৩ কোটি ৩৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা। এর মধ্যে কেএফডব্লিউ ঋণ মিলবে ৯১ কোটি টাকা।

যোগাযোগ করা হলে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী কেএফডব্লিউ সময় মতো অর্থ ছাড় দেয়নি। ফলে প্রকল্পের অগ্রগতিও সেভাবে হয়নি। তবে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে প্রয়োজনীয় তৎপরতা চলছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৯
এমআইএস/এএটি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।