বুধবার (৬ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনগুলোর গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।
‘কয়লায় শ্বাসরুদ্ধ: কার্বন বিপর্যয়ের মুখে বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ৬৩ গুণ বাড়ানোর পরিকল্পনায় বড় প্রভাবকের ভূমিকা পালন করবে চীন, যুক্তরাজ্য, জাপান ও ভারত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী ক্রমবর্ধমান বিদেশি অর্থায়নে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ১ থেকে বাড়িয়ে ৩০টি করা হবে। বিদ্যমান ৫২৫ মেগাওয়াটের বিপরীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে ৩৩ হাজার ২শ’ ৫০ মেগাওয়াট। যা বায়ুমন্ডলে বার্ষিক ১১ কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন কয়লাভিত্তিক কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ করবে। এটি একটি কার্বন বিস্ফোরণের ঘটনা, যা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিকর প্রভাবের ফলে বাংলাদেশের দুর্দশাগ্রস্থ জনগোষ্ঠীর অস্তিত্বকে চরম হুমকির মুখে ফেলবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বড় আকারের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা মূলত বৈদেশিক ঋণ সহায়তা নির্ভর। যা বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের বোঝা বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে। এতে বৈদেশিক বাণিজ্য ভারসাম্য আরও প্রকট হবে। যুক্তরাজ্য ও জাপান নিজেদের দেশে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে উৎসাহিত করলেও এখানে ওই দু’টি দেশ তিনটি করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অর্থ যোগান দিচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাতে কয়লা ছাড়াই পরিবেশ বান্ধব, নিরাপদ ও টেকসই বিদ্যুৎ উৎপাদন বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব। কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিবর্তে স্বল্প খরচে সৌরশক্তি ও বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করে বাংলাদেশ চাইলে প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী প্রধান ইফতেখারুজ্জমান বলেন, যুক্তরাজ্য ও জাপান কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরে এসেছে। তারা নিজেরা যে পথ থেকে সরে এসেছে আমরা সে পথে যাচ্ছি। তাদের ঋণের ফাঁদে পা দিয়ে সরকার এটি করছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে।
‘বিদ্যুৎ আমাদের উৎপাদন করতেই হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে অগ্রগতি হয়েছে এর জন্য বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে আত্মঘাতী পথ, সেটি বেছে নেওয়া যাবে না। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাদকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শরিফ জামিল, শরমিন মোর্শেদ, এম এ সিদ্দিকী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৯
এসকে/এফএম/এইচএডি