ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

যে মসজিদে তারাবির নামাজ আদায় করেন নারীরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২৩
যে মসজিদে তারাবির নামাজ আদায় করেন নারীরা

বাগেরহাট: পুরুষের পাশাপাশি নারীদের জন্যও মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা জায়েজ। যদিও নানা কারণে বাংলাদেশে সেই প্রচলন তেমন নেই।

 

তবে ব্যতিক্রমও রয়েছে, দেশের হাতে গোনা কয়েকটি মসজিদের মতো বাগেরহাট শহরের সোনাতলা এলাকার আওলিয়াবাদ জামে মসজিদে নিয়মিত তারাবির নামাজ আদায় করছেন নারীরা। মসজিদে এসে নামাজ আদায়ের ফলে নারীরা আরও বেশি আমলদার হতে পারছেন বলে দাবি মসজিদ কর্তৃপক্ষের।  

খুলনা বাগেরহাট মহাসড়কের পাশে সোনাতলা মোড়ে তিনতলা বিশিষ্ট এ মসজিদের দোতলায় নামাজ আদায় করেন নারীরা। আলাদা সিঁড়ি দিয়ে নামাজের জন্য ওঠেন তারা। পুরুষরা যে ইমামের পেছনে নামাজ আদায় করেন, নারীরাও একই ইমামের পেছনে নামাজ আদায় করেন। পাঁচ বছর ধরে নারীরা এ মসজিদে কোন প্রকার বিতর্ক ও অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শরীয়ত সম্মতভাবে তারাবির নামাজ আদায় করছেন। ভবিষ্যতে নারীদের জন্য জুমা ও ওয়াক্তের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ কারি মো. মোবারক হোসেন।

তিনি বলেন, মসজিদের মুসল্লিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পাঁচ বছর আগে মসজিদে নারীদের জন্য তারাবির নামাজের ব্যবস্থা করি। এরপর থেকে নিয়মিত নারীরা তারাবির নামাজ পড়ছেন।
 
নারীদের মসজিদে আসার সুযোগ না থাকায় তারা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান থেকে দূরে রয়েছে। মসজিদে এলে নারীরা ইসলাম সম্পর্কে আরও বেশি জানতে পারবে। কারণ মসজিদে জুমার খুতবাসহ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। এছাড়া নবীজির (সা.) আমলেও মসজিদে নারীরা নামাজ পড়তেন। মসজিদে নারীদের নামাজ পড়ায় শরীয়তের কোনো বাধা নেই। অন্যান্য মসজিদেও এভাবে নারীদের মসজিদে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রাখা উচিত বলে জানান তিনি।

এদিকে আওলিয়াবাদ জামে মসজিদের বিষয়টি দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে পাশের দশানী এলাকার বায়তুন নাজাত জামে মসজিদেও তিন বছর ধরে নারীরা নিয়মিত তারাবির নামাজ আদায় করছেন। সেই সঙ্গে নারীদের জুমার নামাজ আদায়েরও ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। পথচারী নারীদের জন্য ওয়াক্তের নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে এ মসজিদে।  

বায়তুন নাজাত জামে মসজিদে মায়ের সঙ্গে তারাবির নামাজ পড়তে আসা ১১ বছর বয়সী ফাতেমা তুজ-জোহরা ইমা বলে, মায়ের সঙ্গে প্রথমবারের মতো মসজিদে এসে তারাবি পড়তে পেরে আমাদের খুব ভালো লাগছে। মসজিদের দোতলায় আমরা নামাজ পড়ি। আলাদা সিঁড়িতে ওঠা-নামার ব্যবস্থা আছে, কোনো মসস্যা হয় না।
নাবিলা তাবাচ্ছুম নামে এক নারী বলেন, মসজিদে নারীদের তারাবির নামাজ পড়ার ব্যবস্থাটা খুবই ভালো হয়েছে। তবে শহরের মসজিদগুলোতে যাতে নারীরা ওয়াক্তের নামাজ আদায় করতে পারে, সেই ব্যবস্থাও রাখার দাবি জানাই।

বায়তুন নাজাত জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মো. বশির উদ্দিন বলেন, মহান আল্লাহ তাআলা ইবাদতের জন্য নারী ও পুরুষকে সমান অধিকার দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। যে যেমন ভালো কাজ করবে, আল্লাহ তেমন প্রতিদান দেবেন। মক্কা-মদিনা ও বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রে নারীরা মসজিদে নামাজ আদায় করেন। আমাদের দেশেও এটা শুরু হয়েছে। আমাদের এ মসজিদে শতাধিক নারী তারাবি ও জুমার নামাজ আদায় করেন।

নারীদের আরও বেশি বেশি মসজিদে আসা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, পুরুষরা জুমা ও ওয়াক্তের নামাজে মসজিদে আসে। বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল ও ইসলামিক আলোচনায় হরহামেশাই অংশ নেয়। যেখানে তারা ইসলামিক আলোচনা শুনতে পারে। কিন্তু নারীদের এ সুযোগ খুব সীমিত। তাই পর্দার মধ্যে থেকে শরিয়ত সম্মতভাবে নারীদের মসজিদে আসা উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।