মাসয়ালা: নিজ প্রয়োজনীয় খরচাদি বাদ দিয়ে যে তারিখে নেসাব পরিমাণ নগদ টাকা বা ব্যবসায়িক সামগ্রী নিজ মালিকানায় আসে সেদিন থেকে চাঁদের হিসাবে বছর পূর্ণ হলে মালিকানাধীন সব নগদ অর্থ ও সব ব্যবসায়িক পণ্যের হিসাব করে ৪০ ভাগের ১ ভাগ অর্থাৎ শতকরা ২.৫% হারে জাকাত আদায় করা ওয়াজিব হয়। -বাদায়েউস সানায়ে: ২/৬
মাসয়ালা: কোনো স্বার্থ ছাড়া ফকির-মিসকিনকে প্রদেয় জাকাতের সম্পদের মালিক বানিয়ে দিতে হবে।
-মাবসূতে সারাখসি: ২/২০২
মাসয়ালা: ব্যবসায়ীদের সম্পদ থেকে জাকাত বের করার পদ্ধতি হলো, ব্যবসার মালগুলোর বর্তমান বাজারদর নির্ধারণ করে সমস্ত সম্পদের মূল্য রুপার নিসাব তথা ৫২.৫ তোলা রুপার মূল্য বা তার বেশি হলে কর্জ থাকলে সে পরিমাণ বাদ দিয়ে বছরান্তে বাকি সব মালের ৪০ ভাগের ১ ভাগ জাকাত আদায় করবে। -রদ্দুল মুহতার: ২/২৯৭
মাসয়ালা: বাংলাদেশে প্রচলিত ইনকাম ট্যাক্স আদায় করার দ্বারা জাকাত আদায় হবে না। -ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম: ৬/১৪৭
মাসয়ালা: ঋণী ব্যক্তিকে জাকাত বাবদ পাওনা ঋণ ক্ষমা করে দিলে জাকাত আদায় হবে না। তবে জাকাতের টাকা ঋণগ্রহীতাকে প্রদান করে ওই টাকায় নিজের ঋণ আদায় করে নেওয়া জায়েয। -রদ্দুল মুহতার: ২/২৭১, আল বাহরুর রায়েক: ২/২১১
মাসয়ালা: জাকাত জানিয়ে দেওয়া জরুরি নয়। হাদিয়া বা উপহার বলেও জাকাত দিলে আদায় হয়ে যাবে। বরং জাকাতের উপযুক্ত পাত্র হওয়া নিশ্চিত হলে না বলাই উত্তম। -রদ্দুল মুহতার: ২/২৬৭ -ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/১৭১
মাসয়ালা: স্বর্ণ-রূপার মূল্য দিয়ে জাকাত আদায় করতে গেলে বর্তমান মার্কেটের যে দামে স্বর্ণ বিক্রয় করা হয় সে দাম অনুযায়ী ব্যবহৃত স্বর্ণের জাকাত আদায় করতে হবে। -আদ্দুররুল মুখতার: ২/২৮৬, ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম: ৬/১২৪
মাসয়ালা: বর্তমানে গ্রামের হিসাবে জাকাতের নিসাব নির্ধারণে মুফরিদের সামান্য মতপার্থক্য থাকলেও সতর্কতামূলক ৭.৫ তোলা স্বর্ণের পরিমাণ ৮৭.৪৮০ গ্রাম এবং ৫২.৫ তোলা রূপার পরিমাণ ৬১২.৩৪০ গ্রাম নেসাব ধর্তব্য করে জাকাত দেওয়া শ্রেয়।
মাসয়ালা: স্ত্রীর মালিকানাধীন স্বর্ণ বা অলংকারের জাকাত আদায় করা স্ত্রীর ওপরই ওয়াজিব, স্বামীর ওপর নয়। যদি স্বামী-স্ত্রীর পক্ষ থেকে তার সম্মতিতে আদায় করে দেয় তাহলে আদায় হয়ে যাবে। -আদ্দুররুল মুখতার: ২/২৫৯
মাসয়ালা: জাকাতের নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়ার পর বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পূর্বে অগ্রীম জাকাত দেওয়াতে আপত্তি নেই। চলতি বছরসহ আগামী বছরসমূহের জাকাত অগ্রিম প্রদান করলেও জায়েয হবে। -সুনানে আবু দাউদ: ১৬২৪
মাসয়ালা: মৃত ব্যক্তি যদি জাকাত আদায় করার অসিয়ত করে যায়, তাহলে তার সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ হতে জাকাত আদায় করা জরুরি। যদি অসিয়ত না করে থাকে তাহলে আদায় করা জরুরি নয়। হ্যাঁ, স্বেচ্ছায় ওয়ারিসরা নিজ সম্পদ থেকে আদায় করে দিলে ক্ষমার আশা করা যায়। এক্ষেত্রে মুফতিরা মৃতের জন্য এস্তেগফার করারও পরামর্শ দিয়ে থাকনে। -বাদায়েউস সানায়ে: ২/৫৩
মাসয়ালা: যেহেতু মোবাইলে টাকা পাঠালে ওই ব্যক্তি টাকার মালিক হয়ে যায় তাই জাকাত আদায় হয়ে যাবে। -ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ৫/৩১২
মাসয়ালা: জাকাত দেওয়ার জন্য রেখে দেওয়া টাকা চুরি হয়ে গেলে জাকাত আদায় হবে না। যে পরিমাণ টাকা চুরি হয়েছে পুনরায় ওই পরিমাণ টাকা আদায় করতে হবে। -মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস: ৬৯৩৭, রদ্দুল মুহতার: ২/২৭০
মাসয়ালা: বকেয়া জাকাত কিছু রয়ে গেছে যা আদায় করা হয়নি এবং বর্তমানে সঠিক হিসাব নির্ণয় করা না গেলে সেগুলোর সাধ্যানুযায়ী হিসাব করে প্রবল ধারণার ভিত্তিতে বকেয়া জাকাত আদায় করে দিলে চলবে এবং সতর্কতামূলক কিছু বেশি দিয়ে দেবে। তদ্রুপ বর্তমানের জাকাতের বেলায়ও যথাযথ হিসাবের পরও সন্দেহ থাকলে কিছু অতিরিক্ত আদায় করে দেবে। -রদ্দুল মুহতার: ২/২৯৫, ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম: ৬/৪৪
মাসয়ালা: বাৎসরিক আয়-ব্যয় হিসাব করে জাকাত দিতে হয়। অনুমান করে জাকাতের নিয়তে যত টাকা জাকাত আদায় করবে তত টাকা পরিমাণ সম্পদের জাকাত আদায় হবে। সম্পদ যদি তার চেয়ে অতিরিক্ত হয় তাহলে অতিরিক্ত সম্পদের জাকাত আদায় করে দিতে হবে। -আল বাহরুর রায়েক: ২/২১২, আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল: ৩/৩৬৩
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২৩
এসআই