ইনজেকশন, ইনসুলিন, টিকা, স্যালাইন ও রক্ত গ্রহণ
রোজা অবস্থায় ইনজেকশন, ইনসুলিন, টিকা, স্যালাইন ও রক্ত নেওয়ার দ্বারা রোজা ভঙ্গ হবে না। কারণ, এ সকল প্রক্রিয়ায় দেহের ভিতর যা প্রবেশ করানো হয় তা প্রবেশের স্বাভাবিক পথ দিয়ে পাকস্থলীতে বা মস্তিষ্কে প্রবেশ করে না।
মাসয়ালা : তবে যে সব ইনজেকশন বা স্যালাইন খাদ্যের কাজ করে তা রোজা অবস্থায় তীব্র প্রয়োজন ছাড়া নেয়া মাকরুহ। -ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ১/২০৩, আল বাহরুর রায়েক: ২/৪৮৮
নস্যি, ছ্যাঁকা বা বাষ্প নেয়া
এক ধরণের ঔষধ আছে যা শিশিতে ভরে শিশির মুখে নাক লাগিয়ে ওপরের দিকে নিঃশ্বাস টান দিতে হয়। কোনো এলাকায় এটাকে নস্যি নেয়া বলা হয়। আবার কোনো কোনো ইউনানী ও আয়ূর্বেদী ঔষধ ব্যবহারবিধি এরূপ যে, তা ফুটন্ত পানিতে ঢেলে দিয়ে তার বাষ্প নাক দিয়ে নেয়া হয়ে থাকে। এটাকে সেঁক, ছ্যাঁকা বা বাষ্প নেয়া বলা হয়। এগুলোর প্রতিক্রিয়া অনতিবিলম্বে মস্তিস্ক, কণ্ঠনালী এবং সিনা পযন্ত পৌঁছে যায়। রোজা অবস্থায় এরূপ নস্যি, সেঁক বা বাষ্প নেয়ার দ্বারা রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। -ফতোয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ: ৬/৪১৮ ও ৪১১
রক্ত দেয়া
রোজা অবস্থায় ব্লাড টেস্টের জন্য বা কোনো রুগীর জন্য শরীর থেকে রক্ত দিলে রোজা ভঙ্গ হবে না। তবে রক্ত দেওয়ার কারণে যদি এমন দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা থাকে যে, সে রোজা রাখতে পারবে না তাহলে মাকরুহ হবে। -ফাতহুল ক্বদির: ২/৩৪৬
দাঁত উঠানো, কাটা-পোড়া বা ক্ষতস্থান থেকে রক্ত-পুঁজ বের হওয়া
রোজা অবস্থায় দাঁত উঠালে অনেক রক্ত বের হয়। এমনিভাবে শরীরের কোনো কাটা-পোড়া বা ক্ষতস্থান থেকে রক্ত-পুঁজ ইত্যাদি বের হলে রোজা ভঙ্গ হবে না। তবে পেটের ভেতরে যেন রক্ত প্রবেশ না করে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যদি থুথুর সাথে রক্ত পেটের ভিতর চলে যায়। আর রক্তের পরিমাণ থুথুর চেয়ে বেশি বা সমপরিমান হয় তাহলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে; অন্যথায় নয়। এমনিভাবে রোজা অবস্থায় শরীরের কোনো কাটা-পোড়া বা ক্ষতস্থান থেকে রক্ত-পুঁজ বা এ জাতীয় কোনো কিছু বের হলেও রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। - ফতোয়ায়ে শামী: ২/১০৭, ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ১/২০৩
পায়খানার রাস্তায় মেডিসিন পুশ করা
কারো পায়খানা বন্ধ হয়ে গেলে ডাক্তাররা রুগীর পায়খানার রাস্তায় এক ধরণের মেডিসিন পুশ করায় যাতে পায়খানা হয়। এতে রোজা ভেঙ্গে যাবে। -আল বাহরুর রায়েক: ২/৪৮৬
মাসয়ালা : অনরুপভাবে জ্বরের বা যে কোনো রোগের সাপোজিটর মলদ্বারের অভ্যন্তরে ব্যবহার করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। -আলমগিরি: ১/২৬৬, হেদায়া: ১/২২০
কপার-টি
কপার-টি বলা হয় যোনিদ্বারে প্লাস্টিক লাগানোকে, যেন সহবাসের সময় বীর্যপাত হলে বীর্য জরায়ুতে পৌঁছাতে না পারে। এমন করলে রোজা ভাঙ্গবে না। কারণ যোনিদ্বার রোজা ভঙ্গ হওয়ার গ্রহণযোগ্য কোনো রাস্তা নয়। তবে কপার-টি লাগিয়ে সহবাস করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। এক্ষেত্রে রোজার কাজা কাফফারা উভয়টাই ওয়াজিব হবে।
স্যালাইন
স্যালাইন নেয়া হয় রগে, আর রগ যেহেতু রোজা ভঙ্গ হওয়ার গ্রহণযোগ্য রাস্তা নয়, তাই স্যালাইন নিলে রোজা ভাঙ্গবে না। তবে রোজার কষ্ট লাঘবের জন্য স্যালাইন নেয়া মাকরুহ। -ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘন্টা, জুন ২৯, ২০১৫
এমএ/