আজ অনুষ্ঠিত হবে ২৪তম তারাবি। আজকের খতমে তারাবিতে তেলাওয়াত করা হবে ২৭তম পারা।
সূরা আয যারিয়াতের আজকের পঠিতব্য অংশের উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হলো-
৫৫নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, আপনি উপদেশ দিতে থাকুন। কেননা, উপদেশ ঈমানদারদের উপকৃত করবে।
৫৬নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, আমি জিন ও মানবসম্প্রদায়কে আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।
সূরা আত তূর
সূরা আত তূর মক্কি সূরা। ক্রমিক নং ৫২। আয়াত সংখ্যা ৪৯টি। এ সূরার উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হলো-
২১নং আয়াতের ভাষ্যমতে যারা ঈমান ও আমলের গুণে জান্নাতে অনেক উচ্চমর্যাদা লাভ করবে কিন্তু তাদের সন্তানরা ঈমানদার হওয়া সত্বেও আমলের কারণে মর্যাদায় তাদের তুলনায় অনেক নীচে থাকবে আল্লাহতায়ালা তাদের খুশি করার জন্য তাদের সন্তানদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে তাদের সঙ্গে মিলিত করাবেন।
সূরা আন নাজম
সূরা আন নাজম মক্কি সূরা। ক্রমিক নং ৫৩। আয়াত সংখ্যা ৬২টি। এ সূরার উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো-
২৬নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ফেরেশতাদের সুপারিশ কোনো কাজে আসবে না। তবে আল্লাহতায়ালা নিজ ইচ্ছায় ও খুশিতে যার জন্য অনুমতি দিবেন তার ক্ষেত্রে কাজে আসবে।
সূরা আল কামার
সূরা আল কামার মক্কি সূরা। ক্রমিক নং ৫৪। আয়াত সংখ্যা ৫৫টি। এ সূরার উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো-
১৭নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, আমি কোরআনকে উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ করে দিয়েছি।
সূরা আর রাহমান
সূরা অার রামহান মাদানি সূরা। ক্রমিক নং ৫৫। আয়াত সংখ্যা ৭৮টি। সূরা আর রাহমানের বেশিরভাগ বিষয়বস্তু আল্লাহতায়ালার ইহলৌকিক ও পারলৌকিক অনুগ্রহ দানসমূহের বর্ণনা সম্পর্কিত। তাই যখন কোনো বিশেষ অবদান উল্লেখ করা হয়েছে, তখনই মানুষকে সতর্ক ও কৃতজ্ঞতা স্বীকারে উৎসাহিত করার জন্য ‘ফাবি আইয়্যি আলায়ি রাব্বিকুমাতু কাজ্জিবান অর্থাৎ অতএব, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে’ বাক্যটি বার বার উল্লেখ করা হয়েছে। পুরো সূরায় এ বাক্যটি একত্রিশ বার ব্যবহৃত হয়েছে। এ সূরার উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হলো-
৪১নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, সেদিন (কিয়ামতের দিন) গুনাহগারদের চেনা যাবে, তাদের চেহারা দেখে। সুতরাং সাবধান!
৪৬নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে পেশ হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্য দু’টি জান্নাত রয়েছে।
এ বাক্য দ্বারা উদ্দেশ্যে হলো- যারা সর্বাবস্থায় কেয়ামতের দিন আল্লাহতায়ালার সামনে উপস্থিত হওয়ার ও হিসাব-নিকাশ দেয়ার ভয়ে ভীত থাকে। ফলে তারা কোনো পাপকর্মের কাছেও যায় না। বলা বাহুল্য, এ ধরনের লোক আল্লাহতায়ালার বিশেষ নৈকট্যপ্রাপ্ত। আয়াতে তাদের কথাই বলা হয়েছে।
সূরা আল ওয়াকিয়া
সূরা আল ওয়াকিয়া মক্কি সূরা। ক্রমিক নং ৫৬। আয়াত সংখ্যা ৯৬টি। সূরা আল ওয়াকিয়ার অনেক ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় বিখ্যাত দুই সাহাবির কথোপকথন।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) যখন অন্তিম শয্যায় শায়িত ছিলেন, তখন আমিরুল মুমিনীন হজরত ওসমান (রা.) তাকে দেখতে যান। তাদের মধ্যে যে শিক্ষাপ্রদ কথোপকথন হয় তা নিম্নরূপ-
হজরত ওসমান: আপনার রোগটা কী? হজরত ইবনে মাসউদ: আমার পাপসমূহই আমার রোগ। হজরত ওসমান: আপনার কামনা কী? হজরত ইবনে মাসউদ: আমার রবের রহমত কামনা করি। হজরত ওসমান: আপনার জন্য ডাক্তার ডাকবো কি? হজরত ইবনে মাসউদ: ডাক্তারই আমাকে অসুস্থ করেছেন। হজরত ওসমান: আমি আপনার জন্য সরকারী কোষাগার থেকে কোনো উপঢৌকন পাঠাবো কি? হজরত ইবনে মাসউদ: এর কোনো প্রয়োজন হবে না। হজরত ওসমান: উপঢৌকন গ্রহণ করুন। তা আপনার পর আপনার কন্যাদের কাজে আসবে। হজরত ইবনে মাসউদ: আপনি ভাবছেন যে, আমার কন্যারা আমার অবর্তমানে দারিদ্র্য ও উপবাসে পতিত হবে? আমি এরূপ ভাবি না। কারণ, আমি কন্যাদেরকে জোর নির্দেশ দিয়ে রেখেছি যে, তারা যেন প্রতি রাতে সূরা ওয়াকিয়া পাঠ করে। আমি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিরাতে ওয়াকিয়া সূরা পাঠ করবে, অভাব কখনো তাকে স্পর্শ করবে না। ’ -তাফসিরে মাআরেফুল কুরআন: ৮/১০৬
এ সূরার উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হলো-
৪৯-৫৬নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, সমস্ত পূবর্তী ও পরবর্তীদের একটি নির্দিষ্ট দিনে সমবেত করা হবে। আজ যারা দ্বীন ইসলাম ছেড়ে অন্য পথ ও মতের অনুসরণ করছ এবং ইসলামকে বা এর অংশ বিশেষকে অস্বীকার করছ সেদিন তাদের খেতে হবে জাক্কুম বৃক্ষ। তা দ্বারা তোমাদের পেট ভরতে হবে। এরপর ফুটন্ত পানি পান করতে হবে। পিপাসিত উটের মতো তোমরা তা পান করবে। এ হবে সেদিনের আপ্যায়ন।
৫৭-৭৪নং আয়াতে পুনরুত্থানকে প্রমাণিত করা হয়েছে।
সূরা আল হাদিদ
সূরা আল হাদিদ মাদানি সূরা। ক্রমিক নং ৫৭। আয়াত সংখ্যা ২৯টি। এ সূরার উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হলো-
৩নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহই প্রথম। তিনিই শেষ। তিনিই প্রকাশ্য। তিনিই গোপন। তিনি সবকিছু জানেন।
১১নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, কেউ কি আছে, যে আল্লাহকে উত্তমরূপে ঋণ দিবে? তাহলে আল্লাহ তার জন্য তা অনেক বৃদ্ধি করবেন। তার জন্য থাকবে পছন্দনীয় বিনিময়।
১৩নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, সেদিন মুনাফেক পুরুষ ও নারীরা মুসলমানদের বলবে, আমাদের জন্য একটু অপেক্ষা কর। আমরাও তোমাদের আলো থেকে কিছু আলো গ্রহণ করি। উত্তরে তাদের বলা হবে, তোমরা তোমাদের পিছনে ফিরে যাও। পিছন থেকে আলো তালাশ করে নিয়ে আস। অতপর এ দু’দলের মাঝে একটি প্রাচীর দাঁড় করানো হবে। যাতে একটি দরজা থাকবে। এর ভিতরে থাকবে রহমত আর বাইরে থাকবে আজাব।
১৬নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ঈমানদারদের জন্য কি এখনো সময় আসেনি, যে তাদের অন্তর আল্লাহর জিকিরের জন্য অবনত হবে।
২৩নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, যা কিছু তোমাদের হাতছাড়া হয় তার জন্য দুঃখিত হবে না। আর যা কিছু তোমাদের দান করা হবে তার জন্য গর্বিত হবে না। আল্লাহতায়ালা অহংকারী গর্বিত লোককে পছন্দ করেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘন্টা, জুলাই ১১, ২০১৫
এমএ/