সহসাই এ মাস আমাদের থেকে বিদায় নেবে। তখন আমাদের জীবনে যদি রমজানের বিশেষ নেক আমলগুলো চালু রাখা যায়, তা হলে অনেক সুফল পাওয়া যাবে।
কিন্তু নফল রোজার জন্য কোনো মাস বা দিনের সীমাবদ্ধতা নেই। বছরের পাঁচটি দিন ছাড়া সব দিন রোজা রাখা যাবে।
রমজানের আরেকটি কাজ কুরআন মাজিদ তেলাওয়াত ও অধ্যয়ন। এটিও রমজানের সঙ্গে নির্দিষ্ট নয়। কিন্তু রমজান মাসে নাজিল হওয়ার কারণে এ মাসের সঙ্গে কুরআন মাজিদের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। তাই রমজান মাসে অন্য সময়ের তুলনায় বেশি কুরআন মাজিদ তেলাওয়াত ও চর্চার ওপর জোর দেয়া হয়। রমজানের পরে এ অভ্যাস ও নিয়ম চালু রাখা উচিত। আল্লাহর কালামের সঙ্গে সম্পর্ক যতই ঘনিষ্ঠ হবে, আল্লাহর বিশেষ রহমতের ততই আশা করা যাবে। রমজানে এ কিতাবের প্রতি যে মনোযোগ বাড়ে, সেটিকে আল্লাহর রহমত হিসেবেই গণ্য করা উচিত এবং তা ধরে রাখা প্রয়োজন। কুরআন তিলাওয়াত, অধ্যয়ন ও গবেষণায় মুসলমানদের আরো আগ্রহী হওয়া প্রয়োজন।
তাসবিহ, তাহলিল ও ইস্তেগফার মুমিনের প্রাত্যহিক কর্তব্য। রমজানে তা বেড়ে যাওয়া খুবই শুভ আলামত। কিন্তু তা রমজান পর্যন্ত সীমিত রাখা উচিত নয়। রমজানে মুমিন বান্দাদের মধ্যে দান খয়রাতের আগ্রহ বেড়ে যায়। এটিও আল্লাহর অনুগ্রহ। সম্পদের মালিক আল্লাহ। বান্দা নিছক আমানতদার। আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী সম্পদ ব্যয় করা মুমিনের কর্তব্য। ধনীর সম্পদে অভাবী ও বঞ্চিতদের প্রাপ্য রয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে কুরআন মাজিদে। রমজানে মুমিন বান্দারা আল্লাহর এ বিশেষ হুকুমটি পালনে আরো আগ্রহী হন অন্য মাসের তুলনায় অনেক বেশি সওয়াব লাভের আশায়। এ কারণেই রমজান মাসে জাকাত আদায়ের রেওয়াজ চালু হয়েছে। তা ছাড়া সাদকাতুল ফিতর এ মাসের সঙ্গে জড়িত। মহানবী সা. এর কাছে কখনো সম্পদ জমা থাকত না। এ জন্য তার ওপর কখনো জাকাত ফরজ হয়নি। সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হওয়ার মতো সম্পদও তার কাছে থাকেনি। কিন্তু তিনি সব সময় দানের হাত সম্প্রসারিত রাখতেন। আর রমজান এলে তার দানের মাত্রা অত্যন্ত বেড়ে যেত বলে সাহাবায়ে কেরাম বর্ণনা করেছেন। অতএব রমজান শেষ হলেও এসব ইবাদত অব্যাহত রাখা উচিত সায়েমের জন্য। সায়েমের গন্তব্য তো আখেরাত পর্যন্ত। তাই তার আমল হবে জীবনভর।
লেখক: মুফাসসিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব; চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২২ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৮
এমএ/