ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

বগুড়ায় লোভনীয় ইফতার আইটেম

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২২
বগুড়ায় লোভনীয় ইফতার আইটেম বগুড়ার লোভনীয় দধি। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: বরাবরের মতো বগুড়ায় ইফতার আইটেমে থাকে মোরগ পোলাও, বড় বাপের পোলাও, মুরগি, খাসির রোস্ট, কিমা, খাসির রান, কোয়েল, কবুতর ভুনা, বেগুনি, শাহী জিলাপি, শরবত, সুতি কাবাব, টিকা কাবাব, জালি কাবাব, খাসি ও গরুর মাংসের চাপ, চিকেন ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই ভিজা ছামুচা, খাসির লেগ কাবাব, আলুর চপ, শাকপুলি, মাঠা, স্পেশাল ফালুদাসহ আরও সুস্বাদু খাবার।

রোববার (০৩ এপ্রিল) বিকেলে বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা, ইয়াকুবিয়ার মোড়, জলেশ্বরীতলা, কাঁঠালতলা, গোহাইল রোডসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা মেলে এবারের রমজানে তৈরি এসব ইফতার সামগ্রীর।

সুস্বাদু লোভনীয় এসব স্বাদের খাবার কিন্তু আবার সব সময় মেলে না। ইচ্ছে থাকলেও একসঙ্গে এতোসব আইটেম মেলানো সম্ভব হয় না। কিন্তু রমজান মাস এলেই চিত্রটা পাল্টো যায়। সাধারণত প্রত্যেক বছর রমজান মাস ঘিরে ইফতার আইটেম হিসেবে এসব খাবার তৈরি করা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় রমজানের প্রথম দিনেই লোভনীয় স্বাদের এসব ইফতার সামগ্রী তৈরি করেছেন বগুড়ার ব্যবসায়ীরা।  এর মধ্যে বেশ কয়েক আইটেমের খাবার পেতে হলে আগে থেকেই অর্ডার দিয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয় ক্রেতাদের। নির্ধারিত সময়েই খাবার টেবিলে বা ক্রেতাদেরও হাতে পৌঁছে যায় তাদের পছন্দের খাবার। আর এসব খাবার তৈরিতে শহরের আকবরিয়া গ্র্যান্ড, শ্যামলী, কোয়ালিটি, সেলিম, ময়নাসহ আরও কিছু হোটেল-রেস্তোরাঁ অন্যতম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বগুড়াকে নানা কারণে ঐতিহ্যের শহর বলা হয়। এই শহরের তৈরি দইয়ের খ্যাতি শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরেও রয়েছে। এছাড়া নানা ইতিহাস-ঐতিহ্যের কারণেও মানুষ বগুড়াকে চেনে। এসব বিবেচনায় রেখে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাহারি আইটেমের ইফতার সামগ্রী তৈরি করেন। ব্যবসায়ীরা এক্ষেত্রে নানা শ্রেণী-পেশার ক্রেতা সাধারণের রুচি ও ক্রয় ক্ষমতার বিষয়টিও মাথায় রাখেন।

প্রথম রমজানকে ঘিরে এ পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ইফতার সামগ্রী তৈরি ও বিক্রি করতে সকাল থেকেই প্রস্তুতি নেন। কেননা নামিদামি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি ছোট-বড় হোটেল, ভ্রাম্যমাণ ও মৌসুমি দোকানিরা ইফতার সামগ্রী বানান। এজন্য ভ্রাম্যমাণ ও মৌসুমী দোকানিদের জায়গা ঠিক করা ও দোকানপাট গুছিয়ে নেওয়ার কাজটা আগেই সারতে হয়। শামীম হোসেন, সেলিম মিয়া নামে একাধিক দোকানি বাংলানিউজকে বলেন, কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের মান ধরে রাখতে ক্রেতা চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে ইফতার সামগ্রী বানায়। আর প্রতিষ্ঠানের দিকে দৃষ্টি বাড়াতে পুরো রমজানজুড়েই ভিন্ন ডেকোরেশনের ব্যবস্থা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ ও মৌসুমি দোকানিরা তাদের সাধ্যমতো ইফতার সামগ্রী বানানো ও দোকান সাজানোর কাজটা সারেন।

তারা বলেন, ঐতিহ্যের ধারায় চালিত প্রতিষ্ঠানগুলোয় ইফতার করতে চাইলে রোজাদার ব্যক্তিদেরকে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা আগে আসতে হবে। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানগুলোয় নির্ধারিত আসন থাকে। সেই হিসেবে প্লেটে রকমারি আইটেমের ইফতার সাজিয়ে টেবিলের আসন অনুযায়ী রাখা হয়। আর আসন ভরে গেলে তখন কোনো কিছু করার থাকে না। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ নামিদামি ব্যানারের এসব প্রতিষ্ঠানে ইফতার করতে আসেন বলেও মন্তব্য করেন তারা।

অন্যদিকে ছোট-বড় হোটেল, ভ্রাম্যমাণ ও মৌসুমি দোকানিরা দুপুর থেকেই তাদের দোকান ইফতার সামগ্রী দিয়ে সাজিয়ে তোলেন। ইফতারের সময় গড়িয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এসব দোকানে বেচাবিক্রির চাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। দোকানিদের যেন দম ফেলার ফুসরত থাকে না তখন। মামুনুর রশিদ মামুন, আবু সাইদ হেলালসহ একাধিক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, ইফতার সামগ্রীর দাম প্রত্যেক বছর কমবেশি বেড়েই চলেছে। পেঁয়াজু, ছোলা, খেজুর, বাদাম, জিলাপি, বেগুনি, চানাচুর, ঝুরি চানাচুরসহ নানা আইটেমের ইফতার সামগ্রীর দাম গতবারের চেয়ে এবারও অনেক বাড়ানো হয়েছে।

ব্যবসায়ী বা দোকানিরা দাম বাড়ানোর অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের ভাষ্য, ইফতার সামগ্রী তৈরি করার জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে তাদেরও দাম বাড়াতে হয়। এতে বেশি পুঁজি খাটাতে হলেও লাভ কিন্তু বেশি হয় না মন্তব্য ব্যবসায়ী ও দোকানিদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।