বরিশাল: করোনা সংক্রমণ বাড়ার আগে অর্থাৎ দুই বছর আগে রোজাদাররা যেমন ইফতার বাজারের দিকে হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। বর্তমান বাজারে পরিস্থিতি তেমনটা নেই।
বিক্রেতারা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে প্রভাব পড়েছে বরিশালের ইফতার বাজারে। আর ক্রেতারাও এ কথার সঙ্গে একমত।
রোববার (৩ এপ্রিল) প্রথম রমজান ও সোমবার (৪ এপ্রিল) দ্বিতীয় রমজান বিকেলে বরিশাল নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিগত বছরগুলোর থেকে এবারে ইফতার সামগ্রী বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন কয়েকগুণ বেশি বিক্রেতা। খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো তাদের সামনের অংশে যেমন ইফতার সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছেন। তেমনি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও ফুটপাত ও রাস্তার মোড় দখল করে ইফতার সামগ্রী নিয়ে সাজিয়ে-গুছিয়ে বসেছেন। তবে হাতে গোনা কয়েকটি ইফতার বিক্রির দোকান ছাড়া ক্রেতাদের ভিড় ছিল না কোথাও। ক্রেতাশূন্য অনেক দোকানের ইফতার বিক্রেতাদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে।
নগরের দক্ষিণ আলেকান্দা এলাকার ইফতার সামগ্রী বিক্রেতা রাসেলের মতে, করোনা মহামারির সময়ও ইফতার ব্যবসায় এমনটা ক্রেতা সংকট দেখেননি তিনি, যেমনটা এবারে দেখছেন। যারা আসছেন তারা শুধুমাত্র জিলাপি ও বুরিন্দা কিনছেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন ও দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে ইফতার বাজারের পণ্যের দাম বেড়েছে, আর সেই হিসাব কষলে বাসায় ইফতার তৈরিতে খরচ কম হচ্ছে। যেগুলো বাসায় বানানো সম্ভব হচ্ছে না, সেগুলো কিনতে দোকানে আসছেন ক্রেতারা।
তবে নগরের কিছু বিক্রেতারা বলছেন, দিন যত সামনে যাবে ততই ইফতার বাজার চাঙ্গা হবে।
তাদের মতে, প্রতিবছরই রমজানের প্রথম কয়েকদিন বরিশালের ইফতার বাজারে ক্রেতা কম থাকে।
নগরের সদর রোডের গার্ডেন ইন রেস্তোরাঁর মালিক মনিরুজ্জামানের মতে, এবারে বাজারে সব পণ্যের দাম অনেক বেশি। বিশেষ করে সয়াবিন, বেগুন, গরুর মাংসসহ রমজানে বেশি চলে এমন পণ্যগুলোর দাম বেড়েছে। এ কারণে ইফতার সামগ্রীর দামও বেড়েছে। যে চপ গত বছর পাঁচ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবার সেটা বাধ্য হয়ে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বাজারদরের কারণে প্রস্তুতকৃত পণ্যের দাম বাড়ায় এবার ইফতার বাজারে ক্রেতাদের আনাগোনা নেই বলেই চলে।
আরিফুর রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, তেল ও কাঁচাপণ্যের দাম বাড়ায় ইফতার সামগ্রীর দামও বেড়েছে। সেই হিসাব কষলে বাড়িতে তৈরি ইফতার যেমন সাশ্রয়ী তেমনি স্বাস্থ্য সম্মত। তাই ইফতারের সবকিছু বাড়িতে তৈরি করা হচ্ছে। আর তিনি শুধুমাত্র বোরহানি কিনতে বাহিরে এসেছেন তিনি।
তার মতো আবুল বাশার নামে এক ক্রেতা শুধুমাত্র হালিম কিনতে দোকানে এসে বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তাই এবার পুরো রমজানের এক বারেই করে রেখেছেন তিনি। শুধুমাত্র মাঝেমধ্যে কাঁচাবাজারটা করছেন বলেও জানান তিনি।
একবারে ক্রয় করায় দামেও কিছুটা সাশ্রয়ী হচ্ছে উল্লেখ করে আবুল বাশার বলেন, ছোলা, পিঁয়াজু, ফুলকপি, আলুর চপ, বেগুনি সবই বাসায় তৈরি করছেন। আর বাচ্চারা বায়না ধরছে তাই হালিমটা কেনার জন্য বাহিরে এসেছি। পরে এটাও ঘরে তৈরি করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২২
এমএস/আরআইএস