রাজশাহী: রাজশাহীতে রমজানের প্রথম দিন থেকেই বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। কাঠ ফাটা গরমে রোজাদারদের প্রাণ এখন ওষ্ঠাগত।
দুগ্ধজাত এ পানীয় অত্যন্ত সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর। সচরাচর সারাবছরই রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন প্রান্তে ঘোল ও মাঠা পাওয়া যায়। তবে, রমজান উপলক্ষে এর চাহিদা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। দিনের ক্লান্তি দূর করতে ইফতারে তাই মাঠা বা ঘোলকে বেছে নিচ্ছেন তৃষ্ণার্ত রোজাদাররা।
রাজশাহী মহানগরীতে গরম বেশি পড়ায় ইফতারে এই দুগ্ধজাত সুস্বাদু পানীয় জনপ্রিয় হয়েছে এমনটি বলছিলেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। তাই প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে মহানগরীর সাহেববাজার ন্যাশনাল ব্যাংকের সামনে, জিরোপয়েন্টে ও কুমারপাড়া এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে ঘোল ও মাঠা।
কুমার পাড়ায় ঘোষ সম্প্রদায়ের মানুষ এই ঘোল তৈরির জন্য বিখ্যাত। তাদের আদিকাল থেকে মাঠার প্রচলন রয়েছে। মহানগরীর কুমারপাড়ার ঘোষপাড়ায় ঘোলের ব্যাপক পরিচিতি ও প্রচলন রয়েছে।
ইফতারে জন্য মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে ঘোল ও মাঠা কিনতে আসা কুমারপাড়া এলাকার জামিল হোসেন বলেন, রোজা থাকার পরে আমাদের শরীরে পানির স্বল্পতা দেখা দেয় ঘোল ও মাঠা পানে অনেকটাই ভালো লাগে। আর পরিবারের সবাই অন্য সময় না খেলেও এ রমজানে ঘোল ও মাঠা পান করেন।
মহানগরীর কুমারপাড়া ঘোষপাড়ার মৃত অনিল কুমার ঘোষের ছেলে গহুর ঘোষ জানান, তার বাবা মারা যাওয়ার পরে থেকেই তিনি এই ঘোল বিক্রি করেন। আগে তার বাবা মৃত অনিল কুমার ঘোষ ঘোলের ব্যবসা করতেন এবং তিনি শহরে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছিলেন। বাবার হাত ধরেই তিনি ঘোল বানানো শিখেছেন। বাবার মৃত্যুর পর থেকে তিনি ঘোলের ব্যবসা ধরে রেখেছেন। প্রায় ৩০ বছর থেকে একই স্থানে ঘোল বিক্রি করে আসছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, রমজান উপলক্ষে স্পেশাল ঘোল বিক্রি করা হয়। ঘোল ৬০ টাকা লিটার ও মাঠা ৭০/৮০ টাকা লিটার বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি গ্লাস ঘোল ১০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। এইতো গেল ঘোলের কথা। এই সম্প্রদায়ের মানুষ বিশেষ এক প্রক্রিয়ায় তৈরি করে মাঠাও। মাঠা তৈরিতে প্রয়োজন হয় দুধ, চিনি, লবণ, আমন্ড, পেস্তাবাদাম বাটা, পাতিলেবু। রাজশাহী মহানগরীতে রমজান মাস উপলক্ষে বিভিন্ন ফাস্টফুড, মিষ্টির দোকান, কনফেকশনারিতে এখন মাঠা পাওয়া যাচ্ছে। মাঠা তৈরি করতে দুধ ভালো করে ঘুটে ননি (মাখন) তুলে নিয়ে অন্যান্য উপকরণসমূহ প্রয়োজনমত দিয়ে বরফ কুচির সঙ্গে পরিবেশন করতে হয় ইফতারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘন্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২২
এসএস/এএটি