বরিশাল: ‘৫০ বছর পেরিয়ে গেছে মরিয়ম বেগমের। মানুষের কাছ থেকে পাওয়া সাহায্য নিয়ে চলে তার জীবন।
অপরদিকে সদর উপজেলার কড়াপুর থেকে বরিশাল নগরের বটতলা লেগুনাস্ট্যান্ডে ঠিক ইফতারির আগ মুহূর্তে এসে পৌঁছেছেন আব্দুল লতিফ মিয়া। হাতে অল্প সময় বাকি আছে ইফতারের। কিন্তু বরিশাল থেকে কাজ শেষে ফিরে যাওয়ার ভাড়া ছাড়া এই নিম্নআয়ের মানুষটির কাছে কোনো টাকা নেই। বিনামূল্যে ইফতারের গাড়ির কাছে গিয়ে নিজের সমস্যার কথা বলতেই তিনিও পেয়ে গেলেন পানিসহ ইফতারসামগ্রী। যা হাতে নিয়ে বেশ খুশি মনে পাশের ফুটপাতে আজানের জন্য অপেক্ষায় বসে পড়লেন তিনি।
আয়োজন বড় না হলেও দিনে ১০০ প্যাকেট ইফতার সামগ্রী নিয়ে বরিশাল নগরে ঘুরে বেড়ানো ‘সবার জন্য ইফতার’র ব্যানার সংবলিত গাড়িটি এখন বেশ পরিচিত নিম্নআয়ের দরিদ্র মানুষদের কাছে। মাত্র ৭৫ জন ব্যবসায়ীকে নিয়ে গঠিত বরিশাল স্যানিটারি মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে বিনামূল্যে ‘সবার জন্য ইফতার’র এমন আয়োজন।
আয়োজনকারী সংগঠনের সহ-সভাপতি মো. আমির হোসেন মিঠু বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছর ইফতারে আমাদের অনেক দাওয়াত থাকে। আবার বাসায়ও আয়োজন থাকে। আবার সময়ের অভাবে সব দাওয়াতে যাওয়াও হয় না। আর তাই এবারে আমরা রোজার শুরুতেই চিন্তা করেছি, সেই ইফতার আয়োজনের টাকা দিয়ে আমরা অসহায়-গরিব মানুষ, যারা ইফতার সামগ্রী কিনে খেতে পারেন না, তাদের মধ্যে রান্না করা ইফতার সামগ্রী বিতরণ করবো।
তিনি বলেন, সেই অনুযায়ী আমরা দিনে ১০০ জন অসহায় ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছি। এতে থাকছে খিচুরি, মুরগির মাংস ও পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ইফতার সামগ্রী প্রতিদিন নগরের বিভিন্ন এলাকায় একটি অটোরিকশায় করে নিয়ে গিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে, ইফতার সামগ্রী বিতরণ শুরুর স্থানটি প্রতিদিন বিকেল ৫টার দিকে নির্ধারণ করা হয়। এরপর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে সেখানে আমাদের গাড়ি পৌঁছে আর ৬টার মধ্যে বিতরণ শেষ করে আমরা যে যার বাসায় চলে আসি। এতে করে যারা অর্থাভাবে ইফতার কিনতে পারছেন না তারা কিছুটা হলেও উপকৃত হচ্ছেন।
স্যানিটারি ব্যবসায়ী ও সংগঠনের সদস্য মো. আব্দুল আলিম বলেন, আমরা বাসটার্মিনালেও গিয়ে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেছি। টাকা না থাকায় সেখানে অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষও আমাদের ইফতার নিয়েছেন। আর রাস্তায় চলমান অসহায় মানুষরা তো ইফতার সামগ্রী পেয়ে বেশ খুশি হচ্ছেন। এটাই আমাদের ভালোলাগা। আশা করি, রমজান মাসজুড়ে আমাদের এ উদ্যোগ চলবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২২
এমএস/এএটি