মজুতদার ব্যবসায়ীরা রমজান মাসেও মুনাফাখোরির কারসাজি বন্ধ করে না। এতে মানুষের কষ্ট বেড়ে যায়।
এসব মুনাফাখোর মজুতদার সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি মুসলমানের খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য তা আটক রাখে সে গোনাহগার। ’-মুসনাদে আহমদ
হজরত ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি মুসলমানদের খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করে রাখে, আল্লাহ তার ওপর দুরারোগ্য ব্যাধি ও অভাব চাপিয়ে দেন। ’ -ইবনে মাজাহ
আরেক শ্রেণির ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা খাদ্যের মধ্যে ভেজাল মিশিয়ে কিংবা ওজনে কম দেয়ার মাধ্যমে মানুষকে ঠকানোর চেষ্টায় লিপ্ত থাকেন। এ প্রসঙ্গে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘একবার রাসূল (সা.) একটি বাজারের খাদ্যদ্রব্যের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি তার হাত মোবারক এ খাদ্যের ভেতর ঢুকিয়ে দিলেন। ফলে হাতে কিছুটা আর্দ্রতা অনুভব করলেন। তিনি খাদ্য বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করলেন, এই আর্দ্রতা কীভাবে এলো বিক্রেতা বলল, এই খাদ্যের ওপর বৃষ্টির পানি পড়েছিল। রাসূল (সা.) বললেন, তুমি ভেজা খাদ্যবস্তুকে ওপরে রাখলে না কেন যাতে ক্রেতারা এটা দেখতে পায়। জেনে রাখ! যে ব্যক্তি মানুষকে ধোঁকা দিল, সে আমার উম্মত নয়। ’ -মুসলিম শরীফ
হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে, ‘ব্যবসায়ীরা কেয়ামতের দিন পাপী, ফাসেকদের সঙ্গে উঠবে। কিন্তু যারা নেককার ও সত্যবাদী ব্যবসায়ী তারা ছাড়া। নিশ্চয় নেককার ও সত্যবাদী ব্যবসায়ীরা নবী-রাসূল, সিদ্দিক ও শহীদদের সঙ্গে উঠবে। ’ -তিরমিজি শরিফ
বস্তুত খাদ্যে ভেজাল মিশ্রিত করা ও মজুত করার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ওপর জুলুম করা হচ্ছে। আর এসব জালেম সম্পর্কে কোরআনে কারিমে কঠিন আজাবের কথা বলা হয়েছে। মনে রাখতে হবে, আল্লাহতায়ালা তার সঙ্গে সম্পর্কিত শিরক ছাড়া সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন। কিন্তু যেসব পাপ তার কোনো বান্দার স্বার্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, আল্লাহপাক তা ক্ষমা করবেন না। আর কোনো বান্দার জাহান্নামে যাওয়ার জন্য এ ধরনের পাপই যথেষ্ট।
আমাদের ব্যবসায়ী ভাইদের স্মরণ রাখা উচিত, দুনিয়ার জীবনে ছলচাতুরি করার মাধ্যমে পার পেয়ে গেলেও পরাক্রমশালী আল্লাহর কাছ থেকে পার পাওয়া যাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
এসআইএস