কক্সবাজার: বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে জমে উঠেছে সাত দিনব্যাপী পর্যটনমেলা ও বিচ কার্নিভাল। বর্ণিল নানা আয়োজনের পাশাপাশি মেলা উপলক্ষে বসেছে দুই শতাধিক স্টল।
জেলা প্রশাসন আয়োজিত সাত দিনব্যাপী এ বিচ কার্নিভালের প্রধান স্পন্সর দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত।
রোববার (১ অক্টোবর) মেলার পঞ্চম দিন বিকেলে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণিল ঘুড়ি উৎসব। রং-বেরঙের শতাধিক ঘুড়িতে রঙিন হয়ে ওঠে সৈকতের আকাশ।
এ সময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহম্মদ শাহীন ইমরান, পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজুল হকসহ অতিথিরা উৎসবে শামিল হন। শুধু স্থানীয়রা নন, উৎসবের রং ছড়িয়েছে পর্যটকদের মাঝেও।
কুমিল্লা থেকে কক্সবাজারের সৈকতে আসা পর্যটক মফিজুর রহমান বলেন, গতকাল চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেয়ের আবদারের কারণে যাওয়া হয়নি। তবে ঘুড়ি উৎসব বেশ উপভোগ করেছে মেয়ে। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেছি, সবমিলে দিনটি অসাধারণ কেটেছে।
নারায়ণগঞ্জ থেকে সপরিবারে কক্সবাজারের সৈকতে বেড়াতে আসেন সুমন রহমান। তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে সোমা রহমান বলেন, শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে কুষ্টিয়া লালন অ্যাকাডেমির গান উপভোগ করেছি। আজ সৈকতে ঘুড়ি উৎসব খুব ভালো লেগেছে। বাঘ ঘুড়িটি আমার বেশ পছন্দ হয়েছে। তবে ঘুড়ির সংখ্যা আরও বেশি হলে ভালো লাগতো।
ঘুড়ি উৎসব নিয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ঘুড়ি উৎসবের নির্ধারিত দিন ছিল শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর)। কিন্তু ওইদিন বাতাস কম থাকায় ঘুড়ি উৎসব সফলভাবে সম্পন্ন করা যায়নি। যে কারণে আজ আবারও ঘুড়ি উৎসব করা হয়েছে।
উৎসবটি বেশ উপভোগ করেছেন পর্যটকরা জানিয়ে ডিসি মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, আমরা চাই উৎসবের নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প বিশ্বব্যাপী প্রসার লাভ করবে।
‘পর্যটনে পরিবেশ বান্ধব বিনিয়োগ’ প্রতিপাদ্যে বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সৈকতের লাবনী পয়েন্টে শুরু হয় সপ্তাহব্যাপী পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভাল।
পর্যটন মেলায় সৈকতে সার্ফিং, বিচ বাইক ও জেট স্কি প্রদর্শনী, ঘুড়ি উৎসব, কনসার্টসহ মনোমুগ্ধকর নানা আয়োজনে জমে উঠেছে।
শুধু বিভিন্ন ইভেন্টই নয়, মেলায় যে দুই শতাধিক স্টল রয়েছে। সেখানে অংশ নিয়েছে নারী উদ্যোক্তার প্রায় ৫০টি স্টল। যা ইতিবাচকভাবে দেখছেন অনেকে। অন্যদিকে তাদের নিজস্ব পণ্যের পাশাপাশি ট্রেডিশনাল নানান খাবার পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে বলে জানান নারী উদ্যোক্তারা।
ফ্যাশন অ্যান্ড ট্রেডিং এর স্বত্বাধিকারী শাহানা মজুমদার চুমকি বলেন, মেলায় সাড়া বেশ ভালো। আমি মূলত আমার নিজস্ব গার্মেন্টসের পোশাক নিয়ে মেলায় অংশ নিয়েছি।
নারী উদ্যোক্তা বন্ধুতার স্বত্বাধিকারী ফাতেমা ইসলাম লাকী বলেন, আমরা নারী উদ্যোক্তদের একটা প্ল্যাটফর্ম চাই। যার মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যেতে পারবো। মেলায় অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প এগিয়ে যাবে এমনটাই আশা করি।
শুধু কক্সবাজারে নয়, জেলার বাইরে থেকেও মেলায় অংশ নিয়েছে অনেক নারী উদ্যোক্তা।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের ব্যাপক অংশগ্রহণ অবশ্যই মেলার জন্য ইতিবাচক দিক। মেলায় অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে তাদের যেমন প্রচার ও প্রসার ঘটবে তেমনি পর্যটনের উন্নয়নে তাদের অবদান থাকবে। এভাবেই সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে এগিয়ে যাবে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প।
জেলা প্রশাসন আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী এ মেলায় সৈকতের উন্মুক্ত মঞ্চে রয়েছে সার্কাস, আতশবাজি, রোড শো, ম্যাজিক শো, ফায়ার স্পিন, বিচ ভলিবলসহ বর্ণিল নানা আয়োজন।
আরও পড়ুন>>
>>> ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পর্যটনের বড় ভূমিকা রয়েছে’
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২৩
এসবি/আরআইএস