ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

অপার পর্যটন সম্ভাবনার লক্ষ্মীপুরের মেঘনা উপকূল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৬
অপার পর্যটন সম্ভাবনার লক্ষ্মীপুরের মেঘনা উপকূল ছবি: বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: মেঘনাপাড়ের জেলা লক্ষ্মীপুর। মেঘনাবিধৌত হলেও রূপ-রস-সৌন্দর্যে অনন্য এ উপকূলীয় জেলা।

নদী আর প্রকৃতি লক্ষ্মীপুরের উপকূলকে করে তুলেছে অপরূপা। ফলে দিনকে-দিন এ জেলার পুরো উপকূল হয়ে উঠছে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্র। এতে করে এ উপকূল ঘিরে তৈরি হয়েছে ‍পর্যটনের অপার সম্ভাবনা।

মেঘনাপাড়ের এ জেলায় রয়েছে অনেক জেগে ওঠা চর, ঢেউ আর বেলাভূমির মিতালী। রয়েছে ইলিশের দীর্ঘতম অভয়াশ্রম। মেঘনার বুকে চিড়ে পণ্যবাহী সারি-সারি লাইটারেজ জাহাজ, মাছ শিকারি ছোট ও পালতোলা নৌকার দোলা আর নারকেল-সুপারির সাজানো বাগান।

নদীর চরে চড়ছে গরু-মহিষ, ভেড়া। তাদের সঙ্গে রাখালের বন্ধুত্ব। সয়াবিন ও ধানসহ ফসলের বিতৃর্ণ মাঠ।

লক্ষ্মীপুরে মেঘনা ছাড়াও ডাকাতিয়া ও রহমতখালী নদ এবং ভূলুয়া নদীর উপকূলজুড়ে এ সৌন্দর্যের লীলাভূমি তাই অনায়াসেই হয়ে উঠতে পারে পর্যটন স্পট।

ফলে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার এসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে আশাবাদী স্থানীয়রা। তাদের মত, একটু ঘঁষে-মেজে ও সরকারি উদ্যোগেই সম্ভব এ উপকূলকে দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা।

লক্ষ্মীপুর উপকূলের অন্যতম পর্যটন স্পট হতে পারে চর আলেকজান্ডার। মেঘনার চর আলেকজান্ডারে জোয়ার-ভাটার খেলা চলে নিত্য। মেঘনার উঁচু ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জেলেরা শিকার করেন রুপালী ইলিশ।

রামগতি উপজেলা সদরের অব্যাহত ভাঙনে পৌর শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে মেঘনা নদী। উপজেলা পরিষদ থেকে  মাত্র একশ গজ দূরত্বে ভাঙনরোধে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। সারাদিন, বিশেষ করে বিকেলে ওই বাঁধে ঢল নামে সৌন্দর্যপিপাসু মানুষের।

তেগাছিয়া বাজার স্লুইস গেট এলাকারও রয়েছে অপার পর্যটন সম্ভাবনা। মেঘনা তীরের রামগতির চরগাজী ইউনিয়নের তেগাছিয়া বাজার স্লুইস গেট থেকে উপভোগ করা যায় সূযোর্দয়-সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য। এখানে রয়েছে ৩০ হাজার ঝাউগাছের গভীর বন। ফলে ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে এটি অন্যতম বিনোদন স্পট। প্রায় সারাবছরই এখানে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বনভোজন ছাড়াও সাধারণ মানুষের আনাগোনো থাকে।

মতিরহাট জেলার আরেক দর্শনীয় স্থান। এটি দেশের সর্ববৃহৎ মাছ ঘাটগুলোর অন্যতম। এখানে রয়েছে নদীর বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সমারোহ। প্রতিদিন অন্তত কোটি টাকার ইলিশ কেনা-বেচা হয় এ ঘাটে।

এখানকার চরে রয়েছে শত শত মহিষের পাল। পাওয়া যায় মহিষের দুধের ঐতিহ্যবাহী দই। মতিরহাট রক্ষায় ব্লক বাঁধ দেওয়ায় পলি জমে বেলাভূমির সৃষ্টি হয়েছে। পাশেই জেগেছে নতুন চর। ফলে ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে ওই চরে ভিড় জমায় ভ্রমণপ্রেমীরা। এমনকি, প্রায় বিলুপ্ত মহাজনী পঙ্খীরাজ নৌকার দেখা মেলে এখানকার ঘাটে।

কিন্তু যথাযথ উদ্যোগ ও পরিকল্পনার অভাবে এ উপকূলের সম্ভাবনাময় পর্যটনের বিকাশ ঘটছে না, এমনটাই মনে করেন স্থানীয়রা।

সরকারিভাবে লক্ষ্মীপুরের উপকূলে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটলে তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থানের। সেইসঙ্গে বেকারত্ব দূরীকরণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নেও এগিয়ে যাবে এ অঞ্চল; এমনটাই মনে করে সচেতন মহল।

যেভাবে যাবেন
লক্ষ্মীপুর উপকূলীয় এলাকায় যেতে হলে রাজধানী ঢাকা সায়দাবাদ বা অন্যান্য জেলা শহর থেকে আসতে হবে  রামগতির আলেকজান্ডার শহরে। সেখানে বাসট্যান্ড নেমে রিকশায় করে চর আলেকজান্ডার।

তেগাছিয়া বাজার স্লুইস গেট ও ঝাউবনে যেতে রামগতি বাজার থেকে রিকশায় রামগতি-মোহাম্মদপুর আঞ্চলিক সড়ক হয়ে এক কিলোমিটারের মতো এগুতে হবে।

আর মতিরহাট যেতে হলে প্রথমে কমলনগর উপজেলা হয়ে  তোরাবঞ্জ। এরপর সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে মতিরহাট।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৬
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।