ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

গ্রীষ্মের দার্জিলিং-৭

শুটিংয়ের চা বাগান, আকাশছোঁয়া পাইনের লামাহাটা

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৬
শুটিংয়ের চা বাগান, আকাশছোঁয়া পাইনের লামাহাটা ছবি: শামীম হোসেন ও হুসাইন আজাদ

[পূর্ব প্রকাশের পর]

দার্জিলিং ঘুরে: দার্জিলিং পৌঁছাতে আরও ঘণ্টাদুয়েক। পাহাড় থেকে দু’ হাজার ফুটে নেমে আবার শুরু হলো ওঠা।

এবার উঠতে হবে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার ফুট। খোলা পাহাড়ি পরিবেশে দার্জিলিংয়ের প্রবেশমুখের এক চা বাগানে থামলো গাড়ি। ভাঁজে ভাঁজে পাহাড় এখানে। এক জায়গার পাথরখণ্ডে দাঁড়িয়ে দেখা যায় সাত পাহাড়ের চূড়া।

কয়েকটি সিনেমার শুটিংও চলছিলো তখন। শুনলাম সবই নেপালি সিনেমা। বাগানটিতে শেড-ট্রি কম। চায়ের পাতাগুলোও কালচে। বাগান লাগোয়া একটি দোকানে পেটপূজা সেরে নিলাম সবাই মিলে। দার্জিলিং ঢোকার মুখেই প্রাণ জুড়ালো সবার।

পাহাড়ের চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে একটু এগিয়ে আবার থামলাম লামাহাটা ইকো পার্কে। পাহাড়ের গা বেয়ে অদ্ভুত সুন্দর এক পার্ক। ভাঁজে ভাঁজে উঠে গেছে নিচ থেকে ওপরে। অসংখ্য পাইন দাঁড়িয়ে আকাশমুখী হয়ে। প্রাকৃতিক বন ভাবতে সত্যি কষ্ট হয়। ইকো ট্যুরিজমকে প্রমোট করছে এ পার্কটি।

বাহারি ফুলের অভাব নেই এখানে। তবে পরিবার থেকে যুগলদের দেখা মিললো বেশি। পার্কের আরেকটি আকর্ষণীয় জায়গা পাহাড়টির ওপরে। সেখানে নাকি আছে একটি লেক। লেকে নাকি আবার চিতা পানি খেতে আসে! জানালেন পার্কটির নিরাপত্তায় নিযুক্ত নেপালি নারীটি। তবে সময়ের অভাবে সে পর্যন্ত যাওয়া হয়ে উঠলো না। পর্যটককে কীভাবে আকর্ষণীয় করতে হবে সত্যি এরা জানে।

পুরো পার্কটি আবার সুন্দর ডিজাইন করা। সবুজ গাছ ছেঁটে বানানো সে নকশা। রয়েছে বসে সময় কাটানো আড্ডা দেওয়ার যথেষ্ট জায়গা। ফুলের বাগানটি সত্যি চোখ জুড়ানো। সামান্য মাটি আর গাছের পাতা, কাঠের গুঁড়ার মধ্যেই জন্মে ফুল। এখানে চকলেট বেশ সস্তা। খাওয়া হলো কিছু। সঙ্গে চা।
 
লামাহাটা থেকে দার্জিলিংয়ের রাস্তাটির খাঁড়া ঢালটি সত্যি ভয়ংকর। কিছু জায়গায় দেখা গেলো দেড় দু’ফুট উঁচু ঢালাই দেয়াল মতো তোলা হয়েছে। এই রাস্তায় সাইক্লিং করতে দেখে আমাদের মতো সমতলের মানুষের অবাক হওয়ারই কথা।

যাইহোক সর্পিল রাস্তা দিয়ে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে দেখা মিললো বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলস্টেশন ঘুম। উচ্চতা ৭ হাজার ৪শ ৭ ফুট। ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ঘোষিত বিখ্যাত টয়ট্রেন চলে এ স্টেশন থেকেই। তবে নামা হলো না। ঘুরে দেখা হবে পরে।

বুঝলাম এসে গেছি দার্জিলিং। অবশ্য দো‍কান থেকে শুরু করে রাস্তা-ঘাট সবখানেই গোর্খাল্যান্ড লেখাটিই চোখে পড়লো বেশি। পাহাড়ের কোলে কয়েক স্তরে তাকে তাকে যেন রাস্তা।   শহরটিও তেমন। তারা বলে নিচ থেকে ওপর বা ওপর থেকে নিচে। বাড়িঘরগুলোও ঝুলে আছে খেলনার মতো রঙিনরূপে।

শহরে ঢোকার মুখে একটি বাষ্প ইঞ্জিনের টয়ট্রেন চলে গেলো পাহাড়ের গা ঘেঁষে নিচ থেকে উপরে। শহরের মানুষগুলোর চেহারায় স্পষ্ট নেপালি-ভুটিয়া ছাপ। সবাই কর্মব্যস্ত।

চলবে....

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৬
এএ

** পাহাড় থেকে পাহাড় দেখার দেলো-কালিম্পং-দুরপিনদাড়া
**পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরতম গ্রাম রিশপে
** মেঘে ভিজে লোলেগাঁও ক্যানোপিতে
** গরুবাথানের পাথুরে স্বচ্ছ পাহাড়ি ধারায়
** ফুলবাড়ি হয়ে দার্জিলিং, হ্যাপা কম নয় ২৫ রুপির ঘোষণায়
** ৭ হাজার ফুট উচ্চতার লাভা শহরে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।