ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

লাইসিয়াম বমের হাতে একদিনে শীতের চাদর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৬
লাইসিয়াম বমের হাতে একদিনে শীতের চাদর ছবি: আসিফ আজিজ-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বগালেক (বান্দরবান) ঘুরে: একাগ্রচিত্ত, হাতের সূক্ষ্ম কারুকাজের সঙ্গে দৃঢ় মনোভাবে তৈরি হচ্ছে এক একটি চাদর। সুনিপুণ নকশায় ফুটিয়ে তোলা এসব চাদর মূলত পর্যটকদের জন্যই বুনছেন লাইসিয়াম বম।

উলের তৈরি এসব চাদর একদিকে যেমন আরামদায়ক অন্যদিকে শীতে বেশ উষ্ণতা দেয়। আর পর্যটকদের হাত ধরে এসব চাদর ছড়িয়ে দিচ্ছে বমদের প্রতিভা। প্রতিটি চাদরে জড়িয়ে আছে তাদের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার গল্প।

সকালে চাদর বোনায় ব্যস্ত লাইসিয়াম। জানতে চাইলে বলেন, দিনের সব কাজের ফাঁকে ফাঁকে এ চাদর বুনেন। প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিনঘণ্টা সময় দেন একটি চাদরে। তবে অন্যকাজ না করলে একদিনেই একটি চাদরের কাজ নামানো যায়। নকশার ওপর নির্ভর করে ৪শ’, সাড়ে ৪শ’ ও ৫শ’ টাকায় বিক্রি হয় এক একটি চাদর। মূল কাঁচামাল সুতা কেনা হয় রুমা বাজার থেকে।

চিন্তা শক্তি ও কল্পনা থেকে নিজেই এসব চাদরের নকশা তৈরি করেন। এরপর বিভিন্ন রঙের উলের সুতায় তার পরিপূর্ণতা দেওয়া হয়। বুনন করা প্রতিটি চাদরের নকশা একেকটি থেকে আলাদা।

প্রতি মাসে কেমন চাদর বিক্রি হয়, উত্তরে লাইসিয়াম বম জানান, মৌসুমে ১০-১৫টি চাদর বিক্রি হয়। তবে এখন দিনে গড়ে বিক্রি হয় ৩-৪টি। নভেম্বর থেকেই বিক্রি বাড়বে বলে আশা তার। খরচ ও মুনাফার বিষয়ে বলেন, চাদর ভেদে দু’শ’ বা তার চেয়ে বেশি খরচ হয়। তবে অফ সিজনে একটু কম দামেই বিক্রি করা হয়। পর্যটক বাড়লে বিক্রিও বাড়ে, সঙ্গে মুনাফাও।

বগালেক পাড়ার প্রায় প্রতিটি ঘরের নারীরা কম-বেশি এ ধরনের চাদর তৈরির সঙ্গে যুক্ত। এসব চাদরের মাধ্যমে একদিকে যেমন তারা জীবনমানের উন্নতি করছেন, অন্যদিকে পর্যটকদের হাতে তুলে দিচ্ছেন রুচিশীল পণ্য। যার মাধ্যমে বিকশিত হচ্ছে পর্যটক আকর্ষণের স্থানগুলো।

বান্দরবান থেকে বাসে ওয়াই জংশন হয়ে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টায় রুমা বাজারে পৌঁছানো যায়। রুমা বাজার থেকে পছন্দ মতো গাইড নিতে হবে। সেখানে কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে, যা গাইডই করে দেবেন। এরপর চান্দের গাড়িতে ১১ মাইল বাজারে পৌঁছানোর পর সেখান থেকে ৫ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে কমলাবাজার। সেখান থেকে কাঙ্ক্ষিত বগালেকে উঠতে হবে, যার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২শ’ ফুট।

আরও পড়ুন-

** বগালেকে রাতে অ্যাডভেঞ্চারাস ট্রেকিং
** শিক্ষক থেকে পর্যটনের অগ্রদূত একজন সিয়াম দিদি
** পাহাড়িদের পছন্দ ‘হাঙর ‍শুটকি’
** ঠোঁট লাল করা পাহাড়ি ‘ছোট পান’
** ব্রিজের সঙ্গে পর্যটন ডুবেছে কাপ্তাই লেকে
** ‘রিছাংবান্ধব’ নন পর্যটকরা!
** রিছাং রোমাঞ্চ!
** মেঘের ভেলায় ভেসে মেঘ-পাহাড়ের দেশে
** ঝালেই পাহাড়িদের পছন্দ ‘সুমরিচ’

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৬
জেডএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।