ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

চা কন্যার দেশে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৭
চা কন্যার দেশে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় চা কন্যার দেশে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়

মৌলভীবাজার: ঈদের আনন্দে প্রকৃতির কাছাকাছি এসে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। তাইতো যানজট আর  কোলাহল মুক্ত পরিবেশে ঈদের আনন্দকে উপভোগ করতে পর্যটনখ্যাত জেলা মৌলভীবাজারের দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভিড় করেছেন প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরা। 

প্রতিটি পর্যটন স্পট হাজারো পর্যটকদের ভিড়ে উৎসবমূখর। মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, লাউয়াছড়া, মাধবপুর লেক, গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, বধ্যভূমি৭১, সীতেশ দেবের চিড়িয়াখানাতে ভিড় করছেন পর্যটকরা।

মৌলভীবাজার জেলাকে বলা হয়ে থাকে প্রকৃতির লীলাভূমি। একদিকে পাহাড় আর অন্যদিকে চা বাগান। একদিকে ঝর্ণাধারা অন্যদিকে বিস্তৃর্ণ হাওর। ছোট বড় মিলিয়ে মৌলভীবাজারে রয়েছে শতাধিক পর্যটন স্পট। তাদের মধ্যে অন্যতম চা কন্যার দেশ খ্যাত শ্রীমঙ্গল, বড়লেখা, কমলগঞ্জসহ অন্যান্য উপজেলার  নয়নাভিরাম চা বাগান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, দুর্গম পাহাড়ের পাদদেশে প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে উঠা হামহাম ঝর্না, দৃষ্টিনন্দন মাধবপুর লেক, বধ্যভূমি একাত্তর, সীতেশ দেবের চিড়িয়াখানাসহ অর্ধশতাধিক দর্শনীয় স্থান।  

সবগুলো পর্যটন স্পটে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। জেলার সব ক’টি হোটেল রিসোর্টে কোনো স্থান নেই। আগে থেকেই বুকিং হয়ে গেছে। মাধবকুন্ড জলপ্রপাত এলাকা পর্যটকদের জন্য খোলে দেওয়ায় সেখানসহ লাউয়াছড়া, হামহাম, মাধবপুর লেক, বধ্যভূমি ৭১ সহ অন্য পর্যটন এলাকায় উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। লাউয়া ছড়ায় গাড়ি রাখারও জায়গা নেই।

লাউয়াছড়া ছাড়াও জেলার সিনেমা হলগুলো লোকে লোকারণ্য। সিনেমা হলগুলোতে উঠতি বয়সের যুবকদেরই বেশি দেখা গেছে।
চা কন্যার দেশে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়দেশের ১৬৩টি চা বাগানের মধ্যে শুধু শ্রীমঙ্গলে রয়েছে অর্ধ শতাধিক চা বাগান। এছাড়াও জেলার অন্যান্য উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে রয়েছে শতাধিক চা বাগান। সারি সারি চা বাগানে শ্রমিকদের নিপুন হাতে পাতা তোলার দৃশ্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। জেলার অন্যতম পর্যটন স্পট প্রাকৃতিক জলপ্রপাত মাধবকুন্ডকে ঘিরে পর্যটকদের আগ্রহের কমতি নেই।

মাধবকুন্ড জলপ্রপাত দেখতে আসা পিংকু পাল বাংলানিউজকে বলেন,  মাধবকুন্ড জলপ্রপাত দেখতে এসে প্রাণ জুড়িয়ে গেছে। এখানকার বিশাল জলরাশি দেখে খুব ভালো লাগছে।  

মাধবপুর লেকে বেড়াতে আসা রহিমা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, লেকটা খুবই সুন্দর। কিন্তু লেকের নীল পদ্মগুলো অনেকেই ছিড়ে নিয়ে যাচ্ছেন এটা দুঃখজনক।

এবিষয়ে এখানকার প্রহরী শ্যাম নারায়ণ বাংলানিউজকে বলেন,  তারা কি করবেন বাধা দিলে লোকজন উল্টো ধমক দেয়, ম্যানেজমেন্ট দেখলেও কিছু বলেনা।
চা কন্যার দেশে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করে এশিয়ার অন্যতম রেইনফরেষ্ট লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। উদ্যানের প্রকৃতির নিভিড় ছায়ায় বিলুপ্ত বন্যপ্রাণী উল্লুক, হনুমান, লজ্জাবতী বানর, চশমা পড়া হনুমান, মায়া হরিণসহ বিভিন্ন প্রজাজির প্রাণীর দেখা পেতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ঈদে পর্যটকের সমাগম ঘটে। তবে পর্যটকদের অতিরিক্ত ভিড় ও চিৎকারে কিছুই দেখা মিলছেনা।

পর্যটক সজল দাস বাংলানিউজকে অভিযোগ করে বলেন,  এখানে এন্ট্রি ফি ২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে, কিন্তু এখানে দেখার কিছুই নেই এটা কমানো উচিত।

এছাড়া নতুন একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে বধ্যভূমি একাত্তর। এখানে প্রচুর লোকের সমাগম ঘটেছে। চা বাগান বেস্টিত থাকাতে লোকজন এখানে প্রচুর ভিড় করছেন।

এছাড়াও শ্রীমঙ্গল সীতেশ দেবের চিড়িয়াখানা দেখতে শতশত লোকের সমাগম ঘটছে। চিড়িয়াখানার সার্বিক দায়িত্বে থাকা সজল দাস বাংলানিউজকে বলেন,  ঈদে প্রচুর লোক সমাগম ঘটে। মানুষের হউহুল্লোড় শুনে পশুরা অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে।
চা কন্যার দেশে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফের পাবলিক রিলেশন অফিসার বশির আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের দুই সপ্তাহ আগেই তাদের সবগুলো রোম বুকিং হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বর্ডার ছাড়া লোকজন অরণ্য বিলাস রেস্টুরেন্টে ডুকতে দেয়া হয়না, তারপরও বিশেষ ক্ষেত্রে লোকজন ঘুরে দেখছেন।

চিড়িয়াখানা দেখতে আসা আব্দুল বাছিত চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, পরিবার নিয়ে চিড়িয়াখানা দেখতে এসেছি খুবই ভাল লাগছে।

লাউয়াছড়া বন বিট কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন,  ঈদের দ্বিতীয় ও ৩য় দিনে লাউয়াছড়ায় প্রচুর লোক সমাগম ঘটেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।  

পুলিশ পরিদর্শক মো. মইনউদ্দিন মৌলভীবাজার সাবজোন বাংলানিউজকে বলেন, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, ঘটবেও না।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৭
বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।