ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

পর্যটকে ম‍ুখরিত সাজেক

অপু দত্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৮
পর্যটকে ম‍ুখরিত সাজেক দীর্ঘ ছুটিতে পর্যটকদের গন্তব্য এখন সাজেকে। ছবি: বাংলানিউজ

খাগড়াছড়ি: দু’দিন ধরেই খাগড়াছড়ির শাপলা চত্বরসহ আশপাশের এলাকায় লোকে-লোকারণ্য। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসগুলো থামছে সেখানে। বাস থেকে দলে দলে নামছেন পর্যটক। 

একটু জিরিয়ে ফের রওনা হচ্ছেন পাহাড়-সমতলে সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্পটে। তবে বেশির ভাগেরই গন্তব্য দেশের বর্তমান সময়ের ক্রেজ স্পট সাজেকে।

 
 
মেঘ-পাহাড়ের খেলায় রহস্যময় ‘সাজেকে’ অন্যদিনের তুলনায় সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার পর্যটকদের উপস্থিতি একটু বেশিই থাকে। তবে এবার সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি মিলিয়ে দীর্ঘ ছুটি পাওয়ায় সেখানে এখন পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়।  

এ ভ্রমণকে কেন্দ্র করে এক মাস আগে থেকেই খাগড়াছড়ির হোটেল-রিসোর্টগুলোতে বুকিং দিয়ে রেখেছেন পর্যটকরা।  
সাজেক; ভূপ্রকৃতিগত দিকে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়িতে এর অবস্থান। বাংলাদেশের অন্যতম বড় একটি ইউনিয়নও বটে। ৬০৭ বর্গমাইলের সাজেকের অবস্থান রাঙ্গামাটি জেলায় হলেও যেতে হয় খাগড়াছড়ি হয়ে।  

জেলা শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার পিচঢালা আঁকা-বাঁকা পথ দিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়বে ছোট বড় হাজারো পাহাড়ে বেষ্টিত প্রকৃতির নিজস্ব সৌন্দর্য।
 
এমনিতে বাংলাদেশের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে পর্যটকদের আকর্ষণ একটু বেশি। আর সেই আকর্ষণ আরো বাড়িয়ে তুলেছে সাজেক উপত্যকা।  

দীর্ঘ ছুটিতে পর্যটকদের গন্তব্য এখন সাজেকে।  ছবি: বাংলানিউজসাজেকের রুইলুই পাড়ার পূর্বদিকে তাকালে চোখে পড়বে মিজোরামের লুসাই পাহাড়। রুইলুই পাড়ার কিছু দূরে পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে আরেকটি গ্রাম। নাম কংলাক পাড়া।
 
সাজেকের ঈর্ষনীয় রূপ যে কাউকে মুগ্ধ করবে। কোথাও নীল আকাশ আবার কোথাও কালো মেঘের ভেলা। কোথাও ঝুম বৃষ্টি আবার কোথাও প্রখর রোদ। বৃষ্টি শেষের দৃশ্য আরো মোহনীয়।  
 
পাহাড় ভেদ করে মেঘের পারাপার দেখে মনে হবে শীতের ঘন কুয়াশা ছেয়ে গেছে চারপাশ। এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সখ্য হবে মেঘের সঙ্গে।  

চাঁদনী রাতের রূপ আরো দোলা দেয় মনে। ভূ-পৃষ্ট থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০ ফুট উঁচু পাহাড় থেকে চাঁদনী রাত দেখার পর পর্যটকের সফর ষোলআনা পূর্ণ হবে। দীর্ঘ ছুটিতে বন্ধুদের নিয়ে খাগড়াছড়ি এসেছেন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। বাংলানিউজকে তিনি জানান, সাত বন্ধু মিলে ছুটিটা উপভোগ করতে চলে এসেছেন।  

‘অনেক দিন ধরেই আসবো আসবো করে আসা হচ্ছিল না। সাকেজের সৌন্দর্য ছবিতে দেখেছি। এবার স্বচক্ষে দেখতে চলে এলাম। ’
 
সাজেকের নিরিবিলি রিসোর্টের মালিক পূর্ণ বরণ চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, পুরো রিসোর্ট এক মাস আগ থেকেই বুকিং। নতুন করে যেসব পর্যটক আসছেন তাদের রুম দিতে পারছি না।  

অনেকদিন পর সাজেক এমন পর্যটকে ঠাসা বলেও জানান তিনি।
 
রুইলুই মৌজার হেডম্যান লাল থাংগা লুসাই জানান,  সাজেকের ঘরে বাইরে পর্যটক আর পর্যটক। আমার বাসাতেও একটা দল থাকছে। আগামী কয়েকদিন এই ভিড় থাকবে।  

দিন যত যাচ্ছে এ পর্যটন এলাকা নিয়ে মানুষের আগ্রহ তত বাড়ছে। বলা যেতেই পারে দেশের বর্তমান সময়ের অন্যতম আকর্ষণ স্পট ‘সাজেক’। এখন থেকে তিন চার বছর আগেও দুর্গম বলে মানুষ সেখানে যেতে সাহস পেতো না। আর এখন এটি পরিণত হয়েছে অনন্য এক পর্যটন কেন্দ্রে। সব সুযোগ সুবিধা নিয়ে সাজেক এখন পর্যটকদের হাতের মুঠোয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৮
আরএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।