ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

আম বাগান পরিচর্যায় ফজলি বেগমরা

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৮ ঘণ্টা, জুন ২, ২০১৮
আম বাগান পরিচর্যায় ফজলি বেগমরা আম বাগানের পরিচর্যায় ফজলি বেগম। ছবি: আরিফ জাহান

রাজশাহী থেকে: নাম- ফজলি বেগম। তবে এটা কোনো আমের নাম না। এক নারীর নাম। স্বামীর নাম মো. শাহিন। 
 

সকাল থেকেই শুরু হয় বৃষ্টি। থেমে থেমে দুপুর নাগাদ সেই বৃষ্টি চলে।

এরপর অনেকের মতো বাড়ির কাজ শেষ করে ফজলি বেগম ছুটে যান শ্বশুর ইছহাক আলীর আম বাগানে। গাছের ডালপালা ও আমের ওজনে হেলে পড়া গাছের ডালপালা ঠিকঠাক আছে কী-না তা বাগান ঘুরে ঘুরে দেখেন। এসময় তার কোলে দুই বছরের শিশু সাজিদ আর সঙ্গে পাঁচ বছরের তানজিলা।

কিছু সময় পর তার সঙ্গে যোগ হন মোছা. সাথী বেগম। তিনিও ইছাহাক আলীর আরেক ছেলের বউ। সাথী বেগমের স্বামীর নাম আবু রায়হান। আম বাগান পরিচর্যার সময় তাকে সহায়তা করে তারই পাঁচ বছরের আদরের মেয়ে রাবেয়া। বাগানের আমগুলো নেড়েচেড়ে দেখেন। দু’একটা পচা আম গাছ থেকে তুলে ফেলে দেন। পাশাপাশি আমের ওজনে হেলে পড়া ডালপালাগুলো দক্ষ হাতের ছোঁয়ায় ঠিক করে দেন।

শুক্রবার (০১ জুন) বিকেলে আমের রাজধানীখ্যাত পুঠিয়া উপজেলার শলৌয়া ইউনিয়নের কানছগাড়ী গ্রামে গিয়ে আম বাগানে নারীদের কর্মযজ্ঞতার দৃশ্য নজর কাড়ে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আঞ্চলিক সড়কের পাশে ইছহাক আলী ও আয়নাল হক দুই ভাই মিলে পাশাপাশি পৃথক জায়গায় গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন জাতের আম বাগান। দুই বাগান মিলে প্রায় দুইশ’র মতো গাছ রয়েছে। এসব গাছে লক্ষণভোগ ও আশ্বিনা জাতের আম ধরেছে। তবে কিছু কিছু গাছ প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়ায় এবার আম ধরেনি।
আম কুড়াচ্ছে তানজিলা।  ছবি: আরিফ জাহান
আমের ওজন সহ্য করতে না পেরে বাগানের আম গাছ সড়কের ওপর হেলে এসেছে। সেই ডাল থেকে পরিপক্ব আম সংগ্রহ করছিলেন আলী হোসেনের স্ত্রী মোছা. শারমিন বেগম। এসময় বাগানের ভেতর পাঁচ বছরের শিশুকন্যা তানজিলাকে গাছ থেকে ঝরে পড়া কয়েকটি আম কুড়াতে দেখা যায়।

এই নারীরা বাংলানিউজকে জানান, বাড়ির পুরুষরা প্রতিকূল আবহাওয়ার সঙ্গে মোকাবেলা করে দিনের সব কাজ গুছিয়ে উঠতে পারছেন না। এতে করে প্রচণ্ড চাপ বাড়ছে তাদের ওপর। তাই বাড়ির কাজকর্ম সেরে বিকেলটা তারা আম বাগানে সময় দেন। সাধ্যমত বাগানের পরিচর্যা করেন। রাজশাহীর অনেক এলাকায় পুরুষের পাশাপাশি নারীরা সংসারের কাজকর্ম সেরে বাকিটা সময় বাগানের আম গাছের পেছনে ব্যয় করেন।

এদিকে কানছগাড়ী থেকে খানিকটা দূরের আরেকটি গ্রাম বালিয়াঘাটি। সেই গ্রামের অনেকগুলো আম বাগানের মধ্যে একটির মালিক হলেন মজিবুর রহমান। আমের ওজন সইতে না পেয়ে কালুয়া জাতের একটি আম গাছ জমিতে শুয়ে পড়েছে। এছাড়া লক্ষণভোগ জাতের গাছের ডালপালা হেলে আমগুলো জমির মাটিতে লেগে পড়েছে। অনেক গাছের আম মাটি ছুঁইছুঁই করছে।

মজিবুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান বাংলানিউজকে জানান, গাছ হিসেবে আম বেশি ধরেছে। এছাড়া গাছগুলো আকারে ছোট। সেই অনুযায়ী ডালপালা তেমন একটা মোটা হয়েনি। এ কারণে ডালপালা আমের ওজন সইতে না পেরে মাটির সঙ্গে লেগেছে। আর কয়েকদিন পর গাছ থেকে আম ভাঙা হবে বলেও জানান ছেলে মেহেদী হাসান।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৮
এমবিএইচ/এনএইচটি

...

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।