ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাগরকন্যা কুয়াকাটা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৮
পর্যটক বরণে প্রস্তুত সাগরকন্যা কুয়াকাটা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কুয়াকাটা। ছবি: বাংলানিউজ

পটুয়াখালী: সাগরজলে লালচে রঙের আভা ছড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত, বালুতটে লাল কাঁকড়ার নৃত্য মনোরত দৃশ্য দেখতে হলে যেতে হবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটায়। আর কোরবানির ঈদের ছুটিতে তাই যে কেউ ঘুরে আসতে পারেন কেওড়া, ছৈলা, বাবলা, নারিকেল গাছে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটায়।

যদিও ভ্রমণপিপাসুরা এরইমধ্যে কোরবানির ঈদের পরের দিন থেকে কুয়াকাটার বিভিন্ন হোটেল-মোটেলে রুমের জন্য অগ্রিম বুকিং দিয়ে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন কর্মরতরা।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব শরিফ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের ছুটিতে সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পর্যটকদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত কুয়াকাটা।

বিশেষ করে কুয়াকাটার হোটেল মোটেলগুলো সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে আগতদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার জন্য। ঈদের ছুটিতে আসা পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা থাকবে। এবারে আগাম বুকিং'র পরিমাণটা বিগত সময়ের থেকে বেশ কম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কুয়াকাটা।  ছবি: বাংলানিউজতিনি আরও বলেন, ঈদের সরকারি ছুটির সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সৈকতে অনেক বেশি পর্যটক সমাগম ঘটতে পারে বলে আশা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। আর এ কারণে ইতোমধ্যে হোটেল-মোটেলসহ স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা তাদের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করেছেন।

পর্যটকদের ঈদ আনন্দ আরও বাড়াতে স্থানীয় মার্কেটের রাখাইন তরুণীরা বিভিন্ন সামগ্রীর পসরা নিয়ে বসে গেছেন। সৈকতে বসার বেঞ্চ ও ছাতায় এখন নতুনত্বের ছোঁয়া। পটুয়াখালী জেলা শহর থেকে ৭২ কিলোমিটার দক্ষিণে কলাপাড়ার অন্তর্গত লতাচাপালী ইউনিয়নে অসাধারণ ভ্রমণ স্বর্গখ্যাত সমুদ্র সৈকতটির অবস্থান। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পূর্বদিকেই রয়েছে গঙ্গামতির বা গজমোতির সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও আগুনমুখা নদীর মোহনা, পশ্চিমে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ও আন্ধারমানিক নদের মোহনা, উত্তরে এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মাছের বাণিজ্যকেন্দ্র আলীপুর। সৈকতের পূর্ব প্রান্তের চারগঙ্গামতী থেকে লাল কাঁকড়া ও সূর্যোদয় দেখা, পশ্চিম প্রান্তের লেম্বুরচর থেকে সূর‌্যাস্ত দেখা। ঘুরে দেখা যাবে নারিকেল বীথি, ফয়েজ মিয়ার বাগান, ইকোপার্কসহ কয়েকটি স্থান রয়েছে যা না দেখলেই নয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কুয়াকাটা।  ছবি: বাংলানিউজকুয়াকাটায় বিভিন্ন এলাকায় দেখা যাবে রাখাইনদের ছোট ছোট পল্লিতে থাকা তাঁতশিল্প ও রাখাইন নারীদের সংগ্রামী জীবন। দেখা যাবে শুটকি ও জেলেপল্লির কর্মব্যস্ত জীবন।

বেড়িবাঁধ ঘেঁষে কুয়াকাটার প্রাচীন কুয়াটির সামনেই রয়েছে সীমা বৌদ্ধমন্দির। প্রাচীন এ মন্দিরে রয়েছে প্রায় ৩৭ মণ ওজনের ধাতুর তৈরি ধ্যানমগ্ন বুদ্ধের মূর্তি। পাশাপাশি কুয়াকাটার রাখাইন আদিবাসীদের আরেকটি বাসস্থল মিশ্রিপাড়ায় রয়েছে একটি বৌদ্ধমন্দির। সেখান থেকে কিছু দূরে আমখোলা পাড়ায় রয়েছে এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় রাখাইন বসতি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কুয়াকাটা।  ছবি: বাংলানিউজকুয়াকাটা থেকে প্রায় চার কিলোমিটার উত্তরে আলীপুর-মহিপুরে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বড় মাছ বিক্রয়কেন্দ্র। যেখান থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রলার বঙ্গোপসাগরে যায় মাছ ধরতে। এসব জায়গায় ঘুরতে হলে ভাড়ায় মোটরসাইকেল কিংবা ব্যাট্যারিচালিত ভ্যানে চরে ঘুরতে পারেন যে কেউ। এছাড়া ঘোড়ায় চরে সমুদ্রসৈকতে ভ্রমন কিংবা সূর্যস্নান করে দিব্যি সময় কাটানো যায় এই সৈকতে। পাশাপাশি সমুদ্রস্নানের জন্য রয়েছে বয়া, লাইফজ্যাকেটসহ নানান ব্যবস্থা। কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ ইন্সপেক্টর মো. খলিলুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বাড়তি পর্যটকদের সামাল দিতে জেলা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও নৌ পুলিশের সমন্বয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

এদিকে মামলা জটিলতায় বছরের পর বছর পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কের ১১ কিলোমিটারের নির্মাণ কাজ আটকে থাকায় যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল সড়কটি। কিন্তু আসন্ন ঈদ মৌসুমে পর্যটক টানতে সড়কটি সংস্কার করে চলচলের উপযোগী করছে সড়ক বিভাগ।

পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, মামলা জটিলতা শেষ হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। তবে বর্তমানে সড়কটি চলাচল উপযোগী করতে কাজ চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৮
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।