ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

পর্যটকদের পদচারণায় মুখর সাগরকন্যা কুয়াকাটা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৮
পর্যটকদের পদচারণায় মুখর সাগরকন্যা কুয়াকাটা ঈদের ছুটিতে পর্যটক মুখর কুয়াকাটা

পটুয়াখালী: বাতাসে ভেসে আসছে সাগরের উত্তাল ঠেউয়ের গর্জন। সমুদ্রস্নানে নেমে সেই ঢেউয়ে ছন্দ মিলিয়ে ডুব-সাঁতারে মগ্ন পর্যটকরা। আবার কেউ তট ধরে পা ভিজিয়ে হেঁটে চলছেন আপন মনে। 

কোরবানির ঈদের ছুটিতে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে বেড়াতে গিয়ে এভাবেই সাগরকন্যা কুয়াকাটায় আনন্দ-উল্লাস করে সময় পার করছেন পর্যটকরা।  

সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটার সৈকত তাই এখন ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পর্যটকদের পদচারণা আর কোলাহলে মুখরিত হয়ে থাকে।

স্থানীয়রা জানান, সূর্যোদয়ের প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য দেখার জন্য পর্যটকরা ভোররাতে ছুটে চলেন গঙ্গামতির উদ্দেশ্যে, যাতে সকাল হওয়ার আগেই সেখানে থাকা যায় এবং সূর্যোদয়টা পুরোপুরি ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। যদিও গঙ্গামতিতে সূর্যোদয়ের সঙ্গে দেখা মেলে সেখানকার বনায়ন ও বিচে লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি। সেখান থেকে ফিরে এসে পর্যটকরা মগ্ন হচ্ছেন সমুদ্রস্নানে। বিকেলে সমুদ্রতটে দাঁড়িয়ে দেখছেন সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য, আর রাতে খোলা-আকাশে চাঁদ-তারার খেলা।

ঈদের ছুটিতে পর্যটক মুখর কুয়াকাটাযদিও দিনে মিশ্রি পাড়ার বৌদ্ধমূর্তি, কুয়াকাটার পাতকুয়া, ইকোপার্ক, খাজুরা গহীন বনের ইকোপার্ক, কাউয়ার চরের বিশালাকৃতির বিচ, শুঁটকিপল্লী, রাখাইন পাড়ার তাঁত শিল্পসহ আকর্ষণীয় বিভিন্ন স্থান ও স্থাপনা ঘুরে দেখছেন পর্যটকরা।

সাগর পারে এসে সমুদ্রস্নান করেন না এমন কারো দেখা মেলা দায়। তবে যারা সাঁতার জানেন না তাদের জন্য কুয়াকাটায় রয়েছে বয়া নিয়ে সাগরে গোসল করার সুবিধা। বিচে খেলার জন্য ফুটবল ভাড়ার ব্যবস্থা করেছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের ছুটির সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের পরের দিন থেকে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় আসতে শুরু করেছেন। পর্যটকদের আতিথেয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগে থেকেই সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ীসহ ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ-পুলিশের সদস্যরা।

শাহানা আকতার নামে এক কর্মজীবী নারী জানান, ঈদের ছুটিতে স্বামী-সন্তানদের সঙ্গে কুয়াকাটায় এসেছেন। এখানের নৈসর্গিক সৌন্দর্য আমাদের মুগ্ধ করেছে। আসার পর থেকে সবাই বেশ আনন্দঘন মুহূর্ত পার করছি।

ঈদের ছুটিতে পর্যটক মুখর কুয়াকাটাঢাকা থেকে ঘুরতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আশিকুর রহমান বলেন, সমুদ্র দর্শনের সঙ্গে সমুদ্রস্নান সেরেছি, দেখেছি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত। এবার ঘুরে দেখবো রাখাইন ও কুয়াকাটাবাসীর ইতিহাস-ঐতিহ্য। না এলে হয়তো বুঝতামই না আমাদের দেশে এতো সুন্দর সুন্দর স্থান ও স্থাপনা রয়েছে।  

তিনি বলেন, এখানে ঘুরে বেড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের যানবাহন পাওয়া যায়, ছবি তুলতেও লোকের অভাব নেই, খাবারেও রয়েছে আইটেম ও স্বাদের ভিন্নতা।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, টানা দু’দিন বা তার বেশি বন্ধ থাকলেই কুয়াকাটায় পর্যটকদের চাপ বাড়ে। তবে রাস্তা খারাপ থাকায় সম্প্রতি পর্যটকের আনাগোনা কিছুটা কম ছিল। ঈদের পর থেকে পর্যটকদের আনাগোনো বেশ ভালোই বেড়েছে। হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সেবা দিতে কাজ করে যাচ্ছে।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. খলিলুর রহমান বলেন, দর্শনীয় স্থানসহ পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণে ট্যুরিস্ট, নৌ ও থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।  

বাংলা‌দেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট, ২৪, ২০১৮
এমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।