ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

পাহাড় থেকে পাহাড় দেখার দেলো-কালিম্পং-দুরপিনদাড়া

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৬
পাহাড় থেকে পাহাড় দেখার দেলো-কালিম্পং-দুরপিনদাড়া ছবি: শামীম হোসেন ও হুসাইন আজাদ

[পূর্ব প্রকাশের পর]
গ্রীষ্মের দার্জিলিং-৬

দার্জিলিং ঘুরে: রিশপ থেকে কালিম্পংয়ের পথে পা বাড়াতেই কানে যেন বাজা শুরু হলো কৈশোরে শোনা সেই আকুল করা গান, কুয়াশায় ভেজা ভাসা ভাসা সেই পাইন গাছের ফাঁকে ফাঁকে রোদ্দুর....হাতের ভেতর শিশির ভেজা দার্জিলিং কালিম্পং...। ’ ফুফু আর বাবার কাছে গল্প শোনার পর বোধহয় এ গানটিই সবচেয়ে বেশি টেনে রেখেছিলো দার্জিলিং।

লাভা থেকে ২৫ কিলোমিটার পাহাড়ি আঁকা-বাঁকা উঁচু-নিচু পথ বেয়ে ঘণ্টাদেড়েকে পৌঁছে গেলাম পরের গন্তব্য কালিম্পংয়ে। কালিম্পং দার্জিলিং জেলার অন্যতম পরিচতি ট্যুরিস্ট স্পট। এখানে সুযোগ পাহাড়ি পাথুরে ঝিরিতে রাফটিং করার।

আমরা সোজা উঠলাম অন্যতম পর্যটক আকর্ষণ দেলোতে। সবুজ ঘাস, পাহাড় আর ঝাউ, ধুপ্পি (পাইন, স্থানীয়রা ধুপ্পি বলে) ঘেরা অসাধারণ একটি জায়গা এটি। এখানে সুযোগ আছে প্যারাগ্লাইডিং করার। সঙ্গে এইচডি ভিডিও আর ছবি। ১৫ মিনিট ২৫শ’ টাকা। ১০ টাকার টিকিট কেটে দেলোর পার্কে ঢোকার মুখেই প্যারাগ্লাইডিংয়ের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পাবেন।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সবুজ ঘাসের চাদর, চারপাশে বড় খাদ আর দূরে উঁচু পাহাড় দেলোর আকর্ষণ। এখানে একটি ট্যুরিস্ট লজ আছে থ্রি-স্টার মানের। পার্কের ভেতরে আবার উঁচু-নিচু সড়ক চলে গেছে একদিক থেকে অন্যদিকে। মাঝে মাঝে বসার জায়গা। এখান থেকে অনেকটা বার্ডস আই ভিউতে দেখা যায় পাহাড়গুলো।

সুন্দর এ পার্কে বসে সময় কাটাতে মন চাইলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কিন্তু আমাদের সময় ছিলো কম। তাই কিছুক্ষণ সৌন্দর্য মন্থন করে যেতে হলো পরের স্পট দুরপিনদাড়া মনেস্ট্রিতে। এর উপরে উঠে চারপাশে তাকালে সত্যি প্রাণ জুড়োবে। চারপাশে শুধু পাহাড় আর পাহাড়, সঙ্গে মেঘের ওড়াউড়ি।

তিনতলা এ মনেস্ট্রিতে উঠতে পারে যে কেউ। বেশ তকতকে ঝকঝকে করে রাখা সব। ফটোগ্রাফির জন্য দারুণ জায়গা এ দুরপিনদাড়া।

সন্ধ্যার আগেই পৌঁছাতে হবে দার্জিলিং শহর। তাই রওয়ানা দেওয়া হলো দ্রুতই। গাড়িতে একটানা বাজতে লাগলো রক গান। হিন্দির সঙ্গে নেপালি। গান ছাড়া আবার গাড়িই চালাতে পারেন না রাজ। এর মধ্যে সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘সানাম তেরি কাসাম’ মুভির ‘খিচ মেরা ফটো’ গানটির ভক্ত হয়ে গেলাম সবাই। কারণ আমরাও ফটো ‘খিচা’র মধ্যেই ছিলাম।

ও হ্যাঁ। আরও একটি কন্ডিশন আছে তার গাড়িতে চড়ার। সেটি হলো সামনে বসে ঘুমানো যাবে না। এটাকে তারা অমঙ্গল মনে করে। হুসাইন আর শামীম ভাই এজন্য কয়েকবার হালকা হঁশিয়ারিও শুনলো সামনে বসে। ভ্রমণের শেষ দিন সামনে বসে ঘুমানোর জন্য সহকারীর মুখে চালকের সজোরে চপেটাঘাতে সেটা ‍আরও স্পষ্ট হয়। সুতরাং, সাবধান সবাই।

চলবে.....

বাংলাদেশ সময়: ০৯২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৬
এএ

**পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরতম গ্রাম রিশপে
** মেঘে ভিজে লোলেগাঁও ক্যানোপিতে
** গরুবাথানের পাথুরে স্বচ্ছ পাহাড়ি ধারায়
** ফুলবাড়ি হয়ে দার্জিলিং, হ্যাপা কম নয় ২৫ রুপির ঘোষণায়
** ৭ হাজার ফুট উচ্চতার লাভা শহরে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।