রাজন্য আমলে শুরু হওয়া এই মেলা উত্তরপূর্ব ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন মেলা। প্রতি বছরই মেলায় লোক সমাগম বাড়ছে।
ত্রিপুরার পাশাপাশি আসাম, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মেলায় জড়ো হয় মানুষ।
উৎসব কমিটির অন্যতম সদস্য, ত্রিপুরা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার পবিত্র কর বাংলানিউজকে জানান, গত বছর উৎসব ও মেলায় ৭ দিনে ১৫ লাখের মতো মানুষ এসেছিলেন।
এ বছর এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বর্তমান আগরতলা শহর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরের এই পুরাতন আগরতলা এক সময় এখানকার রাজধানী ছিল, যার অপর নাম পুরাতন হাভেলী। যেখানে স্থাপন করা হয়েছিল তাদের ১৪ জন কুল দেবতাকে। তাই এর নাম চতুর্দশ দেবতা বাড়ি।
পরবর্তী রাজারা রাজধানী স্থানান্তর করে বর্তমান আগরতলায় নিয়ে এলেও তাদের কুলদেবতারা সেখানে রয়ে যায়। এই ১৪ জন দেবতার মধ্যে সারাবছর মাত্র তিনজন দেবতার পূজা হয়। বাকিদের মন্দিরে সিন্ধুকের ভেতরে রাখা হয়। শুধুমাত্র খার্চি উৎসবের সাতদিন মোট ১৪ জন দেবতার পূজা হয় ও পূণ্যার্থীদের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় বলেও জানান পবিত্র কর।
বর্তমানে এই মন্দিরের পূজা থেকে শুরু করে উৎসবের যাবতীয় খরচ আসে রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে।
এর পেছনেও একটি সুন্দর ইতিহাস রয়েছে। ভারতের স্বাধীনতার সময় ত্রিপুরা ছিল রাজন্য শাসিত স্বাধীন দেশীয় রাজ্য। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ত্রিপুরা ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবে যোগ দেয়। রাজতন্ত্রের অবসান ও গণতন্ত্রের সূচনায় রাজ্যের মানুষের দায়িত্ব চলে যায় ভারত সরকারের ওপর। তখন একটি প্রশ্ন সামনে আসে জনগণের দায়িত্ব তো নিয়ে নিলো দেশের সরকার কিন্তু রাজকোষ থেকে যে সব মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়ে আসছে তার দায়িত্ব কে নেবে?
তখন সিদ্ধান্ত হয় যে রাজকোষ থেকে পরিচালিত সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেবে ত্রিপুরা সরকার। সেই থেকে এখনও এই রীতি চলে আসছে। মন্দিরের নিত্য পূজা থেকে উৎসবের যাবতীয় খরচ বহন করে রাজ্য সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৫০ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৭
এসসিএন/এমইউএম/আইএ