শনিবার (১ জুলাই) সাতদিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন হয়। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা সরকারের পর্যটন দফতরের মন্ত্রী রতন ভৌমিক, ত্রিপুরা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার ও স্থানীয় বিধায়ক পবিত্র কর, পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি দিলীপ দাস, আগরতলা পুরপরিষদের মেয়র ড. প্রফুল্লজীৎ সিনহা, ত্রিপুরা স্বশাসিত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রঞ্জিৎ দেববর্মাসহ ত্রিপুরা সরকারের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা।
ভোরে চতুর্দশ দেবতা বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া হাওড়া নদীতে চতুর্দশ দেবতাদের স্নান করিয়ে এনে পূজার আসনে বসানো হয়। এ পূজার পুরহিতকে বলা হয় রাজ চন্তাই। পূজা তার নির্দেশেই হয়, তাকে সহযোগিতা করার জন্য আরও কিছু লোক থাকেন। এরা সবাই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর।
সাতদিনব্যাপী এ মেলা ও প্রদর্শনী উপলক্ষে মন্দির চত্বর এবং আশপাশের রাস্তায় বসেছে এক হাজারের বেশি দোকান।
আগরতলা শহর থেকে ৯ কিমি দূরে পুরনো আগরতলার এই চতুর্দশ দেবতা বাড়ি প্রায় সাতশ বছরের বেশি পুরনো। রাজন্য আমলে ত্রিপুরার রাজধানী যখন উদয়পুর থেকে পুরনো আগরতলায় স্থানান্তরিত হয় তখন এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মন্দিরে মোট ১৪ জন দেবদেবী রয়েছেন। এরা প্রাচীন রাজাদের কুলদেবতা। এই দেবতাদের নাম হলো হর অর্থাৎ, শিব, উমা, হরি, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গনেশ, ব্রহ্মা, পৃথিবী, সমুদ্র, গঙ্গা, অগ্নি, কামদেব ও হিমাদ্রী।
এদের কোনো পূর্ণাবয়ব মূর্তি নেই, এই দেবতাদের শুধু মুণ্ডের পূজা হয়। মন্দির প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিবছর বাংলা আষাঢ় মাসের রথযাত্রার পর সাতদিনব্যাপী উৎসব ও মেলা চলে আসছে। পরবর্তী সময় রাজারা রাজধানী আগরতলায় স্থানান্তরিত করলেও তাদের কুলদেবতার মন্দির রয়ে যায় পুরনো আগরতলায়। এখন এই মন্দির ধর্মীয় স্থানকে ছাপিয়ে হয়ে উঠেছে রাজ্যের অন্যতম এক পর্যটন কেন্দ্র।
সারা বছরই এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিড় থাকে এবং মেলার সময় সারা ত্রিপুরার পাশাপাশি, আসাম, পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলাদেশ থেকে প্রচুর লোক সমাগম হয়। মেলার সাতদিন ২৪ ঘণ্টাই লোকারণ্য হয়ে থাকে চতুর্দশ দেবতাবাড়ি চত্বর।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৪ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৭
এসসিএন/এএ