আঁকা-বাকা পাহাড়ি পথ দিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তার দুই ধারে শুধু সবুজ বৃক্ষরাজি। আগরতলা শহর থেকে ৯০ মাইল দূরে অবস্থিত এই লজটি দেখলে মনে হবে বাংলাদেশের নীলাচল।
পুরো লজটির চারদিকেই পাহাড়। আর এই পাহাড়ের যে দিকেই চোখ যাবে শুধু সবুজের সমাহার। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলে দেখা যাবে বানরগুলো রুমের পাশ দিয়ে সারিবদ্ধভাবে হেঁটে যাচ্ছে। এক কটেজ থেকে আরেক কটেজে যাওয়ার জন্য যে ট্রেইল (হাঁটা পথ) সেটিও মুগ্ধ করবে পর্যটকদের।
মুহুরি পর্যটন লজ এর ভাড়াও সাধ্যের মধ্যেই। ডাবল বেড এর নন-এসি রুম মাত্র ৪০০ রুপি। আর ফোর বেড এর নন-এসি রুম ৮০০ রুপি। ডাবল বেডি এসি কটেজ ৯০০ রুপি। ডাবল নন-এসি কটেজ ৪০০ রুপি। আর ৬ বেডের নন-এসি ডরমেটরি প্রতি বেড ভাড়া পড়বে ১৫০ রুপি।
এখানে থাকার পাশাপাশি খাওয়ারও সুব্যবস্থা রয়েছে। কেউ চাইলে কাছেই বিলোনিয়া বাজার থেকে পছন্দমত বাজার করে দিলে রান্না করে দেবে মুহুরির বাবুর্চিরা। আবার মুহুরির প্যাকেজ খাবারও পাওয়া যাবে। এখানে প্রতিজনের ভাত, ডাল, ভাজি এবং সবজির প্যাকেজ ৮০ রুপি, আর ভাত-ডাল-ভাজি-ডিম-তরকারি দিয়ে খেলে পড়বে ১০০ রুপি। প্যাকেজে মাছ ও ফার্মের মুরগি যোগ করলে পড়বে ১৫০ রুপি প্রতিজন। আর যদি কেউ মাটন কারি খেতে চায় তাহলে ২৫০ রুপি পড়বে।
মুহুরি কটেজের ম্যানেজার সুশান্ত তপাদার বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ থেকে সবচাইতে কাছে এই মুহুরি পর্যটন কেন্দ্র। কেউ যদি বিলোনিয়া সীমান্ত দিয়ে আসে তাহলে মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যেই মুহুরিতে চলে আসতে পারবেন। আমরা এ কটেজে আগামিতে ওয়াই-ফাই দেওয়ারও চিন্তা করছি। এখানে সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় ট্যুরিস্টরা বেশি আসেন।
বাংলাদেশের ফেনী জেলার পাশে বিলোনিয়া সীমান্ত। বিলোনিয়া সীমান্ত পার হলেই কয়েক কিলোমিটার পরে দেখা মিলবে বাংলাদেশের নীলচল মতোই আর একটি পর্যটন স্পট। এই সীমান্ত দিয়ে পারাপারে নেই দীর্ঘ ভিড়। নেই বাড়তি ঝামেলা। তাই একদম নির্জন পরিবেশে সময় কাটানোর জন্য চলে যাওয়া যেতে পারে দক্ষিণ ত্রিপুরার মুহুরি পর্যটন লজ এ।
লজ এর প্রতিটি কটেজের কাছেই রয়েছে বসার স্থান। সেখানেও রয়েছে ভিন্নতা। সাগরের ঢেউ এর মত উঁচ নিচু ডিজাইনের টেবিল। রাতে ঝিঝি পোকার ডাক আর সকালে বানরের পদচারনা মুগ্ধ করে দেয় মুহুর্তেই। পাহাড়ি পথ পারি দেওয়ার পর সব ক্লান্তি উবে যায় মুহুর্তেই। এভাবেই গড়া হয়েছে মুহুরি পর্যটন লজ।
যারা বাংলাদেশের নীলাচল দেখেছেন তাদের কাছে মনে হবে এটি নীলাচলেরই অংশ। যতক্ষণ হাটবেন ততক্ষণই মনে নীলচলের মাধেই আছি। এটা আসলে না দেখলে বুঝানো যাবে না। তাই এক কথায় বলা যেতে পারে নীলাচলের স্বপ্ন মেটাবে মুহুরি পর্যটন লজ।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৭
এসএম/এসএইচ