রোববার (৩০ জুলাই) সকালে আগরতলার শহীদ ভগৎ সিং রাজ্য যুব আবাসে বাংলানিউজের ‘ত্রিপুরা’ পাতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ভারত বর্ষের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যটির খবরা-খবর নিয়ে সাজানো পাতা ‘ত্রিপুরা’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন।
অনলাইনের প্রসারের কথা তুলে ধরে এ সময় তিনি বলেন, আমাদের তরুণ প্রজন্ম অনলাইনেই অভ্যস্ত হচ্ছে। এ মাধ্যমেই তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আর আমাদের রিপোর্টাররা মোবাইলেই সংবাদ লিখছেন। এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলানিউজ।
অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আলমগীর হোসেন বলেন, বাস্তবিক পক্ষে এখন মিডিয়া বলতে অনেক অনলাইন হচ্ছে। বাংলানিউজে প্রতিদিন যে সংখ্যক নিউজ আপলোড করা হয় তা দিয়ে ২৪ পাতার একটি দৈনিক বের করা সম্ভব।
‘ত্রিপুরা’ পাতা প্রসঙ্গে বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই ত্রিপুরা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ত্রিপুরার নাম। আমরা চাই বাংলাদেশের যুব সমাজ ত্রিপুরাকে জানুক। একারণেই ‘ত্রিপুরা পেজ’ চালু করা হয়েছে।
বাংলানিউজের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন আগরতলার সাংবাদিক, শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানে আগরতলার সাংবাদিক অমিত ভৌমিক বলেন, যে ভাষায় আমি আমার মাকে ডাকি, সে ভাষার প্রতিনিধিত্ব করে বাংলাদেশ। যারা মায়ের ভাষার প্রতিনিধিত্ব করে তাদের এভাবে সশ্রদ্ধ সালাম ও শুভেচ্ছা জানাই।
‘বাংলাদেশ ও ত্রিপুরার যে নিবিড় সম্পর্ক তা আরো সুদৃঢ় হোক, আর বাংলানিউজের এ উদ্যোগ আমাদের সে দেশের (বাংলাদেশ) মানুষের কাছে যাওয়ার নতুন প্লাটফর্ম হবে। ’
আলাদা পাতা চালু করায় বাংলানিউজকে সাধুবাদ জানিয়ে ত্রিপুরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রণব সেনগুপ্ত বলেন, দু’দেশের সাংবাদিকরা একসঙ্গে কাজ করলে ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাবে। একসঙ্গে কাজ করলে দুই দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার আরও উন্নতি হবে।
বাংলানিউজের কার্যক্রমের প্রশংসা করে আগরতলার সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার অঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, আমরা ভারতীয়রা যদি দু'মিনিট কথা বলি তাতে অনেকগুলো ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করি। কিন্তু বাংলানিউজে দেখেছি তারা সংবাদের পুরোটাই সঠিক বাংলায় লেখে। বাংলার কদর করতে জানে।
এ সময় বাংলানিউজের সাহিত্য পাতারও প্রশংসা করেন তিনি।
দ্রুত নির্ভুল খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে বাংলানিউজকে এগিয়ে রেখে সাংবাদিক বিশেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, আগে আমরা যেকোনো খবর দেখতে টিভির স্ক্রলের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। এখন বাংলানিউজেই সেই খবর পাই।
‘আমরা এখন তাৎক্ষণিক খবরের ফ্ল্যাশগুলো বাংলানিউজেই পাই। বাংলানিউজের আরেকটি বৈশিষ্ট্য ছোট বড় সব খবরই গুরুত্বের সঙ্গে আপলোড করা হয়। বিভিন্ন সময় আমরা অনেক খবরের রেফারেন্স হিসেবে বাংলানিউজের খবরটি ব্যবহার করি। ’
ত্রিপুরার জন্যে আলাদা পাতা চালু করায় বাংলানিউজের কাছে এখানকার মানুষের প্রত্যাশা আরও বেড়ে গেছে বলেও মনে করেন টাইমস অব ইন্ডিয়ার ত্রিপুরা প্রতিনিধি।
এদিকে বাংলানিউজের ‘ত্রিপুরা’ পাতা উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ত্রিপুরার মানুষের মধ্যে নতুন যোগসূত্র স্থাপন হয়েছে বলেই মনে করেন নিউজ পোর্টালটির আউটপুট এডিটর (ইংরেজি) এসএম সালাহউদ্দিন।
তিনি বলেন, এই পেজ উদ্বোধনের কারণে এখন আগরতলায় বেশি বেশি আসা হবে। এখানকার মানুষের মুখের ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে আমাদের দারুণ মিল রয়েছে। আগরতলার মানুষও সহজ সরল এবং বেশ আন্তরিক।
বাংলানিউজের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আগরতলার গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ লাইব্রেরির গ্রন্থাগারিক ও আবৃত্তি শিল্পী শাওলী রায় বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কাঁটাতার আলাদা করেছে দুই দেশকে। কিন্তু মনের আকাশকে ভাগ করতে পারেনি। বাংলানিউজ সে বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলানিউজের প্রতি বাংলার মানুষের কৃতজ্ঞ থাকা দরকার।
এ সময় বাংলাদেশের মানুষের জন্য সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘কোন দেশ’ কবিতাটি আবৃত্তি করে শোনান তিনি।
আর ‘ত্রিপুরা’ পাতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিজের লেখা ‘মাশাল্লা’ গল্প শুনিয়ে বাংলানিউজকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিআইজি অরিন্দম দেবনাথ।
বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বাংলানিউজ ত্রিপুরা পাতার শুভকামনা করে ‘মাশাল্লা’ গল্পটি পড়ে শোনান। গল্পের শেষটাও ছিল ‘মাশাল্লা’।
অনুষ্ঠানে বাংলানিউজের চিফ অব করেসপন্ডেন্টস সেরাজুল ইসলাম সেরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট মবিনুল ইসলাম, লাইফস্টাইল এডিটর শারমিনা ইসলাম, ল’ এডিটর এরশাদুল আলম প্রিন্স, কান্ট্রি এডিটর শিমুল সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নতুন চালু হওয়া বাংলানিউজের ‘ত্রিপুরা পেজে’ থাকবে বৈচিত্র্যময় এ রাজ্যের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, অনিয়ম-দুর্নীতি, পর্যটন সম্ভাবনা-সমস্যা, বৈদেশিক বাণিজ্যসহ সব খবর।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৭
এমএ/এসএইচ