ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

মহাবীর’র জন্ম তিথির অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৮
মহাবীর’র জন্ম তিথির অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী আগরতলার প্যালেস কম্পাউন্ডের জৈন মন্দিরে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব

আগরতলা: জৈন ধর্মের প্রবর্তক মহাবীর’র ২৬১৭তম জন্ম তিথি উপলক্ষে আগরতলার প্যালেস কম্পাউন্ডের জৈন মন্দিরে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। 

শুক্রবার (২৯ মার্চ) উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।

এসময় জৈন মন্দিরে প্রতিষ্ঠাতা হীরা লাল জৈন মুখ্যমন্ত্রীকে শাল দিয়ে সংবর্ধিত করেছেন।

তিনি মহাবীর’র মূর্তীতে পূজা ও আরতি করেন এবং প্রায় এক ঘণ্টা মন্দিরে সময় ব্যয় করেন।

মন্দিরে উপস্থিত ভক্তাদের উদ্দ্যেশে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, মহাবীর মানুষসহ সব জীবের প্রতি সহানুভুতিশীল ছিলেন। তিনি ক্ষুদ্র পিঁপড়েকে রক্ষা কথা বলেছেন। আজকের এই সময়ে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য মহাবীর’র চিন্তার প্রয়োজন।  

জৈন মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা হীরা লাল জৈন বলেন, বিপ্লব কুমার দেব প্রথম মুখ্যমন্ত্রী যিনি এই জৈন মন্দিরে এসেছেন। মহাবীর’র জন্ম তিথি উপলক্ষে মন্দিরে দিনব্যাপী প্রার্থনা ও ধর্ম বিষয়ে আলোচনাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

মহাবীর হলেন ২৪শ তথা সর্বশেষ জৈন তীর্থঙ্কর (শিক্ষক দেবতা)। তিনি বর্ধমান নামেও পরিচিত। মহাবীরকেই সাধারণত জৈন ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা মনে করা হয়। যদিও ২৩শ জৈন তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথ যে ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন সেই বিষয়ে যথেষ্ট যুক্তিগ্রাহ্য প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।

খ্রিস্টপূর্ব ৫৯৯ অব্দে অধুনা ভারতের বিহার রাজ্যের অন্তর্গত একটি প্রাচীন রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মহাবীর। ৩০ বছর বয়সে তিনি আধ্যাত্মিক জ্ঞানলাভের উদ্দেশ্যে গৃহত্যাগ করেন এবং বস্ত্রসহ যাবতীয় জাগতিক সম্পত্তি পরিত্যাগ করে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। পরবর্তী সাড়ে ১২ বছর মহাবীর গভীর ধ্যান অনুশীলন করেন এবং কঠোর তপস্যা করেন। এরপর তিনি ‘কেবলী’ (সর্বজ্ঞ) হন।

পরবর্তী ৩০ বছর তিনি জৈন দর্শন শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া পরিভ্রমণ করেন। মহাবীর জীবনের মান উন্নত করার জন্য ‘অহিংসা’ (প্রত্যেক জীবের প্রতি কায়মনোবাক্যে হিংসা বর্জন), ‘সত্য’ (কার্যে ও বাক্যে সত্যাচরণ), ‘অস্তেয়’ (চুরি না করা), ‘ব্রহ্মচর্য’ (ইন্দ্রিয়-সংযম) ও ‘অপরিগ্রহ’ (সংসারে অনাসক্তি) – এই পাঁচটি ব্রত পালনের প্রয়োজনীয়তার কথা শিক্ষা দেন। মহাবীর'র প্রধান শিষ্য গৌতম স্বামী (ইন্দ্রভূতি গৌতম) তার উপদেশগুলো সংকলিত করেন। এগুলোকে আগম বলা হয়। এই আগম গ্রন্থগুলোর অধিকাংশই আজ আর পাওয়া যায় না। জৈনরা বিশ্বাস করেন, মহাবীর ৭২ বছর বয়সে মোক্ষ (জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি) লাভ করেছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৮
এসসিএন/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।