বর্তমানে পাহাড়ের চূড়া থেকে সমতল ভূমি, ভূপৃষ্ঠের তলদেশ এমনকি সমুদ্রের তলদেশও প্লাস্টিক দূষণের শিকার।
‘প্লাস্টিক ওসেন’র এক গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ৩০ কোটি টন প্লাস্টিক তৈরি করা হয়।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, প্রতিবছর প্রায় ৮০লাখ টনের বেশি প্লাস্টিক নদী নালা হয়ে গিয়ে পড়ছে সমুদ্রে।
প্লাস্টিকের দূষণ রোধে ভারত সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা ছাড়াও ব্যক্তিগত উদ্যোগে নেওয়া হচ্ছে নানা পরিকল্পনা।
এর ধারাবাহিকতায় ত্রিপুরা রাজ্যও শুরু হয়েছে প্লাস্টিকের দূষণ রোধে বিভিন্ন কর্মসূচি। প্লাস্টিকের বিকল্প সামগ্রী তৈরি করে কর্মসংস্থান সৃষ্টির চেষ্টা করছেন অনেকে। বিশেষ করে একবার ব্যবহার করার জন্য প্লাস্টিক ব্যাগের বদলে সহজে পচনশীল কাগজের ব্যাগ ব্যবহারের দিকে মানুষকে আগ্রহী করে বিষয়ে কাজ শুরু হয়েছে।
ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় প্লাস্টিকের দূষণ বন্ধ করতে যারা বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছেন তাদের একজন অলড্রিন মজুমদার। মাত্র কয়েক মাসে তিনি বেশ সফলতাও পেয়েছেন। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাস থেকে তিনি কাগজের ব্যাগ তৈরির কারখানা চালু করেছেন।
এ নিয়ে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, অনেকটা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আমি এ কারখানাটি চালু করেছি। এর দু’টি উপকার হচ্ছে আমাদের। প্রথমত প্লাস্টিক দূষণের হাত থেকে কিছুটা হলেও পরিবেশকে রক্ষা করতে পারছি। আর পাশাপাশি নারীদের এই কাজের সঙ্গে যুক্ত করে তাদেরকে কিছুটা স্বাবলম্বী করে তুলতে পারছি।
অলড্রিন মজুমদার আরও বলেন, প্রথমে মহিলাদের বিনামূল্যে ব্যাগ বানানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তারপর তারা ব্যাগ তৈরি করছেন। কেউ কেউ তাদের সুবিধা অনুসারে বাড়ির কাজের ফাঁকে কারখানায় এসে বসে ব্যাগ তৈরি করে আবার কেউ কেউ কারখানা থেকে ব্যাগ তৈরির সামগ্রী বাড়ি নিয়ে যায়। আমার এই কারখানায় মূলত তিন ধরনের ব্যাগ তৈরি হয়। পুরাতন পত্রিকার কাগজ দিয়ে তৈরি ব্যাগ হয় যা চাল, ডালসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। এই ব্যাগকে স্থানীয় ভাষায় ঠুঙ্গা বলা হয়। দ্বিতীয় ধরনের ব্যাগ বা ঠুঙ্গা তৈরি হয় সাদা কাগজ দিয়ে, যেগুলি মূলত দোকানে তৈরি করা খাবার যেমন চপ, শুকনো মিষ্টি নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়া শপিংমলসহ বিভিন্ন কাপড়ের দোকানের জন্য বিভিন্ন আকারের ও ডিজাইনের ব্যাগও তৈরি করি আমরা।
কাগজের ব্যাগের বিক্রি নিয়ে অলড্রিন মজুমদার বলেন, দেশের অন্যান্য রাজ্য কাগজের ব্যাগ ব্যবহারের বিষয়ে অনেক সচেতন হলেও ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষের মধ্যে এই সচেতনতা তেমন ভাবে গড়ে উঠেনি। তাই নিষেধাজ্ঞা স্বত্বেও এই রাজ্যে ব্যাপক হারে প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার হচ্ছে। রাজ্যের ব্যাগের মাত্র ৫ শতাংশের মতো মানুষ প্লাস্টিকের ব্যাগের বিকল্প হিসেবে কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করছেন।
ত্রিপুরা থেকে কাগজের ব্যাগ ব্যাঙ্গালুরু এমন মুম্বাই শহরে রফতানি করেছেন বলেও জানান অলড্রিন।
বাংলাদশে সময়: ০০৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৮
এসসিএন/এপি/এমএমএস