সম্প্রতি বাংলানিউজকে এমন তথ্যই জানিয়েছেন ত্রিপুরা রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী প্রণজিত সিংহরায়।
বিমানবন্দর আধুনিকীকরণের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে নতুন টার্মিনাল ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
পরিবহনমন্ত্রী জানান, সম্প্রতি এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট অথোরিটি অফ ইন্ডিয়ার (এএআই) কর্মকর্তাদের সঙ্গে ত্রিপুরা সরকারের পরিবহন দফতরের কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ত্রিপুরা সরকারের পক্ষ থেকে নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করতে রাজ্য সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রাণজিৎ সিংহরায় জানান, ত্রিপুরা সরকারের পক্ষ থেকে এমবিবি বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রীর কাছে দাবি জানানো হয়েছে। এটা শুধু ত্রিপুরা সরকারের নয়, রাজ্যবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। কেন্দ্রীয় সরকার ত্রিপুরাবাসীর দাবি মেনে নিয়ে এমবিবি বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা দেবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে আগরতলার এমবিবি বিমানবন্দরের বর্তমান অধিকর্তা বিপিন কান্ত সেঠ বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে বিমানবন্দরের চারদিকে নতুন করে দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। থাকছে অত্যাধুনিক কারপার্কিং ব্যবস্থা, একাধিক উড়োজাহাজ সংস্থার পর্যাপ্ত সংখ্যক কাউন্টার রাখার ব্যবস্থা। তাছাড়া সুরক্ষা চেকিংয়ের জন্য অধিক সংখ্যক কাউন্টার রাখা হয়েছে। পাশাপাশি আমদানি-রফতানির কথা চিন্তা করে সর্ব সুবিধাযুক্ত কার্গো বিল্ডিং নির্মাণ করা হচ্ছে।
যাত্রী ধারণ ক্ষমতা বর্তমান টার্মিনাল থেকে প্রায় দ্বিগুন। নতুন এ ভবন নির্মাণে খরচ হবে ৩৩৮ কোটি রুপি। তবে আলাদা আলাদা সংস্থা নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকায় নির্মাণ ব্যয় বাড়বে না বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর নির্মাণ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ চলছে। আশা করা যাচ্ছে, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে এ বিমানবন্দর দিয়ে যাত্রী পরিসেবা শুরু করা যাবে- যোগ করেন বিপিন কান্ত সেঠ।
স্বাধীন ত্রিপুরা রাজ্যের সর্বশেষ মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুরের উদ্যোগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় প্রথম বিমানবন্দর নির্মাণ করা হয়। প্রথমে তৎকালীন আগরতলা বিমানবন্দর থেকে রাষ্ট্রপরিচালিত যাত্রী পরিবহনকারী প্লেন পরিচালন সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার দেশের অন্যান্য রাজ্যের মধ্যে পরিসেবা দিলেও পরবর্তীতে যাত্রীদের চাপ বাড়ায় একাধিক বেসরকারি সংস্থা আগরতলা থেকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে পরিসেবা দিচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আগরতলাসহ রাজ্যের জনসংখ্যাও বেড়েছে।
মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্যের আমলে এ বিমানবন্দর স্থাপিত হওয়ায় বর্তমান ত্রিপুরা সরকার আগরতলা বিমানবন্দর নাম পরিবর্তন করে ‘মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বিমান’ বন্দর নাম দেয়। এবছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ নতুন নাম দেন এবং বিমান বন্দরে মহারাজার একটি সাড়ে ৭ ফুট উঁচু মূর্তি উন্মোচন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৯
এসসিএন/ওএইচ/