ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

ত্রিপুরাকে চট্টগ্রাম-মোংলা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯
ত্রিপুরাকে চট্টগ্রাম-মোংলা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব 

আগরতলা: বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানিসহ সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে ত্রিপুরাকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ত্রিপুরা সফরের দ্বিতীয়দিনে সচিবালয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ প্রস্তাব দেন।

বৈঠক শেষে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার আরো দ্রুত উন্নয়ন ঘটানো জরুরি।

ত্রিপুরার তিন দিক ঘিরে রয়েছে বাংলাদেশ। ত্রিপুরা যদি চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে তবে শুধু তারাই নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলিও লাভবান হবে।  

এ জন্য বন্দর ব্যবহারের নিয়ম-কানুনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।  

এ নিয়ে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আলোচনা করবেন বলেও জানান তিনি। এদিকে আগামী বছরের শেষ নাগাদ আগরতলা ও বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি রেল যোগাযোগ চালু হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এসব ছাড়াও বৈঠকে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল ব্যবস্থা, ত্রিপুরা-বাংলাদেশ সীমান্তে পণ্য পরিবহন সহজ করা, সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা, সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়।  

এদিকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় একটি বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রতিষ্ঠা ও এ অঞ্চলে বাংলাভাষাভাষীর সংখ্যাধিক্যের বিবেচনায় একটি শহীদ মিনার স্থাপনের ব্যাপারেও প্রস্তাব দেন হাছান মাহমুদ। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এসব প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দেন।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরাবাসীর অবদানের কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিপুরার মানুষ শুধু রাজ্য নয়, বাংলাদেশীদের জন্য খুলে দিয়েছিল তাদের মনের দুয়ার। সে সময় ত্রিপুরার লোকসংখ্যা ছিল ১৫ লাখ, বাংলাদেশি শরণার্থীর সংখ্যাও ছিল ১৫ লাখ।  বাংলাদেশ তাই সমগ্র ভারতের সঙ্গে সঙ্গে ত্রিপুরার অবদানের কথাও চিরদিন স্মরণ করবে।

বৈঠকের শুরুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অপত্য স্নেহের কথা স্মরণ করে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি আমাকে ত্রিপুরা সীমান্তে মাদক চোরাচালান বন্ধের জন্য বলেছিলেন, আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি। '

আগরতলায় বঙ্গবন্ধুর নামে একটি জাদুঘর স্থাপনের ব্যাপারে ত্রিপুরা সরকার আগে থেকেই ভেবে রেখেছে উল্লেখ করে বিপ্লব কুমার দেব বলেন, বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রীকে এ কথা জানানো হয়েছে। পাশাপাশি আগরতলায় একটি ভাষা শহীদ স্মৃতিসৌধ স্থাপনের ব্যাপারে রাজ্য সরকার চিন্তাভাবনা করবে।  

‘বাংলাদেশ-ত্রিপুরা সীমান্তের হাটগুলো কেবলমাত্র পণ্য বিক্রির জায়গা নয়, এগুলো দুই দেশের  মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করে। ’

এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ত্রিপুরার ভাষা, সংস্কৃতি সবকিছু একই রয়েছে। ফলে আরও বেশি সংখ্যক সীমান্ত হাট স্থাপনের ব্যাপারে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। এছাড়া কিছু কিছু জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের বিষয়েও আলোচনা হয়।  

বৈঠকের শুরুতে শুভেচ্ছাস্মারক বিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিপ্লব কুমার দেবকে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’র ইংরেজি ভার্সন উপহার দেন।

এসময় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম, আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার কিরিটি চাকমা, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. ভেঙ্কটেশওয়ারলু, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব কুমার অলক প্রমুখ উপস্থিতি ছিলেন।  

এর আগে সকালে আগরতলা-আখাউড়া রেল যোগাযোগ কাজের অগ্রগতি দেখতে নিশ্চিন্তপুর সীমান্ত পরিদর্শন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এ সময় আগামী বছরের শেষ নাগাদ এ কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।  

বাংলাদেশ সময়: ২২১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯ 
এইচজে  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।