বুধবার (২৩ অক্টোবর) আগরতলা টাউন হলে এ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়।
১২ দফা দাবির উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দাবি-কৃষকের ঋণ মওকুব করা, কৃষকের মজুরি বাড়ানো, তাদের উৎপাদিত ফসলের খরচের মূল্য দেড় গুণ কমাতে হবে ইত্যাদি।
কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ত্রিপুরা রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিআইএম দলের পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার বলেন, ভারতের বর্তমান সরকার দরিদ্র মানুষের কথা চিন্তা করে না। বরং যারা ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি রুপি লুটেছেন তাদের শত শত কোটি রুপির ছাড়া দিচ্ছেন। এটা কেন করছে? কেন গরিব মানুষ স্বার্থ দেখছে না। এর কারণ দেশের ধনীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ভোটের ময়দানে ছড়িয়ে জয়ী হয়েছে। তাই এখন তাদের স্বার্থ রক্ষায় মগ্ন। আবার মুখে বলছেন স্বচ্ছ ভারতের কথা। কিন্তু ক্ষুধার পেটে স্বচ্ছ ভারত কী করে সম্ভব?
অপরদিকে কে কী খাবে তা স্থির করে দেওয়ার চেষ্টা বিজেপি, আর এস এস ও বিশ্বহিন্দু পরিষদের। এমন কী তাদের কথা না শুনলে আক্রমণ নেমে আসছে সাধারণ মানুষের উপর। দেশে অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ। মানুষের হাতে কোনো কাজ ও অর্থ নেই। পুঁজিপতিরা ধীরে ধীরে কারখানা বন্ধ করছে। ভারতের বাজারে গাড়ি বিক্রি হচ্ছে না তাই এখন বিদেশের বিক্রির কথা ভাবছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে জায়গায় দাঁড়িয়ে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি করতে পারছেন না এই অবস্থা ত্রিপুরা রাজ্যের উন্নতি করা যে সম্ভব নয় তা সহজেই বুঝা যায়। ২০১৮ সালে ত্রিপুরা রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছি তার কিছুই পূরণ করেনি। অথচ নির্বাচনের আগে রাজ্যের যুবকদের বিভ্রান্ত করে শহর, নগর জ্যাম করে ভোট আদায় করে। তখন একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে বলেছিল যে, বিজেপি সরকারের ক্ষমতায় এলে মিস কল দিলে বেকারদের সরকারি চাকরি হবে। কিন্তু সরকারে আসার পর অন্য কথা বলছে। বলছে, পান-বিড়ির দোকান দিন, গরু পালন করে দুধের বিক্রি করুন। চাকরির জন্য সরকারের পেছনে না ছুটে নিজেদের কিছু করার চেষ্টা করুন।
তারা নির্বাচনের আগে ভীষণ ডকুমেন্টে মোট ২৯৯টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কিন্তু প্রায় দু’বছর হতে চললেও এর একটিও পূরণ করতে পারেনি অভিযোগ করে মানিক সরকার বলেন, রাজ্যে কাজ না থাকা ও ক্ষুধার তাড়নায় নিজের সন্তান পর্যন্ত বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। আবার ১০ হাজার রুপি রোজগারের জন্য রাজ্য ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি জমাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সেখানে মৃত্যুবরণ করছে অনেককে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো মরদেহগুলো বাড়িতে ফিরিয়ে আনার মতো অর্থ নেই সাধারণ মানুষের কাছে। উপরন্তু সরকার একের পর এক ট্যাক্স বাড়িয়ে চলছে। খাবার পানির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের উপহার ট্যাক্স বসানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ঘরে বসে না থেকে এই সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তাই সব ধরনের বাধা-বিপত্তি প্রতিরোধ করে রাস্তায় নেমে আন্দোলন কর্মসূচিতে শামিল হতে হবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই সরকারকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে।
কনভেনশনে আরও বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী ডেপুটি স্পিকার ও সিপিআইএম দলের পশ্চিম জেলা কমিটির সম্পাদক পবিত্র কর নারায়ণ করসহ দলীয় নেতাকর্মীরা।
কনভেনশনে সারা রাজ্য থেকে সারা ভারত কৃষক সভা ও ত্রিপুরা রাজ্য ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৯
এসসিএন/এএটি